ভারত পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধের সিদ্ধান্ত জানানোর পর দেশের পেঁয়াজের বাজারে এখন অস্থিরতা চরমে। মাত্র এক দিনের ব্যবধানে কেজিতে ৬০ থেকে ৮০ টাকা বাড়লেও খুচরায় বিক্রি হচ্ছে দ্বিগুণ দামে। এ অবস্থায় কিছুটা স্বস্তি এনে দিতে পারে গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ।
কৃষি বিভাগ বলছে- গ্রীষ্মকালীন ও মুড়িকাটা পেঁয়াজ চাষ সম্প্রসারণ করা গেলে কমে আসবে আমদানি নির্ভরতা।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের মাঠে মাঠে এখন গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ তুলতে ব্যস্ত কৃষকরা। এ বছর পেঁয়াজের বাম্পার ফলন হওয়ায় খুশি তারা।
দেশের পেঁয়াজের বাজারের এই অস্থিরতায় কিছুটা স্বস্তি এনে দিবে বলে আশা করছেন চাষীরা।
কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, এ বছর চাঁপাইনবাবগঞ্জের ৫ উপজেলায় ৪ হাজার ৫০০ বিঘা জমিতে গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ চাষ হয়েছে। ভারতের এন-৫৩ জাতের পেঁয়াজ চাষ করেছেন চাষীরা। এ পেঁয়াজ ভারতের আমদানি করা পেঁয়াজের মতোই স্বাদ ও আকার। সরকারি প্রণোদনার আওতায় জেলায় গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ চাষ সম্প্রসারণ করা হচ্ছে।
চাপাইনবাব পেঁয়াজ
চাঁপাইনবাবগঞ্জের মাঠে মাঠে এখন গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ তুলতে ব্যস্ত কৃষকরা। ছবি: ইনডিপেনডেন্ট
সদর উপজেলার রামচন্দ্রপুরের পেয়াজ চাষী সায়েম আলী বলেন, ‘এ বছর গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজের ফলন হয়েছে ভালো। বিঘাপ্রতি ১০০ থেকে ১২০ মণ পর্যন্ত পাওয়া যাচ্ছে পেঁয়াজ।
এক বিঘা জমিতে গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ চাষে খরচ হয় সর্বোচ্চ ৪৫ হাজার টাকা। আর উৎপাদিত পেঁয়াজ সর্বনিম্ন সাড়ে ৩ লাখ টাকায় বিক্রি হয়। লাভ বেশি হওয়ায় এ এলাকায় গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ চাষের আগ্রহ বাড়ছে।’
মামুনুর রশিদ নামে আরেক চাষী বলেন, ‘আমাদের ধারাণাও ছিল না যে বর্ষার সময় পেঁয়াজের পুল লাগানো যায়। কিন্তু কৃষি বিভাগের পরামর্শে আমরা বর্ষার মধ্যে পেঁয়াজের পুল রোপন করি। ৯০ দিনের মধ্যেই পেঁয়াজ বিক্রির উপযোগী হয়ে গেছে। এখন পেঁয়াজ বাজারজাত করছি। ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহ থেকেই বাজারজাত করা যাচ্ছে এই পেঁয়াজ। যখন বাজারে আসছে তখন বাজারে দেশি পেঁয়াজ নেই বললেই চলে।’
চাঁপাইনবাবগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. পলাশ সরকার জানান, সাধারণত দেশি জাতের পেঁয়াজ বিঘাপ্রতি ফলন হয় ৩০ থেকে ৪০ মণ। সেখানে গ্রীষ্মকালীন এন-৫৩ জাতের পেঁয়াজ হয় বিঘায় ১০০ থেকে ১২০ মণ।
অসময়ে পেঁয়াজ বাজারে বিক্রি করার কারণে চাষীরাও অধিক দাম পান। চাঁপাইনবাবগঞ্জে অনেক আম বাগাান গড়ে উঠেছে, যেখানে আলো-বাতাস পর্যাপ্ত থাকে। এ সব বাগানেও পেঁয়াজ চাষ করা সম্ভব।
আগামী বছর জেলায় গ্রীষ্মকালীন মুড়িকাটা পেঁয়াজ চাষ আরও বাড়বে বলে আশা করেন ওই কৃষি কর্মকর্তা।
সারাদেশে শনি ও রোববার দিনভর ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের অভিযান ও জরিমানার পরও বাজারে তার প্রভাব পড়ছে না।
ভোক্তা ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা বলছেন, শুধু অভিযান নয় বরং আমদানিকারক ও আড়তদার পর্যায়ে দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারলে সুফল মিলবে বাজারে। এছাড়া পেঁয়াজ আগে কেনা থাকায় কিছু কিছু ব্যবসায়ী কেজিতে দাম একটু কম রাখছেন। তবে নতুন আসা পেঁয়াজের দাম বেশিই রাখা হচ্ছে।