1. admin@deshmediabd.info : admin :
  2. support@bdsoftinc.info : adminr :
বৃহস্পতিবার, ১০ এপ্রিল ২০২৫, ০২:৪৩ পূর্বাহ্ন

বিএনপির বর্ধিত সভা আজ লক্ষ্য সংসদ নির্বাচন, থাকছে আন্দোলন ভাবনাও

রিপোর্টার
  • আপডেট : বৃহস্পতিবার, ২৭ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫
  • ১৯ বার দেখা হয়েছে

 

 

নিজস্ব প্রতিবেদক

স্থানীয় সরকার নয়, জাতীয় সংসদ নির্বাচনই জাতির প্রত্যাশা—এ বিষয় সামনে রেখে আগামীর কর্মপরিকল্পনা চূড়ান্ত করতে চায় বিএনপি। দলের নীতিগত এই সিদ্ধান্তের বিষয়ে তৃণমূলের মতামত ও ভাবনা জানতে আজ বৃহস্পতিবার বিএনপির বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। তৃণমূলের নেতাদের দেওয়া মতামতকে গুরুত্ব দিয়ে তৈরি করা হবে দলের ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনা।

বিএনপির উচ্চ পর্যায়ের সূত্র জানিয়েছে, চলতি বছরের ডিসেম্বরে সংসদ নির্বাচন হবে, এমনটি ধরেই প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।

যদি তা-ই হয় তাহলে এক ধরনের পরিকল্পনা হবে। আর যদি নির্বাচন বিলম্বিত হয়, কিংবা সংস্কারের ‘নামে’ নির্বাচনের তারিখ পেছনোর চেষ্টা হয়, তাহলে পরিকল্পনা হবে ভিন্ন। সে ক্ষেত্রে আন্দোলনের কর্মসূচি তৈরি করতে হবে। মূলত আজকের সভায় এ দুই বিষয়ের ওপর মতামত নেওয়া হবে।
বিএনপির একজন গুরুত্বপূর্ণ নেতার মতে, তাঁরা নির্বাচনমুখী কর্মসূচি নিয়ে এগোচ্ছেন, কিন্তু প্রয়োজনে নেতাকর্মীরা যাতে আন্দোলনমুখী হতে পারেন, সেই প্রস্তুতিও রাখা হবে।
বিএনপির নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতারা বলছেন, সভায় বিগত আন্দোলনের মূল্যায়নের পাশাপাশি আগামী সংসদ নির্বাচন পর্যন্ত দলের কর্মপরিকল্পনা কী হবে সে মতামত মুখ্য হতে পারে। তৃণমূলের নেতাদের বক্তব্যের মধ্য দিয়ে সংশ্লিষ্ট সংসদীয় এলাকার সম্ভাব্য প্রার্থীদের অবস্থান, জনপ্রিয়তা এবং নেতাকর্মীদের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ কেমন, সেই চিত্র উঠে আসবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল নেতারা বলছেন, আগামী নির্বাচনে জয়ী হওয়ার যথেষ্ট সম্ভাবনা আছে এমন প্রার্থীদের মনোনয়ন দেওয়া হবে।

তৃণমূলের বক্তব্যে অনেক প্রার্থীর বিষয়ে একটি ‘মূল্যায়ন চিত্র’ পাওয়া যাবে। সংসদ নির্বাচনের প্রার্থী চূড়ান্ত করার ক্ষেত্রে তৃণমূল নেতাদের মতামতকে গুরুত্ব দেওয়া হবে। আর সংসদ নির্বাচন বিলম্বিত করার চেষ্টা করা হলে কী ধরনের কর্মসূচি দেওয়া উচিত সে বিষয়েও প্রস্তাব চাওয়া হবে।
৫ আগস্টের পটপরিবর্তনের পর ভিন্ন প্রেক্ষাপটে আজ সকাল ১০টায় জাতীয় সংসদ ভবনের এলডি হলসংলগ্ন মাঠে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে। এতে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি সভাপতিত্ব করবেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

উদ্বোধনী ও সমাপনী পর্বে নেতাদের উদ্দেশে বক্তব্য দেবেন তিনি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দলের একজন জ্যেষ্ঠ নেতা কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘সারা দেশে দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে এক ধরনের বিশৃঙ্খল অবস্থা বিরাজ করছে। এ অবস্থা নিরসন এবং সংসদ নির্বাচনমুখী বিএনপির পথচলা কেমন হতে পারে, তার একটি দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্য দেবেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।’

বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, নির্বাচনের সময় নিয়ে সরকার বা অন্য কোনো পক্ষ বাড়াবাড়িতে গেলে দলটি মাঠের কর্মসূচি জোরদার করবে। সে ক্ষেত্রে ঈদের পর কেন্দ্র থেকে জেলা পর্যায়ে আরো কর্মসূচি আসতে পারে। একই সঙ্গে সংস্কারের নামে ভোটের তারিখ পেছানোর চেষ্টা মেনে নেবে না তারা। কেন্দ্রের এমন সিদ্ধান্তে তৃণমূলের ভাবনাও চাওয়া হবে আজকের সভায়।

বর্ধিত সভার বিষয়ে গত সোমবার বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠক হয়েছে। সভায় সিদ্ধান্ত হয়, সভার মূলবিন্দুতে থাকবেন তৃণমূল নেতারা। তাঁদের কথা শুনেই নির্ধারিত হবে বিএনপির আগামীর পথচলা। এতে বক্তব্য রাখবেন জেলা/মহানগর, উপজেলা/থানা ও পৌরসভা বিএনপির সভাপতি/আহ্বায়ক ও সাধারণ সম্পাদক/সদস্যসচিবরা। সভায় বিগত আন্দোলনের একটি চিত্র তুলে ধরা হবে। বিএনপি মহাসচিব একটি সাংগঠনিক প্রতিবেদন তুলে ধরবেন। এতে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ত্যাগ ও সফল নেতৃত্বের জন্য ধন্যবাদ দেওয়া হবে। যেহেতু দেশের মানুষ ১৭ বছর ধরে আন্দোলন-সংগ্রাম করছে ভোটাধিকারের জন‍্য, তাই বিএনপি বার্তা দেবে যে স্থানীয় নয় জাতীয় নির্বাচনই জাতির প্রত‍্যাশা।

নির্বাচন সামনে রেখে বিএনপির এই বর্ধিত সভাকে ‘খুবই সময়োপযোগী’ বলে মনে করেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ। কালের কণ্ঠকে তিনি বলেন, ‘তৃণমূল নেতাকর্মীরা দলের প্রাণ। স্থানীয় পর্যায়ের রাজনীতিসহ সামগ্রিক বিষয় তাঁরা গভীরভাবে প্রত্যক্ষ করেন। তাঁদের কাছ থেকে প্রান্তিক অঞ্চলের মানুষের চাওয়াটা জানা যায়। ফলে বর্ধিত সভা থেকে সারা দেশে দলের সাংগঠনিক অবস্থা ও জনগণের প্রত্যাশার বস্তুনিষ্ঠ চিত্র উঠে আসবে, যা দলের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা তৈরিতে সহায়ক ভূমিকা রাখবে।’

বিএনপির কেন্দ্রীয় দপ্তর সূত্র জানায়, ২০১৮ সালের সংসদ নির্বাচনে যাঁরা দলের প্রার্থী ছিলেন এবং দলের প্রাথমিক মনোনয়ন পেয়েও চূড়ান্ত মনোনয়ন পাননি, অর্থাৎ প্রার্থী নন কিন্তু মনোনয়নের জন্য ‘সেকেন্ডারি’ কাগজ পেয়েছিলেন, তাঁরাও বর্ধিত সভায় থাকবেন। এ ছাড়া বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটি, জাতীয় নির্বাহী কমিটি, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য এবং জেলা কমিটির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক অথবা আহ্বায়ক, সদস্যসচিব; থানা-উপজেলা-পৌর কমিটির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক অথবা আহ্বায়ক ও সদস্যসচিবরা অংশ নেবেন বর্ধিত সভায়। বিএনপি ছাড়া ১১টি অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকরাও থাকবেন। সব মিলিয়ে বর্ধিত সভায় সারা দেশ থেকে প্রায় সাড়ে তিন হাজার নেতা অংশ নেবেন।

দলের নেতারা জানিয়েছেন, সর্বশেষ ১৯৯৭ সালে বর্ধিত সভা হয়েছে। এবারের সভায় দলের জাতীয় কাউন্সিলে যাঁরা উপস্থিত থাকেন, তাঁদের প্রায় সবাইকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। দীর্ঘদিন পর ডাকা এই সভা নিয়ে দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে কৌতূহল তৈরি হয়েছে।

 

সভা ঘিরে যা হবে

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের শুরুতে ‘প্রথম বাংলাদেশ আমাদের শেষ বাংলাদেশ’ শীর্ষক প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হবে। প্রমাণ্যচিত্রটি তৈরি করেছে ‘বর্ধিত সভা বাস্তবায়ন মিডিয়া উপকমিটি’। সভা উপলক্ষে আমরা বিএনপি পরিবার ‘আস্থা’ নামের একটি ম্যাগাজিন প্রকাশ করেছে। সকালে তারেক রহমানের বক্তব্যের পর দুপুরে শুরু হবে রুদ্ধদ্বার অধিবেশন, যেখানে তৃণমূলের নেতারা বক্তব্য দেবেন। পরে সমাপনীতে তারেক রহমান নীতিনির্ধারণী বক্তব্য দেবেন।

বর্ধিত সভার প্রস্তুতি পরিদর্শন করে দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী গতকাল বিকেলে সাংবাদিকদের বলেন, ‘বর্ধিত সভায় আমন্ত্রিত নেতাদের বক্তব্যের ওপর ভিত্তি করেই আগামী দিনের কর্মপরিকল্পনা ঠিক করা হবে।’

s
এই বিভাগের আরো সংবাদ
© All rights reserved © 2021 deshmediabd.com