1. admin@deshmediabd.info : admin :
  2. support@bdsoftinc.info : adminr :
  3. jeradmin@deshmediabd.com : :
মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৬:৪৯ অপরাহ্ন

জালনোট কারবারিদের বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সোচ্চার

রিপোর্টার
  • আপডেট : বুধবার, ২৩ জুন, ২০২১
  • ১৪১ বার দেখা হয়েছে

শাহীন করিম

আরো এক মাস পর কোরবানির ঈদ (ঈদুল আজহা)। ইতোমধ্যেই দেশি-বিদেশি জাল টাকার কারবারি চক্রগুলো সক্রিয় হয়ে উঠছে। প্রতিবারের মতো এবারের কোরবানির ঈদের বাজারেও কোটি কোটি টাকার জালনোট ছড়িয়ে দেয়ার পাঁয়তারা চালাচ্ছে। খোদ রাজধানীতে সক্রিয় হয়ে উঠেছে অন্তত ৩০টি চক্র। যারা ৫০০ টাকা থেকে শুরু করে এক হাজার টাকার নোট জাল করে বাজারে ছড়িয়ে দিতে প্রস্তুতি নিচ্ছে।

তবে এসব প্রতারক চক্রের অপতৎপরতা মোকাবিলা করতে থানা পুলিশের পাশাপাশি গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) ও র‌্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও পাল্টা প্রস্তুতি নিচ্ছে। জালনোট কারবারিদের ধরতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ইতোমধ্যেই অভিযান শুরু করেছে বলে গোয়েন্দা সূত্র জানায়।

সূত্র জানায়, সারাদেশে প্রায় দেড় হাজার জাল টাকার কারবারি চক্রের বিরুদ্ধে মামলা বিচারাধানীন। গত দশ বছরে দেশের বিভিন্নস্থানে অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করা হয়েছে পাঁচ হাজার দেশি-বিদেশি জাল টাকার কারবারি চক্রের সদস্যদের। এদের মধ্যে অনেকে একাধিকবার গ্রেফতার হওয়ার পর জামিনে বের হয়ে ফের একই অপকর্ম চালানোর নজির রয়েছে।

গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর মেরুল বাড্ডার জয়নব উদ্দিন লেনের একটি বাসা থেকে জালনোট কারবারি এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১০। নাইমুল হাসান তৌফিক (২২) নামে এই যুবকের কাছ থেকে ৫০ লাখ ২৮ হাজার টাকা সমমূল্যের জালনোট উদ্ধার করা হয়। একই সঙ্গে উদ্ধার করা হয় জাল টাকা তৈরির সরঞ্জাম।

নাইমুল র‌্যাবকে জানিয়েছে, বিগত ২/৩ বছর যাবৎ সে এই অপকর্মে জড়িত এবং সামনের কোরবানির পশুরহাটে জব্দ করা জাল টাকাগুলো ছড়িয়ে দেয়ার পরিকল্পনা ছিল। এর আগে গেল ১৪ জুন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় মোগড়া ইউনিয়ন থেকে জাল টাকাসহ ২ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাদের কাছ থেকে প্রায় ৫০ হাজার টাকার নোট উদ্ধার করা হয়।

তার আগে গত ৩১ মার্চ রাজধানীর হাতিরঝিল এলাকা থেকে জাল টাকাসহ দুই জনকে গ্রেফতার করে ডিবি। এ সময় তাদের কাছ থেকে ২২ লাখ ২৫ হাজার জাল টাকা, টাকা তৈরির স্ক্রিন ফ্রেম ১০টি, দুটি কাঠের বোর্ড, রংয়ের বোতল ছয়টি, রংয়ের কৌটা পাঁচটি, টাকা তৈরির কাগজ দুই বান্ডিল, ফেবিকল গাম ও লেমিনেটিং মেশিনসহ টাকা তৈরির সামগ্রি উদ্ধার করা হয়।

র‌্যাবের দায়িত্বশীল একজন কর্মকর্তা বলেন, আসছে কোরবানির ঈদের উৎসবকে সামনে রেখে রাজধানীসহ সারাদেশে কোরবানির পশুহাটের আয়োজন চলছে। প্রস্তুত হচ্ছেন পশুর ব্যাপারী ও ক্রেতারা। শত শত কোটি টাকার কেনা-বেচা হবে। এই সুযোগে সক্রিয় হয়ে উঠেছে একশ্রেণির প্রতারক চক্র। জালনোট ছড়িয়ে সক্রিয় হয়ে উঠছে বেশকিছু চক্রের সদস্যরা।

লোভ দেখিয়ে ফাঁদে ফেলে লোপাট চালাতে পশুরহাটের ব্যাপারীরা এই চক্রের প্রধান টার্গেট। দেশব্যাপী এই চক্রের শক্তিশালী নেটওয়ার্ক রয়েছে। জালনোট বাজারে ছড়িয়ে দিতে বেছে নিচ্ছেন নানা কৌশল। তবে এসব চক্রের অপতৎপরতা নিস্ক্রিয় করতে ইতোমধ্যেই গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিভিন্ন ইউনিট।

পুলিশ ও র‌্যাব সূত্র জানায়, বিগত কয়েক বছরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী উদ্ধার করেছে শতাধিক কোটি জাল টাকা। যার মধ্যে ভারতীয় রুপি, ইউএস ডলারসহ বিভিন্ন দেশের মুদ্রাও। অতীতে বিভিন্ন অভিযানে জালনোট তৈরির বিভিন্ন সরঞ্জামাদি ল্যাপটপ, প্রিন্টার, ডাইস, কাটার, কোটি কোটি টাকার সমপরিমাণ জাল নোট প্রস্তুতের প্রয়োজনীয় কাঁচামাল কাগজ, কালি, জলছাপ দেয়ার সামগ্রী উদ্ধার করা হয়েছে। র‌্যাব, পুলিশ, সিআইডি, ডিবি, গোয়েন্দা সংস্থাসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন ইউনিট অভিযানগুলো চালিয়েছে। জামিনে বেরিয়ে ফের একই প্রতারণায় জড়াচ্ছে জালনোট কারবারিরা। চক্রগুলো এবারের কোরবানির পশুরহাটে যাতে জাল টাকা ছড়াতে না পারে, সেজন্য অভিযান জোরদার করা হচ্ছে।

ঢাকার গোয়েন্দা পুলিশের একজন কর্মকর্তা জানান, প্রতিবছরই এই সময়ে সারাদেশে জালনোট কারবারি চক্রের সদস্যরা সক্রিয় হয়ে ওঠে। আর তাদের টার্গেট থাকে পশুরহাটে আসা ব্যাপারীরা। আমরা এখন নজরদারি করছি, চক্রের সদস্যদের বিষয়ে আমরা তথ্য সংগ্রহ করছি। বেশকিছু চক্রের মুভমেন্ট পাওয়া যাচ্ছে। কিছুকিছু ঘটনা ঢাকার বাইরে ঘটছে। রাজধানীতেও অনেক চক্র কোটি কোটি টাকা ছড়িয়ে দিতে অপচেষ্টা চালাতে পারে। তবে আমরা কঠোর অবস্থানে রয়েছি। জালনোট তৈরি কারবারিদের ধরতে অভিযান চলমান রয়েছে। চক্রগুলোকে ধরতে পাল্টা কৌশল নিয়ে মাঠে নামছে পুলিশ ও র‌্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর শতাধিক ইউনিট।

পুরোনো অভিজ্ঞতা জানিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একাধিক কর্মকর্তা বলেন, জালনোট প্রস্তুতকারী চক্রের মূলহোতাসহ অসংখ্য সদস্যকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। কিন্তু ৫-৬ মাস বা বছরখানেক পর তারা কারাগার থেকে জামিনে বের হয়ে পুরনো পেশায় ফিরে যাচ্ছেন। কারাগার থেকে বের হওয়ার পরপর পুরনো সব সঙ্গী ও সহযোগীদের নিয়ে স্থান পাল্টে আবার শুরু করছে জালনোট তৈরির কারবার। বিভিন্ন উৎসবকে তারা টার্গেট করে বাজারে জালনোট ছাড়তে সক্রিয় হয়ে ওঠে। তবে জালনোট চক্রের যেসব সদস্য জামিনে বের হয়েছে এবং তাদের বিরুদ্ধে জালনোট প্রস্তুতের অভিযোগ বা তথ্য রয়েছে তাদের নজরদারিতে রাখা হয়েছে।

ওই কর্মকর্তারা জানান, বৈশ্বিক মহামারী করোনাকালে জাল টাকার এ ছড়াছড়ি দেশের আর্থসামাজিক অবস্থাকে দুর্বল করে দিতে পারে। জাল টাকার বহু চক্র দেশের অভ্যন্তরে কাজ করছে। তারা অনেকটা নিখুঁতভাবে তৈরি করছে টাকা। সাধারণ মানুষ এসব জাল টাকা সহজে ধরতে পারবেন না। ফলে জাল টাকা শনাক্তকরণ মেশিন সর্বত্র থাকাটাও জরুরি।

s
এই বিভাগের আরো সংবাদ
© All rights reserved © 2021 deshmediabd.com