1. admin@deshmediabd.info : admin :
  2. support@bdsoftinc.info : adminr :
  3. jeradmin@deshmediabd.com : :
মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৬:১২ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ সংবাদঃ
ব্রাজিলে বাস দুর্ঘটনায় ৩৮ জন নিহত ডলারের বাজার আবার অস্থির Govt grants 10-year tax holiday for renewable energy firms Mobile surveillance used in pinpointing victims’ location: Commission গ্যাস সংকটে উৎপাদন নেমে অর্ধেকে, কয়েক শ কারখানা বন্ধ ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ইসির পরিকল্পনায় ডিসেম্বর ২০২৫ ভোটার তালিকায় ত্রুটি নেই দাবি ইসির সরকারের এক পক্ষ ২০২৬-এর এপ্রিলে, বিএনপিসহ সমমনারা চায় ২০২৫-এর জুনের মধ্যে ভোট জুলাই গণ-অভ্যুত্থান ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শহীদ ও আহত ব্যক্তিদের প্রথম ধাপের খসড়া তালিকা প্রকাশ ২০২৫-এর মধ্যেই নির্বাচন চায় বিএনপি ও বিভিন্ন দল লাইসেন্স ও ট্যাক্সের আওতায় আসছে ব্যাটারিচালিত রিকশা ফের আন্দোলনে নামছে বিএনপি দ্রুত সুস্পষ্ট রোডম্যাপ দাবি, চলছে নির্বাচনি প্রস্তুতি

তারল্য সংকটে সোনালী ব্যাংকও প্রতিদিন করছে ধার

রিপোর্টার
  • আপডেট : মঙ্গলবার, ১৪ মে, ২০১৯
  • ৮৫ বার দেখা হয়েছে

দেশের সরকারি-বেসরকারি ব্যাংকগুলোর তারল্যের প্রধান জোগানদাতা ছিল সোনালী ব্যাংক। যদিও এক মাস ধরে আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজার (কলমানি) ও বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ধার করে দৈনন্দিন কার্যক্রম পরিচালনা করছে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকটি। চলতি মাসের শুরু থেকে প্রায় প্রতিদিনই কলমানি বাজার থেকে টাকা ধার করতে হচ্ছে সোনালী ব্যাংককে। যদিও রাষ্ট্রায়ত্ত সর্ববৃহৎ ব্যাংকটির ঋণ আমানত অনুপাত (এডিআর) এখনো ৪৪ শতাংশেই সীমাবদ্ধ। অপরিকল্পিত বিনিয়োগ ও আমানতের প্রবৃদ্ধিতে বড় ধরনের ধাক্কা লাগায় এ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

চলতি বছরের শুরু থেকেই তারল্য কমতে থাকে সোনালী ব্যাংকের। ২০১৮ সালেও ব্যাংকটির আমানতের প্রবৃদ্ধি ছিল মন্থর। গত ডিসেম্বর শেষে সোনালী ব্যাংকের মোট আমানত ছিল ১ লাখ ৯ হাজার ৩৭৬ কোটি টাকা। চলতি বছরের প্রায় সাড়ে চার মাসে ব্যাংকটির আমানত না বেড়ে উল্টো কমেছে। গতকাল সোনালী ব্যাংকের আমানত ছিল ১ লাখ ৯ হাজার ১৬৮ কোটি টাকা। আমানত কমলেও এ সময়ে বিনিয়োগ বেড়েছে ব্যাংকটির। ফলে গত এপ্রিল থেকে নগদ অর্থের সংকট শুরু হয় সোনালী ব্যাংকের। চলতি মাসে এসে এ সংকট তীব্র হয়েছে।

তারল্য সংকটের কারণে কলমানি বাজারে চাহিদা অনুযায়ী বিনিয়োগ করার মতো অর্থ নেই ব্যাংকগুলোর কাছে। ফলে সংকট মেটাতে ব্যাংকগুলোকে রেপোতে ধার দেয়া বাড়িয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী ব্যাংক চলতি মাসের শুরু থেকে প্রায় প্রতিদিনই রেপো ও কলমানি বাজার থেকে গড়ে প্রায় ৫০০ কোটি টাকা ধার করেছে।

প্রতিদিন দিনের মধ্যভাগে দেশের কলমানি বাজারে লেনদেনের পরিসংখ্যান তৈরি করে বাংলাদেশ ব্যাংক। ওই প্রতিবেদনে দেখা যায়, চলতি মে মাসের প্রায় প্রতি কর্মদিবসেই কলমানি বাজার থেকে অর্থ ধার করেছে সোনালী ব্যাংক। ১২ মে ২১২ কোটি টাকা, ৯ মে ২০৮ কোটি, ৮ মে ২১০ কোটি, ৭ মে ১৬০ কোটি, ৬ মে ৪১ কোটি ও ২ মে ১৬৫ কোটি টাকা কলমানি বাজার থেকে ধার নিয়েছে ব্যাংকটি।

তবে সোনালী ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলছেন, বেসরকারি ব্যাংক উদ্যোক্তাদের দাবির মুখে অর্থ মন্ত্রণালয় আমানতের সুদহার ৬ শতাংশ বেঁধে দিয়েছে। উল্টো বেসরকারি ব্যাংকগুলোই সে নীতি ভঙ্গ করে দ্বিগুণ সুদে আমানত সংগ্রহ করছে। এ কারণে সোনালী ব্যাংকের আমানত বেরিয়ে যাচ্ছে। আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে দেয়া কলমানির অর্থ ফেরত পাওয়া যাচ্ছে না। অনেক আর্থিক প্রতিষ্ঠান সুদও পরিশোধ করতে পারছে না। একই সঙ্গে ফেরত পাওয়া যাচ্ছে না ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে মেয়াদি আমানত হিসেবে দেয়া অর্থও। বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনসহ (বিপিসি) সরকারি প্রতিষ্ঠানের এলসি দায় পরিশোধ করতে গিয়েও আমানত বেরিয়ে যাচ্ছে বলে মনে করেন সোনালী ব্যাংক কর্মকর্তারা।

তারল্য সংকটে পড়ার বিষয়টি স্বীকার করেন সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. ওবায়েদ উল্লাহ্ আল্ মাসুদ। বণিক বার্তাকে তিনি বলেন, ব্যাংক মাতাকে এখন বাজার থেকে অর্থ ধার করতে হচ্ছে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত পরিপালন করতে গিয়ে সোনালী ব্যাংক এ পরিস্থিতিতে পড়েছে। রাষ্ট্রায়ত্ত অন্য ব্যাংক থেকেও আমানত বেরিয়ে যাচ্ছে। পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দিয়ে আমরা আমানতের সর্বোচ্চ ৬ শতাংশ সুদের সিদ্ধান্ত কার্যকর করেছি। কিন্তু বেসরকারি ব্যাংকগুলো তা করেনি। সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোও টেন্ডারের মাধ্যমে বেশি সুদ দেয়া ব্যাংকে আমানত স্থানান্তর করছে। এ কারণে শুধু গত দুই মাসেই সোনালী ব্যাংক প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকা আমানত হারিয়েছে।

প্রায় দেড় বছর ধরে তারল্য সংকট চলছে দেশের ব্যাংকিং খাতে।

বেসরকারি ব্যাংকগুলোর তীব্র সংকট মেটাতে ভরসা ছিল রাষ্ট্রায়ত্ত চারটি ব্যাংক। এ ব্যাংকগুলো থেকে ৮-১২ শতাংশ পর্যন্ত সুদ দিয়ে মেয়াদি আমানত সংগ্রহ করেছে বেসরকারি ব্যাংকগুলো। একই সঙ্গে কলমানি বাজারেও রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোই ছিল বেসরকারি ব্যাংকগুলোর আশ্রয়স্থল। কিন্তু চলতি বছরের শুরু থেকেই রূপালী, জনতা ও অগ্রণী ব্যাংকের আমানত টান পড়া শুরু করে। এবার এ তালিকায় যুক্ত হয়েছে সোনালী ব্যাংকের নামও।

সোনালী ব্যাংকের তথ্যমতে, বিদায়ী বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত ব্যাংকটির হাতে আমানত ছিল ১ লাখ ৯ হাজার ৩৭৬ কোটি টাকা। এ আমানত থেকে ৪৬ হাজার ৬৩১ কোটি টাকা ঋণ বিতরণ করেছে ব্যাংকটি। বাকি ৬২ হাজার ৭৪৫ কোটি টাকা থেকে ৪৪ হাজার ৪৪৬ কোটি টাকা বিনিয়োগ করা হয়েছে সরকারি ও অন্যান্য খাতে।

এর মধ্যে ৩৭ হাজার ৭২৪ কোটি টাকা সরকারি সিকিউরিটিজে বিনিয়োগ করা হয়েছে। বিনিয়োগের তালিকায় রয়েছে—ট্রেজারি বিল, সরকারি বন্ড, প্রাইজ বন্ড, আইসিবি শেয়ারসহ কয়েকটি সরকারি খাত। অন্যান্য খাতে বিনিয়োগ করা হয়েছে ৬ হাজার ৭২২ কোটি টাকা। এর মধ্যে রয়েছে—অর্ডিনারি শেয়ার, সোনালী ব্যাংক ইউকে, বেসরকারি ব্যাংকের বন্ড ক্রয়সহ কয়েকটি খাতে। দেশের বেসরকারি খাতের ২৮টি ব্যাংকের ৪ হাজার ৩৯৩ কোটি টাকার বন্ড কিনে মূলধন জোগান দিয়েছে সোনালী ব্যাংক।

কেন সোনালী ব্যাংক নগদ অর্থের সংকটে পড়বে?—এমন জিজ্ঞাসার জবাবে সোনালী ব্যাংকের বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা বলেন, বাচবিচার না করে সোনালী ব্যাংক অনেক দুর্বল আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে (এনবিএফআই) কলমানিতে অর্থ ধার দিয়েছে। এর মধ্যে বেশির ভাগ এনবিএফআই একদিনের জন্য ধার নেয়া অর্থ এক বছরেও ফেরত দিতে পারছে না। কয়েকটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান ধার নেয়া অর্থের সুদ পরিশোধও বন্ধ করে দিয়েছে। দেশের ২৭টি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কাছে কলমানিতে গতকাল পর্যন্ত ৫৪৪ কোটি টাকা বিনিয়োগ আছে সোনালী ব্যাংকের। এ তালিকায় বিএফআইসি, ইন্টারন্যাশনাল লিজিং, ফার্স্ট ফিন্যান্স, পিপলস লিজিং, ফারইস্ট ফিন্যান্সের মতো আর্থিক প্রতিষ্ঠানও রয়েছে।

এ বিষয়ে সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. ওবায়েদ উল্লাহ্ আল্ মাসুদ বলেন, ২০১৬ সালের পর কোনো দুর্বল আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে টাকা দেয়া হয়নি। তার পরও ওই প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছ থেকে টাকা আদায় করা যাচ্ছে না।

সুদ থেকে আয়কে যেকোনো ব্যাংকের মূল আয় হিসেবে বিবেচনা করা। যদিও বিপুল খেলাপির চাপে পড়া রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী ব্যাংক সুদ খাতে ধারাবাহিকভাবে লোকসান গুনছে। ২০১৮ সালেও সুদ খাতে ৬২০ কোটি টাকা লোকসান দিয়েছে ব্যাংকটি। এর আগে ২০১৭ সালে সুদ খাতে ব্যাংকটির লোকসান ছিল ১ হাজার ৫১৪ কোটি টাকা। মূলত সোনালী ব্যাংক দাঁড়িয়ে আছে ইনভেস্টমেন্ট ও কমিশন থেকে আয়ের ওপর। বিদায়ী বছরে এ দুই খাত থেকে সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকার বেশি আয় করেছে ব্যাংকটি।

s
এই বিভাগের আরো সংবাদ
© All rights reserved © 2021 deshmediabd.com