1. admin@deshmediabd.info : admin :
  2. support@bdsoftinc.info : adminr :
রবিবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২:১৫ অপরাহ্ন
সর্বশেষ সংবাদঃ
শহীদ বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ড: পরিকল্পিত নিধনের ইতিহাস ও জাতীয় ক্ষতি শরিফ ওসমান হাদীর ওপর সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন অ্যাটর্নি জেনারে মুন্সীগঞ্জের টঙ্গীবাড়িতে ধর্মীয় অনুষ্ঠানে পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রীর অংশগ্রহণ কলকাতায় লিওনেল মেসির অনুষ্ঠানে বিশৃঙ্খলা, প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইলেন মমতা ব্যানার্জি শহীদ বুদ্ধিজীবীরা ছিলেন মুক্তিযুদ্ধে বুদ্ধিবৃত্তিক লড়াইয়ের সম্মুখসারির যোদ্ধা: প্রধান উপদেষ্টা পালমিরায় আইএসআইএসের অতর্কিত হামলায় দুই মার্কিন সেনা ও এক দোভাষী নিহত এল ক্লাসিকোর পর ওসাসুনাকে হারিয়ে লা লিগায় ব্যবধান বাড়াল বার্সেলোনা নতুন চলচ্চিত্রে ব্যস্ততা বাড়ছে অভিনেতা আব্দুন নূর সজলের আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন সহজ হবে না, ষড়যন্ত্র অব্যাহত রয়েছে: তারেক রহমান জরুরি মেরামত ও সংরক্ষণমূলক কাজের জন্য সিলেট নগরীর বিভিন্ন এলাকায় আজ বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ

নিত্যপণ্যের দাম আন্তর্জাতিক বাজারে কম উলটো চিত্র দেশে

রিপোর্টার
  • আপডেট : রবিবার, ৯ জুলাই, ২০২৩
  • ৯৩ বার দেখা হয়েছে

নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম আন্তর্জাতিক বাজারে কমলেও দেশের বাজারে উলটো চিত্র। আন্তর্জাতিক বাজারে এক বছরের ব্যবধানে চিনি ছাড়া প্রায় সব ধরনের পণ্যের দাম কমেছে গড়ে ২১ শতাংশ। এর প্রভাবে বৈশ্বিকভাবে মূল্যস্ফীতির হারও কমতে শুরু করেছে। কিন্তু স্থানীয় বাজারে পণ্যের দাম গড়ে বেড়েছে প্রায় ৩২ শতাংশ। এ কারণে মূল্যস্ফীতির হারও বাড়ছে। ওই সময়ের ব্যবধানে আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলসহ গ্যাস ও কয়লার দামও কমেছে।

 

একই সঙ্গে কমেছে জাহাজ ভাড়া। এতে পণ্য পরিবহণ ব্যয় কমেছে। দেশে ডলারের দাম বাড়ায় আমদানি খরচ কিছুটা বেড়েছে। তবে আন্তর্জাতিক বাজারে যেভাবে পণ্যের দাম ও জাহাজ ভাড়া কমেছে, এর কোনো প্রভাব দেশের বাজারে পড়েনি। বাজার তদারকির দায়িত্বে থাকা সরকারি খাতের সংস্থাগুলোও নির্বিকার। তারা তদারকি করলেও আন্তর্জাতিক বাজারের দামের সঙ্গে দেশের বাজারের দামের সমন্বয় করতে পারছে না।

এদিকে ব্যবসায়ীরা অজুহাত দিচ্ছেন চড়া দামে ডলার কিনে পণ্য আমদানি এবং দেশে জ্বালানি তেল, গ্যাস, বিদ্যুতের দামসহ বিভিন্ন সেবার মূল্য ও ফি বাড়ানোয় উৎপাদন খরচ বেশি পড়ছে। যে কারণে দাম কমানো যাচ্ছে না। আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর প্রতিবেদনেও বলা হয়েছে, বাংলাদেশে নিত্যপণ্য ও সেবার মূল্য অনেক বেশি। যে কারণে দেশটির মূল্যস্ফীতির হার কমছে না। উলটো খাদ্যের দাম বাড়ায় মূল্যস্ফীতির হার বেড়ে যাচ্ছে। অন্যদিকে অর্থনৈতিক মন্দায় মানুষের আয় কমে যাচ্ছে। ফলে স্বল্প ও মধ্য আয়ের মানুষের ভোগান্তি বেড়েছে।

শুক্রবার রাতে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষিবিষয়ক সংস্থার (এফএও) প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে দেখা যায়, এক বছরের ব্যবধানে আন্তর্জাতিক বাজারে বিভিন্ন খাদ্যপণ্যের দাম কমেছে প্রায় ২১ শতাংশ। শনিবার সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) বাজার দর প্রতিবেদন থেকে দেখা যায়, দেশে এক বছরের ব্যবধানে গড়ে পণ্যের দাম বেড়েছে ৩২ শতাংশ। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) প্রতিবেদন থেকে দেখা যায়, এক বছরের ব্যবধানে খাদ্যপণ্যের সূচক কমলেও খাদ্য খাতে মূল্যস্ফীতির হার বেড়েছে। বিবিএস-এর তথ্য নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের তৈরি এক প্রতিবেদন থেকে দেখা যায়, গত বছরের মার্চের তুলনায় এ বছরের মার্চে বিড়ি-সিগারেট ছাড়া বাকি সব পণ্যের দাম বেড়েছে।

এফএও-এর প্রতিবেদন থেকে দেখা যায়, গত বছরের জুনে ১৫৫ ডলার দিয়ে যেসব পণ্য কেনা যেত, গত জুনে একই পণ্য কিনতে খরচ হচ্ছে ১২২ ডলার। আলোচ্য সময়ে পণ্যের দাম কমেছে প্রায় ২১ শতাংশ। এর মধ্যে শুধু চিনির দাম বেড়েছে। বাকি সব পণ্যের দাম কমেছে। গত বছরের জুনে ১১৭ ডলারে যে পরিমাণ চিনি পাওয়া যেত, গত জুনে তা কিনতে খরচ হয়েছে ১৫৩ ডলার। ওই সময়ে চিনির দাম বেড়েছে ৩০ শতাংশ। চাল, ডাল, আটা, সবজিসহ সব ধরনের শস্যজাতীয় পণ্যের দাম কমেছে। গত বছরের জুনে ১৬৬ ডলারে যে পরিমাণ শস্যজাতীয় পণ্য কেনা যেত, গত জুনে ওই পরিমাণ পণ্য কিনতে খরচ হয়েছে ১২৭ ডলার।

আলোচ্য সময়ে দাম কমেছে প্রায় ২৪ শতাংশ। গত বছরের জুনে ২১২ ডলার দিয়ে যে পরিমাণ ভোজ্যতেল কেনা যেত, গত জুনে একই ওজনের ভোজ্যতেল কিনতে খরচ হয়েছে ১১৬ ডলার। ওই এক বছরে এর দাম কমেছে প্রায় সাড়ে ৪৫ শতাংশ। গত বছরের একই সময়ে ১৫০ ডলার খরচ করে যে পরিমাণ দুধ ও দুগ্ধজাতীয় পণ্য কেনা যেত, গত জুনে একই পরিমাণ পণ্য কিনতে খরচ হয়েছে ১১৭ ডলার। আলোচ্য সময়ে দাম কমেছে সোয়া ২২ শতাংশ। ১২৬ ডলার খরচ করে গত বছরের জুনে যে পরিমাণ মাংস এবং এজাতীয় পণ্য কেনা গেছে, তা কিনতে গত জুনে খরচ হয়েছে ১১৮ ডলার। ওই সময়ে দাম কমেছে প্রায় সাড়ে ৬ শতাংশ।

বিশ্বব্যাংক ঢাকা অফিসের সাবেক লিড ইকোনমিস্ট ড. জাহিদ হোসেন বলেন, বিশ্ববাজারে খাদ্যপণ্যের দাম কমার প্রভাব দেশে পড়ছে না। এর প্রধান কারণ হচ্ছে কার্যকর বাজার ব্যবস্থাপনার অভাব। কেননা এক্ষেত্রে উৎপাদন, আমদানি ও বাজারজাত-সব ক্ষেত্রেই অব্যবস্থাপনা রয়েছে।

সেটি না হলে যেসব পণ্য দেশে উৎপাদন হয় যেমন: বোরো ধান, ভরা মৌসুমের সময়ও দেখা যায় আগের মতো আর চালের দামটা কমে না। উৎপাদন তো অনেক ভালো হয়েছে। তাই এক্ষেত্রে উৎপাদন দিয়ে ব্যাখ্যা দেওয়া যাবে না। এখানে মূল সমস্যা হলো বাজারে যেসব খেলোয়াড় খেলছে, তাদের কারসাজি।
তেমনই আন্তর্জাতিক বাজারে দাম কমলে এর প্রভাব দেশের বাজারে না পড়ার ক্ষেত্রেও একই কারণ দায়ী।
কীভাবে কারা এসব খেলা খেলছে, এটা কি কর্তৃপক্ষ জানে না? এটা বিশ্বাসযোগ্য হতে পারে না। অবশ্যই জানে। কয়েকদিন আগে বাণিজ্যমন্ত্রী তো বললেন, আমরা সব জানি, সবাইকে চিনি। কিন্তু কিছু করা যাবে না। তাহলে পুরো অর্থনীতি সমস্যায় পড়বে। কিন্তু প্রশ্ন হলো-আমরা ওই রাঘববোয়ালদের জেলে দিতে বলছি না কেন? কিন্তু যারা কারসাজি করে, তাদের জন্য যেসব নীতি সহায়তা বা ভর্তুকি ও আমদানি শুল্ক সুবিধা আছে, সেগুলোয় সরকার হাত দিতে পারে। সেগুলো বাতিল করে দিতে পারে। সেদিকে না গিয়ে সরকার যদি এভাবে অসহায়ত্ব প্রকাশ করে, তাহলে বর্তমান বাজারের খেলোয়াড়রা তো সুযোগ নেবেই। সেই সঙ্গে নতুন খোলোয়াড়রাও উৎসাহিত হবেন। এটা একসময় ছোঁয়াচে রোগের মতো সারা দেশে ছড়িয়ে পড়বে।

সূত্র জানায়, পণ্য আমদানিতে খরচের একটি বড় অংশ যাচ্ছে জাহাজ ভাড়ায়। সাম্প্রতিক সময়ে আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম কমায় জাহাজ ভাড়াও কমেছে। অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম গত বছরের জুনে সর্বোচ্চ প্রতি ব্যারেল ১২৭ ডলারে উঠেছিল। এখন তা কমে ৭৬ ডলারে নেমেছে। আলোচ্য সময়ে দাম কমেছে ৪০ দশমিক ১৫ শতাংশ। একই সঙ্গে ওই সময়ের ব্যবধানে জাহাজ ভাড়া কমেছে ৩০ থেকে ৪৫ শতাংশ। এসব কারণে আমদানির খরচ কমেছে। কিন্তু দেশের বাজারে ডলারের দাম বেড়েছে। গত জুনে ডলারের দাম ছিল ৯৩ টাকা। এখন তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০৯ টাকা। ওই সময়ে এর দাম বেড়েছে ১৬ টাকা। এতে অবশ্য আমদানি খরচ বেড়েছে।

বিবিএস-এর হিসাবে দেশে বেড়েছে খাদ্য মূল্যস্ফীতি। জুনে এই হার দাঁড়িয়েছে ৯ দশমিক ৭৩ শতাংশে, যা প্রায় দুই অঙ্ক ছুঁইছুঁই। এর আগে গত বছরের আগস্টে এ হার দাঁড়িয়েছিল ৯ দশমিক ৯৪ শতাংশে। এরপর কমতে থাকে খাদ্য মূল্যস্ফীতির হার। এখন আবার বাড়তে শুরু করেছে। গত মে মাসে খাদ্য মূল্যস্ফীতির এ হার ছিল ৯ দশমিক ২৪ শতাংশ এবং এপ্রিলে ছিল ৮ দশমিক ৮৪ শতাংশ। এরও আগে ২০২২ সালের জুনে খাদ্যে মূল্যস্ফীতি ছিল ৮ দশমিক ৩৭ শতাংশ। জাতীয় পর্যায়ে যেমন খাদ্য মূল্যস্ফীতি বেড়েছে, তেমনই বেড়েছে গ্রাম ও শহর সর্বত্রই।

বিবিএস-সংশ্লিষ্টরা বলছেন, চাল, ডাল, চিনি, তেল, পেঁয়াজসহ বিভিন্ন নিত্যপণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় খাদ্য মূল্যস্ফীতি বাড়ছে। গ্রামে জুনে খাদ্যপণ্যের মূল্যস্ফীতির হার বেড়ে হয়েছে ৯ দশমিক ৯৫ শতাংশ, যা এর আগের মাসে ছিল ৯ দশমিক ৩২ শতাংশ। পাশাপাশি খাদ্যপণ্যের মূল্যস্ফীতির হার বেড়ে হয়েছে ৯ দশমিক ২৬ শতাংশ, যা এর আগের মাসে ছিল ৯ দশমিক ১৩ শতাংশ।

s
এই বিভাগের আরো সংবাদ
© All rights reserved © 2021 deshmediabd.com