ব্যাংকে ডলার সংকটের কারণে উচ্চশিক্ষার উদ্দেশ্যে বিদেশগামী ও দেশের বাইরে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের ভর্তি ফিসহ বেশির ভাগ ব্যয় হুন্ডির বাজারে চলে গেছে। অনেক শিক্ষার্থীই এখন বিদেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রয়োজনীয় খরচ পাঠানোর জন্য হুন্ডির মতো অপ্রাতিষ্ঠানিক পদ্ধতিকে বেছে নিতে বাধ্য হচ্ছেন। ব্যাংক থেকে ফি পাঠানোসংক্রান্ত ফাইল (স্টুডেন্ট ফাইল) না খোলার কারণে বৈধ এ লেনদেন অবৈধ পথে চলে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
গত মাসের (জুলাই) শুরুতে যুক্তরাষ্ট্রের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে দেশ ছেড়েছেন মাহমুদ হোসেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এ শিক্ষার্থী স্টুডেন্ট ফাইল খোলার জন্য প্রায় ছয় মাস ধরে বিভিন্ন ব্যাংকে ঘুরেছিলেন। কিন্তু ডলার সংকটের কথা বলে কোনো ব্যাংকই ফাইল খুলতে রাজি হয়নি। শেষ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে থাকা পরিচিত একজনের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি ফি, টিউশন ফিসহ অন্যান্য ফি জমা দিয়েছেন। মতিঝিলের একটি মানি এক্সচেঞ্জের মাধ্যমে সে টাকা যুক্তরাষ্ট্রে পাঠিয়েছেন বলে এ শিক্ষার্থী বণিক বার্তাকে জানিয়েছেন।
প্রায় একই ধরনের অভিজ্ঞতার কথা জানান অস্ট্রেলিয়ার একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়া বাংলাদেশী শিক্ষার্থী মনিরুজ্জামান। তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন ব্যাংকের শাখায় গিয়েছিলাম। কিন্তু কেউ স্টুডেন্ট ফাইল খুলতে রাজি হয়নি। শেষ পর্যন্ত হুন্ডির মাধ্যমে অস্ট্রেলিয়ায় ডলার পাঠাতে হয়েছে। এক্ষেত্রে তেমন কোনো বিড়ম্বনায় পড়তে হয়নি।’
বিদেশী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তিসহ বিভিন্ন ফি হুন্ডির মাধ্যমে পাঠানোর এসব ঘটনা উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। অনেক শিক্ষার্থীই এখন দেশের বাইরের উচ্চশিক্ষার ফি পাঠানোর জন্য হুন্ডিকে বেছে নিচ্ছেন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, একটি অতিপ্রয়োজনীয় বৈধ লেনদেনও অবৈধ পথে চলে যাওয়ায় দেশে হুন্ডির বাজার আরো শক্তিশালী হচ্ছে। ডলারের বিনিময় হার নিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ভুল নীতির কারণে হুন্ডির লেনদেন বাড়ছে।
বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশ আবাসিক মিশনের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন মনে করেন, ডলার সংকট মোকাবেলা করার কথা বলে ব্যাংকগুলো স্টুডেন্ট ফাইল খোলা বন্ধ করে দিয়েছিল। এক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রচ্ছন্ন নির্দেশনাও ছিল। কিন্তু এটি মনে রাখা দরকার, কোনো অতিপ্রয়োজনীয় লেনদেনই বন্ধ করে দেয়া যায় না। বৈধ চ্যানেলে ডলার পাঠাতে না পেরে শিক্ষার্থীরা হুন্ডির বাজারে যেতে বাধ্য হয়েছে। এর মাধ্যমে ইনফরমাল মার্কেট আরো বড় হয়েছে।বিস্তারিত