জাতিসংঘে সাধারণ পরিষদে গাজা উপত্যকায় ইসরাইল-হামাস যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব পাস হয়েছে। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (১২ ডিসেম্বর) রাতে ১৫৩-১০ ভোটে প্রস্তাবটি পাস হয়। ২৩টি দেশ ভোট দানে বিরত থাকে। যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবের বিরুদ্ধে যে ১০টি দেশ ভোট দিয়েছে, তাদের অন্যতম হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইল। যুক্তরাষ্ট্র গত সপ্তাহে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবেও ভেটো দিয়েছিল।
যুক্তরাষ্ট্রের বাংলা সংবাদমাধ্যম বাংলা প্রেস এ খবর জানিয়েছে।
জাতিসংঘে সাধারণ পরিষদের প্রস্তাব বাস্তবায়ন বাধ্যবাধকতাপূর্ণ না হলেও এর রাজনৈতিক গুরুত্ব রয়েছে। ইসরাইল-হামাস যুদ্ধ সম্পর্কে বৈশ্বিক দৃষ্টিভঙ্গি প্রতিফলিত হয়েছে এই প্রস্তাবে। জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্টোনিও গুটারেস দীর্ঘ দিন ধরেই গাজায় মানবিক যুদ্ধবিরতি আহ্বান জানিয়ে আসছেন। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের ভেটোর কারণে তা বাস্তবায়িত হতে পারছে না।
সাধারণ পরিষদে পাস হওয়া যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবটিতে অবিলম্বে সকল পণবন্দীর অবিলম্বে এবং নিঃশর্ত মুক্তি দাবি এবং যুদ্ধরত পক্ষগুলোকে আন্তর্জাতিক আইন মেনে চলার, বিশেষ করে বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষার আহ্বান জানানো হয়।
যুক্তরাষ্ট্র এই প্রস্তাবের কিছু অংশে পরিবর্তন আনতে চেয়েছিল। এর মধ্যে ছিল `হামাসের জঘন্য সন্ত্রাসী হামলা… এবং লোকজনকে পণবন্দী` করার নিন্দা অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানিয়েছিল। আর অস্ট্রিয়া হামাসের হাতে থাকা পণবন্দী শব্দগুলো অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানিয়েছিল। কিন্তু সমর্থনের অভাবে উভয় সংশোধনীই বাতিল হয়ে যায়।
জাতিসংঘে নিযুক্ত পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূত মুনির আকরাম হামাসের নাম অন্তর্ভুক্ত করার উভয় প্রস্তাবের বিপক্ষে যুক্তি দিয়ে বলেন যে কাউকে দোষ দিতে হলে উভয় দেশ, বিশেষ করে ইসরাইলের নাম অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
তিনি সাধারণ পরিষদে বলেন, `যখন আপনি জনসাধারণের স্বাধীনতা ও মর্যাদা অস্বীকার করবেন, যখন আপনি উন্মুক্ত কারাগারে তাদের অপমানিত করবেন, ফাঁদে ফেলবেন, যখন আপনি তাদেরকে পশুর মতো হত্যা করবেন, তখন তারা খুবই ক্রুদ্ধ হবে, তারা তাদের প্রতি যেসব আচরণ করা হচ্ছে, তাই করবে।`
সাধারণ পরিষদে প্রস্তাবটি পাস হওয়র প্রশংসা করেছেন ফিলিস্তিনি দূত রিয়াদ মনসুর। তিনি বলেন, `বিশ্ব একটি শক্তিশালী, মহান এবং বিশাল অবস্থান প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের মাধ্যমে।`
তিনি বলেন, অক্টোবরে সাধারণ পরিষদে যুদ্ধবিরতির আহ্বানে ১২০ ভোট পাওয়া গিয়েছিল। এবার তার চেয়ে ৩০ ভোট বেশি পাওয়া গেছে।
এদিকে, ভোট দানে বিরত থেকেছে ২৩টি দেশ। ইসরাইল যদিও এই প্রস্তাব মানবে না, কিন্তু বিশ্বব্যাপী ইসরাইলি হামলার বিরুদ্ধে জনমতের প্রতিফলন ঘটেছে এই প্রস্তাবে। উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরাইল। এতে ১৮ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে।
জাতিসংঘে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইল এ ধরনের যেকোনো প্রস্তাবে যে বিরুদ্ধে ভোট দেবে, তা ছিল স্বাভাবিক। অপর যে আটটি দেশ বিপক্ষে ভোট দিয়েছে তাদের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে প্রশান্ত মহাসাগরীয় দুটি ক্ষুদ্র দেশ মাইক্রোনেশিয়া এবং নাউরো। এই দুই দেশের সম্মিলিত জনসংখ্যা এক লাখ ৩০ হাজার।
যে ১০ দেশ বিপক্ষে ভোট দিয়েছে: অস্ট্রিয়া, চেক প্রজাতন্ত্র, গুয়েতেমালা, ইসরাইল, লাইবেরিয়া, মাইক্রোনেসিয়া, নাউরো, পাপুয়া নিউ গিনি,প্যারাগুয়ে ও যুক্তরাষ্ট্র।
তবে যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ মিত্র ফ্রান্স প্রস্তাবটির পক্ষে ভোট দিয়েছে। চীন ও রাশিয়াও পক্ষে ভোট দিয়েছে। আর যুক্তরাজ্য ভোটদানে বিরত থেকেছে। অর্থাৎ জাতিসঙ্ঘ নিরাপত্তা পরিষদে ভেটো শক্তির অধিকারী পাঁচ দেশের মধ্যে তিনটিই যুদ্ধবিরতির আহ্বান সমর্থন করেছে। বিপক্ষে ভোট দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। আর ভোট দানে বিরত ছিল যুক্তরাজ্য।
রাশিয়ার আক্রমণের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক ও আর্থিক সমর্থন লাভকারী ইউক্রেনও ভোটদানে বিরত ছিল। ইসরাইলের কট্টর সমর্থক জার্মানিও বিরত ছিল। আর জার্মানির প্রতিবেশী অস্ট্রিয়া এর বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়।
ইউক্রেনের সীমান্তে অবস্থিত এবং মার্কিন মিত্র ও ন্যাটোর সদস্য পোল্যান্ড প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিয়েছে। ফিনল্যান্ড, সুইডেনও প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিয়েছে। এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় এলাকায় যুক্তরাষ্ট্রের অংশীদার ভারত, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, অস্ট্রেলিয়াও প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিয়েছে।
তবে যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ মিত্র ফ্রান্স প্রস্তাবটির পক্ষে ভোট দিয়েছে। চীন ও রাশিয়াও পক্ষে ভোট দিয়েছে। আর যুক্তরাজ্য ভোটদানে বিরত থেকেছে। অর্থাৎ জাতিসঙ্ঘ নিরাপত্তা পরিষদে ভেটো শক্তির অধিকারী পাঁচ দেশের মধ্যে তিনটিই যুদ্ধবিরতির আহ্বান সমর্থন করেছে। বিপক্ষে ভোট দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। আর ভোট দানে বিরত ছিল যুক্তরাজ্য।
রাশিয়ার আক্রমণের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক ও আর্থিক সমর্থন লাভকারী ইউক্রেনও ভোটদানে বিরত ছিল। ইসরাইলের কট্টর সমর্থক জার্মানিও বিরত ছিল। আর জার্মানির প্রতিবেশী অস্ট্রিয়া এর বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়।
ইউক্রেনের সীমান্তে অবস্থিত এবং মার্কিন মিত্র ও ন্যাটোর সদস্য পোল্যান্ড প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিয়েছে। ফিনল্যান্ড, সুইডেনও প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিয়েছে। এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় এলাকায় যুক্তরাষ্ট্রের অংশীদার ভারত, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, অস্ট্রেলিয়াও প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিয়েছে।