জাতীয় ডেস্ক
সারা দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে কোনো মৃত্যুর ঘটনা ঘটেনি। তবে এই সময়কালে নতুন করে ২৮৮ জন রোগী ডেঙ্গু আক্রান্ত হিসেবে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এই তথ্য জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোলরুম।
চলতি বছরের শুরু থেকে এ পর্যন্ত দেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মোট ৪০৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদফতরের সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীদের মধ্যে বরিশাল বিভাগের সিটি করপোরেশনের বাইরে ৩৫ জন, চট্টগ্রাম বিভাগের সিটি করপোরেশনের বাইরে ৫৯ জন, ঢাকা বিভাগের সিটি করপোরেশনের বাইরে ৬৩ জন, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে ৫২ জন এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে ৩৩ জন।
অন্যদিকে খুলনা বিভাগের সিটি করপোরেশনের বাইরে ১২ জন, ময়মনসিংহ বিভাগের সিটি করপোরেশনের বাইরে ২৩ জন, রাজশাহী বিভাগের সিটি করপোরেশনের বাইরে ৮ জন, রংপুর বিভাগের সিটি করপোরেশনের বাইরে ২ জন এবং সিলেট বিভাগের সিটি করপোরেশনের বাইরে ১ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে স্বাস্থ্য অধিদফতর ইতোমধ্যেই স্থানীয় হাসপাতাল ও স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলোতে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। তারা সাধারণ মানুষকে বিশেষভাবে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছে এবং বাড়ি-বাড়িতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার নির্দেশনা জারি করেছে। বিশেষ করে, বাড়ি বা আশেপাশের জল জমে থাকা স্থানগুলোতে মশা নিধন কার্যক্রম জোরদার করার উপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে।
স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ডেঙ্গু মূলত মশার মাধ্যমে সংক্রমিত হওয়ায় প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি। নিয়মিত জলাবদ্ধতা দূরীকরণ, মশার ছানা নিধন ও ব্যক্তিগত সতর্কতা যেমন মশারি ব্যবহার, পোশাক ঢেকে রাখার মাধ্যমে সংক্রমণ প্রতিরোধ সম্ভব। এছাড়া, উচ্চ জ্বর, শরীরের ব্যথা ও অস্বাভাবিক রক্তপাতের মতো উপসর্গ দেখা দিলে দ্রুত নিকটস্থ হাসপাতালে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
বিভাগীয় ভিত্তিতে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বিশ্লেষণ থেকে দেখা যাচ্ছে, ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন এবং চট্টগ্রাম ও বরিশাল বিভাগের কিছু এলাকায় ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা তুলনামূলকভাবে বেশি। এটি ইঙ্গিত দেয় যে, শহুরে এলাকাগুলিতে জনসংখ্যার ঘনত্ব এবং জলাবদ্ধতার কারণে সংক্রমণের ঝুঁকি বেশি। স্বাস্থ্য অধিদফতর বিশেষ নজরদারি ও রোগ নিরীক্ষণ কার্যক্রম চালাচ্ছে।
বর্তমান পরিস্থিতি থেকে বোঝা যাচ্ছে, ডেঙ্গু নির্ণয় ও হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে, তবে মৃত্যুর হার সাম্প্রতিক সময়ে নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এ অবস্থায় স্বাস্থ্য প্রশাসন ও স্থানীয় প্রশাসনের সমন্বিত প্রচেষ্টা রোগীর সেবা নিশ্চিতকরণ এবং নতুন সংক্রমণ প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।