জেলা প্রতিনিধি
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সদর উপজেলায় কনের পরিবারের সদস্যদের হামলায় বরের মা নিহত হয়েছেন। মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) দুপুরে সদর উপজেলার মাছিহাতা ইউনিয়নের কাঞ্চনপুর এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। নিহত দীপালি রানী দাস (৫৫) ওই এলাকার মৃত শয়লেন চন্দ্র দাসের স্ত্রী।
নিহতের মেয়ে ইতি দাস জানিয়েছেন, প্রায় তিন মাস আগে তার ভাই সবুজ চন্দ্র দাস পাশের বাড়ির সুকেশ চন্দ্র দাসের মেয়ে সুইটি রানী দাসকে পালিয়ে বিয়ে করেন। তবে কনের পরিবার এই বিয়ে মেনে নিতে পারেননি। বিয়ের পর থেকেই সবুজ চন্দ্র দাসের পরিবারের ওপর নানা ধরনের হুমকি ও ভয়ভীতি চলছিল। নিরাপত্তাহীনতার কারণে এক পর্যায়ে পরিবারটি অন্যত্র আশ্রয় নেন।
সম্প্রতি তারা বাড়িতে ফিরে এলে কনের পরিবারের সদস্যরা পুনরায় হামলা ও ভয়ভীতি শুরু করেন। মঙ্গলবার সকালে স্থানীয় বাজারে বর সবুজের পরিবারের সদস্যদের ওপর হামলা চালানো হয়। এরপর দুপুরে প্রতিবাদ জানাতে গেলে কনের পরিবারের সদস্যরা আরও ক্ষিপ্ত হন। একপর্যায়ে সবুজের শ্যালক নিলয় চন্দ্র দাস ইট দিয়ে সবুজের মা দীপালি রানীর মাথা ও মুখে আঘাত করেন। গুরুতর অবস্থায় তাকে দ্রুত ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহিদুল ইসলাম জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। এ ঘটনায় ছেলের শ্বশুরবাড়ির তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে। নিহতের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। তিনি আরও জানান, ঘটনার তদন্ত শেষে দায়ীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
স্থানীয়রা বলছেন, ঘটনাটি এলাকায় উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে এবং সামাজিকভাবে পরিবারগুলোর মধ্যে সম্পর্কের অবনতি ঘটিয়েছে। নিরাপত্তা ও শাস্তির বিষয়টি নিয়ন্ত্রণে রাখতে স্থানীয় প্রশাসন এবং পুলিশ তৎপর রয়েছে। ঘটনার প্রেক্ষাপট অনুযায়ী, পারিবারিক বিরোধ এবং পালিয়ে বিয়ে বিষয়ক সামাজিক উত্তেজনা ভবিষ্যতে একই ধরনের ঘটনা প্রতিরোধে আরও সজাগ থাকার প্রয়োজনীয়তা নির্দেশ করছে।
এই ঘটনার প্রভাব এবং পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা স্থানীয় সম্প্রদায় এবং প্রশাসনের নজরে রয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, তদন্ত শেষে দায়ীদের বিরুদ্ধে Murder ও Assault সংক্রান্ত আইন অনুযায়ী যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।