আইন আদালত ডেস্ক
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদিকে ১২ ডিসেম্বর শুক্রবার দুপুরে হত্যার উদ্দেশ্যে গুলি করা হয়। হত্যাকাণ্ডের মূল অভিযুক্ত হিসেবে ফয়সাল করিম মাসুদের নাম জানা গেছে।
গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে, হাদির সঙ্গে ফয়সালের পরিচয় হয় ইনকিলাব মঞ্চের কালচারাল সেন্টারে। হত্যাকাণ্ড ছিল সুপরিকল্পিত। বিদেশ থেকে ফয়সাল ও তার সহযোগীরা ‘শুটার টিম’ গঠন করেন। টার্গেটের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে তোলার মাধ্যমে সাত দিনের মধ্যে প্রাণঘাতী হামলা সম্পন্ন করা হয়। হত্যার ১২ ঘণ্টার মধ্যে ফয়সাল দেশ ছেড়ে চলে যান। গুরুত্বপূর্ণ আলামতও পরিকল্পনা অনুযায়ী অপসারিত হয়েছে।
জানা গেছে, ৪ ডিসেম্বর রাত ৮টা ১৮ মিনিটে ফয়সাল ও সহযোগী কবির হাদির সঙ্গে প্রায় ছয় মিনিট বৈঠক করেন। এরপর ৯ ডিসেম্বর রাতে ফয়সাল কালচারাল সেন্টারে ফেরেন, এবার তার সঙ্গে ছিলেন আলমগীর। ১০ ডিসেম্বর হাদির প্রচারণায় সরাসরি অংশ নিয়ে হত্যার পরিকল্পনা চূড়ান্ত করেন ফয়সাল। নরসিংদী, সাভার ও মানিকগঞ্জসহ বিভিন্ন এলাকায় রেকি সম্পন্ন করা হয়।
হত্যার দিন, ১২ ডিসেম্বর, ভোর ৫টা ২২ মিনিটে ফয়সাল ও আলমগীর হেমায়েতপুরের গ্রিন জোন রিসোর্টে প্রবেশ করেন। সেখানে ফয়সালের বান্ধবী ও তার বোনও উপস্থিত ছিলেন। রিসোর্টে হাদির একটি ভিডিও দেখিয়ে হত্যার পরিকল্পনা সম্পন্ন করা হয়।
সকাল ৮টা ৫৪ মিনিটে বান্ধবীকে বাড্ডায় নামিয়ে দিয়ে ফয়সাল হাদি প্রচারণার স্থলে পৌঁছান। দুপুর ১২টা ২২ মিনিটে হাদিকে মতিঝিলের উদ্দেশ্যে রওনা হলে শুটার পেছন থেকে অটোরিকশা অনুসরণ করেন। দুপুর ২টা ২৪ মিনিটে পল্টনের বক্স কালভার্ট সড়কে গিয়ে হাদিকে লক্ষ্য করে দুটি গুলি চালানো হয়।
গোয়েন্দা তদন্তে উঠে এসেছে, হত্যাকাণ্ডটি সম্পূর্ণ পরিকল্পিত এবং নির্বাচনী প্রেক্ষাপটেও এর প্রভাব পড়তে পারে। শটের সময়সূচি, স্থান নির্বাচন ও টিমের প্রস্তুতি সবই সুসংগঠিতভাবে করা হয়েছিল। হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় রাজধানী ও দেশের রাজনৈতিক পরিবেশে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে।