বিনোদন ডেস্ক
বলিউড অভিনেত্রী শিল্পা শেঠির মালিকানাধীন বেঙ্গালুরুর একটি জনপ্রিয় রেস্তোরাঁর বিরুদ্ধে নির্ধারিত সময় লঙ্ঘন ও শব্দদূষণের অভিযোগে মামলা দায়ের করেছে কর্ণাটক পুলিশ। শহরের কিউবান পার্ক থানায় দায়ের করা এ মামলাকে কেন্দ্র করে বিষয়টি নতুন করে আলোচনায় এসেছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র অনুযায়ী, চলতি মাসের ১১ ডিসেম্বর গভীর রাত পর্যন্ত রেস্তোরাঁটি খোলা রাখা এবং উচ্চ শব্দে গান-বাজনা পরিচালনার অভিযোগের ভিত্তিতেই আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হয়।
প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী, বেঙ্গালুরুর কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত ‘বাস্তিয়ান’ নামের ওই রেস্তোরাঁটি নির্ধারিত সময় অতিক্রম করার পরও গ্রাহকদের সেবা কার্যক্রম চালু রেখেছিল। অভিযোগ রয়েছে, ওই রাতে সেখানে উচ্চ শব্দে সংগীত পরিবেশন এবং নাচ-গানের আয়োজন করা হয়, যা স্থানীয় শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণ আইন ও সময়সীমা সংক্রান্ত বিধিনিষেধের পরিপন্থী। বিষয়টি নজরে আসার পর পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে এবং প্রয়োজনীয় আইনগত প্রক্রিয়া শুরু করে।
কর্ণাটক পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, নগর এলাকায় বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের জন্য নির্ধারিত সময়সীমা ও শব্দমাত্রা সংক্রান্ত বিধান কঠোরভাবে অনুসরণ করার নির্দেশনা রয়েছে। এসব নিয়ম ভঙ্গ হলে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান ও দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করার সুযোগ রয়েছে। এ ঘটনায় রেস্তোরাঁটির ব্যবস্থাপককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করা হয়েছে এবং প্রাথমিক তদন্ত শেষে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
উল্লেখ্য, শুধু সময়সীমা লঙ্ঘনের অভিযোগই নয়, এর আগের সপ্তাহেও ‘বাস্তিয়ান’ রেস্তোরাঁটি একটি ভিন্ন ঘটনায় আলোচনায় আসে। জানা গেছে, একটি টেলিভিশন রিয়েলিটি শোর সাবেক বিজয়ী ওই রেস্তোরাঁয় নৈশভোজ করতে গিয়ে বিল পরিশোধ সংক্রান্ত বিষয়ে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বিরোধে জড়ান। ওই ঘটনার বিস্তারিত তথ্য নিয়ে তদন্ত না হলেও বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দেয়। পরবর্তীতে এই দুই ঘটনার সমন্বয়ে রেস্তোরাঁটির কার্যক্রম নিয়ে প্রশাসনের নজরদারি আরও জোরদার হয়।
শিল্পা শেঠি দীর্ঘদিন ধরে ভারতীয় চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন অঙ্গনে সক্রিয় একটি পরিচিত নাম। অভিনয়ের পাশাপাশি তিনি বিভিন্ন ব্যবসায়িক উদ্যোগের সঙ্গেও যুক্ত রয়েছেন। রেস্তোরাঁ শিল্পে বিনিয়োগের অংশ হিসেবে বেঙ্গালুরু ও অন্যান্য শহরে একাধিক খাবার প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে তার সম্পৃক্ততার তথ্য রয়েছে। তবে আইন অনুযায়ী, যেকোনো বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের দৈনন্দিন কার্যক্রম পরিচালনার দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট ব্যবস্থাপনার ওপর বর্তায় এবং নিয়ম লঙ্ঘনের ক্ষেত্রে প্রশাসন সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারে।
আইন ও প্রশাসন সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞদের মতে, মহানগর এলাকায় বসবাসকারী নাগরিকদের স্বার্থ রক্ষায় সময়সীমা ও শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণ আইন কার্যকর রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এসব বিধিনিষেধ জনস্বাস্থ্য, নিরাপত্তা এবং শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখার লক্ষ্যে প্রণীত। ফলে জনপ্রিয় ব্যক্তি বা বড় ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রেও আইনের ব্যত্যয় ঘটলে একইভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হয়ে থাকে।
এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত শিল্পা শেঠির পক্ষ থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি পাওয়া যায়নি। রেস্তোরাঁ কর্তৃপক্ষও মামলার বিষয়ে বিস্তারিত মন্তব্য করেনি। পুলিশ জানিয়েছে, তদন্ত প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে এবং তদন্তের ফলাফলের ওপর ভিত্তি করে পরবর্তী পদক্ষেপ নির্ধারণ করা হবে।
এই ঘটনায় বিনোদন জগতের তারকাদের ব্যবসায়িক উদ্যোগ এবং সেগুলোর আইনগত দায়বদ্ধতা নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ আশা করছে, চলমান তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত ঘটনা স্পষ্ট হবে এবং আইন অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিশ্চিত করা যাবে।