আন্তর্জাতিক ডেস্ক
তুরস্কের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, কৃষ্ণসাগরের আকাশ থেকে তুরস্কের দিকে ধেয়ে আসা একটি নিয়ন্ত্রণহীন ড্রোন ভূপাতিত করা হয়েছে। মঙ্গলবার মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে এই তথ্য জানানো হয়। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ড্রোনটি শনাক্ত হওয়ার পর তুরস্কের আকাশসীমার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়।
মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ড্রোনটি নিরাপদভাবে ভূপাতিত করা হয়, তবে ড্রোনটির ধরন বা উৎস সম্পর্কে বিস্তারিত কোনও তথ্য প্রকাশ করা হয়নি। তুর্কি বিমানবাহিনী এবং পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোর এফ–১৬ যুদ্ধবিমানগুলো সতর্ক অবস্থায় রাখা হয়।
গত সপ্তাহে কৃষ্ণসাগর অঞ্চলে উত্তেজনা বৃদ্ধি পেয়েছিল। রাশিয়ার সামরিক হামলায় ইউক্রেনের কয়েকটি বন্দর ক্ষতিগ্রস্ত হয়, যার মধ্যে তুরস্কের মালিকানাধীন তিনটি কার্গো জাহাজও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এই পরিস্থিতিতে তুরস্ক সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোকে সতর্ক করার পাশাপাশি আকাশসীমার নিরাপত্তা জোরদার করেছে।
রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাতের প্রেক্ষাপটে কৃষ্ণসাগরের পরিবেশ ক্রমেই সংবেদনশীল হয়ে উঠেছে। ইউক্রেনের হামলায় রাশিয়ার তেল রপ্তানির উদ্দেশ্যে যাত্রারত তিনটি ‘শ্যাডো ফ্লিট’ ট্যাংকার ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পর দুইপক্ষের মধ্যে উত্তেজনা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। পরে রাশিয়া ইউক্রেনের বন্দরে পাল্টা হামলা চালায় এবং কিয়েভকে সমুদ্রপথে বিচ্ছিন্ন করার হুমকি দেয়।
তুরস্কের এই পদক্ষেপ কেবল আকাশসীমার নিরাপত্তা রক্ষা পর্যন্ত সীমাবদ্ধ নয়, এটি অঞ্চলের সামরিক উত্তেজনা এবং আন্তর্জাতিক সমুদ্রপথের নিরাপত্তা সংক্রান্ত গুরুত্বও প্রতিফলিত করছে। কৃষ্ণসাগর থেকে তুরস্কের দিকে আসা নিয়ন্ত্রণহীন ড্রোন ভূপাতিত করার ঘটনা ভবিষ্যতে সমুদ্রপথে বাণিজ্যিক ও সামরিক চলাচলের উপর প্রভাব ফেলতে পারে।
আঞ্চলিক নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই ধরনের ঘটনা তুরস্কের কূটনৈতিক ও সামরিক নীতি প্রণয়নে প্রভাব ফেলতে পারে। একই সঙ্গে ন্যাটো এবং ইউক্রেন-রাশিয়া সংঘাতের সঙ্গে যুক্ত দেশগুলোর মধ্যে সতর্কতা বৃদ্ধি পাবে।
তুরস্কের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আকাশসীমা ও জাতীয় নিরাপত্তা রক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং এমন ধরনের পরিস্থিতি মোকাবেলায় তুরস্কের প্রস্তুতি অব্যাহত থাকবে।