অর্থনীতি ডেস্ক
আন্তর্জাতিক মুদ্রাবাজারে চলমান চাপের মধ্যে আরও দুর্বল হয়েছে ভারতীয় রুপি। সর্বশেষ লেনদেনে মার্কিন ডলারের বিপরীতে রুপির বিনিময় হার নেমে দাঁড়িয়েছে ৯০.৫৮, যা রুপির ইতিহাসে সর্বনিম্ন পর্যায় হিসেবে রেকর্ড হয়েছে।
অর্থনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, বৈশ্বিক অর্থনীতিতে চলমান অনিশ্চয়তা, যুক্তরাষ্ট্রের ডলারের শক্তিশালী অবস্থান, সুদের হার বৃদ্ধির প্রভাব এবং বিদেশি বিনিয়োগের ধীর গতি রুপির এই অবমূল্যায়নের প্রধান কারণ। এছাড়াও, দেশীয় মুদ্রাবাজারে জ্বালানি আমদানির অতিরিক্ত ব্যয় ও চলতি হিসাব ঘাটতির চাপ নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।
বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, রুপির এই দরপতন সরাসরি আমদানি ব্যয়ের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে। এর ফলে জ্বালানি, ভোজ্যতেল এবং অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে। একই সঙ্গে, শিল্পখাতে ব্যবহৃত কাঁচামালের খরচও বাড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে, যা উৎপাদন ব্যয় এবং সামগ্রিক অর্থনৈতিক চাপ বৃদ্ধি করতে পারে।
অপরদিকে, স্বল্পমেয়াদে রফতানিকারকদের কিছুটা সুবিধা হতে পারে, কারণ দুর্বল রুপির কারণে ভারতীয় পণ্যের আন্তর্জাতিক বাজারে মূল্য তুলনামূলকভাবে কম দেখা দেয়। তবে অর্থনীতির সামগ্রিক স্থিতিশীলতার জন্য এই ধরনের অবমূল্যায়ন দীর্ঘমেয়াদে ইতিবাচক নয় বলে মন্তব্য করেছেন অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।
মুদ্রাবাজারে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সম্ভাব্য হস্তক্ষেপ এবং নীতিগত উদ্যোগ গ্রহণের প্রস্তুতি নিচ্ছে। বাজার সংশ্লিষ্টরা এই পদক্ষেপের দিকে নজর রাখছেন, যা রুপির মান স্থিতিশীল করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, রুপির মূল্যায়ন ও বৈদেশিক বিনিময় নীতি সঠিকভাবে পরিচালনা না করলে চলতি হিসাব ঘাটতি ও আমদানি ব্যয় বৃদ্ধির কারণে দেশীয় অর্থনীতিতে চাপ বাড়তে পারে। তাই বর্তমান পরিস্থিতি বিনিয়োগকারী, ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষ সকলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে।
বর্তমান অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য অর্থনৈতিক নীতি নির্ধারক এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সমন্বিত পদক্ষেপ অপরিহার্য বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।