লাইফ স্টাইল ডেস্ক
আজ ২১ ডিসেম্বর, ২০২৫। বিশ্বের উত্তর গোলার্ধে আজ বছরের দীর্ঘতম রাত পালিত হচ্ছে। অন্যান্য দিনের তুলনায় আজ রাতের দৈর্ঘ্য বেশি হওয়ায় রাতকে ঘিরে মানুষ বিভিন্ন কার্যক্রমে সময় কাটাতে পারবে।
উত্তর গোলার্ধের দেশগুলোতে, যার মধ্যে বাংলাদেশও অন্তর্ভুক্ত, ২১ ডিসেম্বর সূর্য মকরক্রান্তি রেখার ওপর অবস্থান করে। এই অবস্থার ফলে পৃথিবীর উত্তর গোলার্ধ সূর্য থেকে কিছুটা দূরে হেলে থাকে। এর ফলশ্রুতিতে সূর্যের আলো কম পড়ায় দিনের দৈর্ঘ্য সংক্ষিপ্ত হয় এবং রাত দীর্ঘ হয়। তাই আজকের রাতকে বছরের সবচেয়ে দীর্ঘ রাত হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।
আগামীকাল ২২ ডিসেম্বর, সোমবার, উত্তর গোলার্ধে বছরের সবচেয়ে ছোট দিন দেখা যাবে। একই সঙ্গে, দক্ষিণ গোলার্ধে এই সময়কালটি বছরের দীর্ঘতম দিন এবং সর্বনিম্ন রাতের দিন হিসেবে পালিত হবে। এ বৈচিত্র্য পৃথিবীর অভ্যন্তরীণ অক্ষের হেলনের কারণে ঘটে, যা বছরের বিভিন্ন সময়ের জন্য সূর্যের আলো বিতরণে ভিন্নতা সৃষ্টি করে।
এই প্রাকৃতিক ঘটনার বৈজ্ঞানিক নাম “উইন্টার সলস্টিস” বা সূর্যের দক্ষিণায়ন। উইন্টার সলস্টিসের সময় উত্তর গোলার্ধে শীতকাল থাকে, যেখানে দক্ষিণ গোলার্ধে গ্রীষ্মকাল দেখা দেয়। এই অবস্থার কারণে পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলে দিনের দৈর্ঘ্য এবং রাতের সময়ের মধ্যে বৈচিত্র্য লক্ষ্য করা যায়।
বাংলাদেশে, বিশেষ করে শহরাঞ্চলগুলোতে, দীর্ঘ রাত শিক্ষার্থী, গবেষক এবং সাধারণ মানুষকে বিভিন্ন কার্যক্রমে সময় কাটানোর সুযোগ দেয়। অনেকেই এই রাতে দীর্ঘ সময় বই পড়া, চলচ্চিত্র দেখা বা ঘুমানোর জন্য ব্যবহার করেন। এছাড়া, এই রাতকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন প্রাকৃতিক ও জ্যোতির্বিজ্ঞান সম্পর্কিত কার্যক্রমে অংশগ্রহণেরও সুযোগ থাকে।
জ্যোতির্বিজ্ঞানের ব্যাখ্যা অনুযায়ী, পৃথিবীর অক্ষ ২৩.৫ ডিগ্রি হেলে অবস্থান করায় সূর্য বছরের নির্দিষ্ট সময়ে উত্তর এবং দক্ষিণ গোলার্ধের ওপর আলোর ভিন্ন মাত্রা প্রদান করে। ২১ ডিসেম্বরের দিনটি সূর্যের অবস্থান মকর রাশিতে হওয়ায় উত্তর গোলার্ধে সর্বনিম্ন আলোর প্রাপ্তি ঘটে এবং রাতের দৈর্ঘ্য বৃদ্ধি পায়।
এই প্রাকৃতিক ঘটনা শুধু দৈর্ঘ্যের দিক থেকে নয়, বরং ঋতু পরিবর্তন এবং পরিবেশগত প্রভাবের দিক থেকেও গুরুত্বপূর্ণ। উইন্টার সলস্টিসের পর থেকে দিন ক্রমে বৃদ্ধি পেতে শুরু করে এবং শীতকাল অগ্রসর হয়। একই সময়ে, দক্ষিণ গোলার্ধে দিন ক্রমে সংক্ষিপ্ত হতে থাকে, গ্রীষ্মকাল শেষ হওয়ার পথে যায়।
বিজ্ঞানীরা এ ধরনের প্রাকৃতিক পরিবর্তন পর্যবেক্ষণ করে জলবায়ু, আবহাওয়া এবং ঋতুবৈচিত্র্যের উপর বিশ্লেষণ করেন। এছাড়া, এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে শিক্ষামূলক এবং জ্যোতির্বিজ্ঞান বিষয়ক আলোচনা ও কার্যক্রমও অনুষ্ঠিত হয়। ফলে দীর্ঘ রাতকে শুধুমাত্র একটি প্রাকৃতিক ঘটনা হিসেবে নয়, বরং শিক্ষামূলক ও বৈজ্ঞানিক পর্যবেক্ষণের একটি গুরুত্বপূর্ণ সময় হিসেবে ধরা হয়।