মেহেরপুর প্রতিনিধিফ্রি ফায়ার-পাবজি গেম সংক্রান্ত বিরোধের জেরে পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র শিশু আবির হোসেনকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন মেহেরপুরের গাংনী থানার ওসি বজলুর রহমান। বুধবার বিকেল ৩টার দিকে গাংনী থানায় হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি একথা জানান।
হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় শিশু আবির হোসেনের মা রোজিনা খাতুন বাদী হয়ে মুজাহিদ ও হামিম নামে দুজনের বিরুদ্ধে গাংনী থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলার আসামিরা মেহেরপুর আদালতে হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছে। পরে আদালতের নির্দেশে আসামিদের বয়স ১৪ ও ১৫ বছর হওয়ার কারণে যশোর কিশোর সংশোধনাগারে পাঠানো হয়েছে।
গাংনী থানার ওসি বজলুর রহমান বলেন, মুজাহিদ, হামিম ও আবির তিনজন পরস্পর আত্মীয় হওয়ার কারণে একসাথে খেলাধুলা করতো। মোবাইল ফোনে সাধারণ গেম খেলতে খেলতে একপর্যায় ফ্রি ফায়ার-পাবজি গেমে আসক্ত হয়ে পড়ে তারা। কয়েক সপ্তাহ আগে মুজাহিদের কাছ থেকে আবির হোসেন ফ্রি ফায়ার-পাবজি গেম অ্যাকাউন্টের আইডি ও পাসওয়ার্ড নিয়ে সেটি পরিবর্তন করে। ওই অ্যাকাউন্টে মুজাহিদের ৫০ হাজার টাকা রয়েছে দাবি করে আবির হোসেনের কাছে অ্যাকাউন্টের আইডি ও পাসওয়ার্ড অথবা টাকা ফেরত চায় মুজাহিদ। কিন্তু আবির হোসেন আইডি ও পাসওয়ার্ড না দেওয়ায় বিরোধ শুরু হয়।
তিনি আরো বলেন, ঘটনার দিন ষোলটাকা ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য নুহু নবীর ছেলে হামিমকে সাথে নিয়ে মিরাজ উদ্দীনের ছেলে মুজাহিদ আবির হোসেনকে ডেকে নিয়ে মারধর করে। পরে হামিমের বেল্ট খুলে আবিরের গলায় চেপে ধরে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়। পরে আবিরের কাছে থাকা তার মায়ের মোবাইল ফোন থেকে মুজাহিদ আবিরের বাবার কাছে হিন্দি ভাষায় ১ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে।
আবিরের বাবা বিষয়টি আবিরের মা রোজিনা ও তার স্বজনদের জানায়। পরে স্বজনরা আবিরকে না পেয়ে বিভিন্ন স্থানে সন্ধান করার পাশাপাশি ৯৯৯ নম্বরে কল দেয়। ফোন কল পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যাওয়ার পর মুজাহিদ ও হামিমকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায় হত্যার ঘটনা স্বীকার করে তারা। পরে তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে মরদেহ উদ্ধার করা হয় বলে জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।