1. admin@deshmediabd.info : admin :
  2. support@bdsoftinc.info : adminr :
মঙ্গলবার, ১৫ এপ্রিল ২০২৫, ০১:২৮ অপরাহ্ন

পটুয়াখালীর ‘বাউফলে আ’লীগকে পৈত্রিক সম্পত্তি বানিয়েছেন এমপি ফিরোজ’

রিপোর্টার
  • আপডেট : বুধবার, ৭ জুলাই, ২০২১
  • ১৭৪ বার দেখা হয়েছে

পটুয়াখালী সংবাদদাতা

পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলা আওয়ামী লীগকে পৈত্রিক সম্পত্তি মনে করেন জাতীয় সংসদের সাবেক চিফ হুইপ আ স ম ফিরোজ এমপি। দলীয় কর্মীদের কাঁধে ভর করে তিনি কয়েকবার এমপি নির্বাচিত হয়েছেন। ভবিষ্যতে ছেলেকেও এমপি বানাতে চান। তৃণমূলের যে সকল নেতাকর্মী ঘাম ঝড়িয়ে তাকে কয়েকবার এমপি বানিয়েছেন, দলে তাদের কোনো মূল্যায়ন নেই। বরং দলের স্বার্থে কথা বললেই নেতাকর্মীদের লাঞ্ছিত হতে হয়।

মঙ্গলবার দলের ত্যাগী নেতাকর্মীদের সাথে এমপির বৈরি আচরণ নিয়ে নিজের ফেসবুক পেইজে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও বাউফল উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল মোতালেব হাওলাদার। এরপর নয়া দিগন্ত সংবাদদাতার সাথে মুঠোফোনে কথা হয় মোতালে হাওলাদারের। এ সময় তিনি আ স ম ফিরোজ এমপি সম্পর্কে এসব কথা বলেন।

উপজেলা আওয়ামী লগি নেতা ও চেয়ারম্যান মোতালে হাওলাদার বলেন, ১৯৭৯ সালে যখন আ স ম ফিরোজ এমপি নির্বাচিত হন তখন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন আবদুল ওয়াদুদ মিয়া। এমপি নির্বাচিত হওয়ার কিছু দিন পরই আবদুল ওয়াদুদ মিয়াকে সাধারণ সম্পাদক বানিয়ে তিনি নিজেই হয়ে গেলেন সভাপতি। নিজের স্বার্থকে চরিতার্থ করতে একের পর এক দলের ত্যাগী নেতাদের অবমূল্যায়ন করছেন এমপি ফিরোজ।

নিজের প্রসঙ্গে আবদুল মোতালেব হাওলাদার বলেন, আমি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে আমার সাথে বৈরি আচরণ শুরু করেন এমপি ফিরোজ। সরকারি বরাদ্দের কোনো কাজেই আমি ইচ্ছার বহিঃপ্রকাশ করতে পারছি না। ভাইস চেয়ারম্যান মোশারেফ হোসেন খানকে দিয়ে তিনি নিজের খেয়াল খুশি মতো কাজ করান। উপজেলা চেয়ারম্যান হয়েও তৃণমূলের জনসাধারণের জন্য আমি কোনো কাজ করতে পারছি না। আগামী দিনে আমি তার পক্ষে কিংবা তার ছেলের পক্ষে কাজ করি কি না এমন সন্দেহের বশে এমপি ফিরোজ আমার সাথে বৈরি আচরণ করছেন।

উপজেলা চেয়ারম্যান মোতালেব হাওলাদারের বর্ণনা অনুযায়ী, বিগত দিনেও আ স ম ফিরোজ বাউফল উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জসীম উদ্দিন ফরাজী, আওয়ামী লীগ নেতা হেমায়েত মিয়া, ইউনুচ মিয়া, নুরুল হক মৃধা, খন্দকার সামসুল হক রেজা, ফিরোজ আলম ওরফে জাপান ফিরোজসহ বেশ কয়েকজন নেতাকে রাজনৈতিকভাবে বলি দিয়েছেন।

ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের প্রসঙ্গ টেনে মোতালেব হাওলাদার বলেন, গত ২১ জুন উপজেলার নয়টি ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুধু চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়ন ছাড়া বাকি আটটিতে উপজেলা আওয়ামী লীগের টিম পাঠানো হয়েছে।

চন্দ্রদ্বীপে কেন আওয়ামী লীগের টিম গেল না- প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, প্রতিটি ইউনিয়নে এমপি তার নিজস্ব পছন্দের ব্যক্তিকে চেয়ারম্যান নির্বাচিত করার কারণ জনসেবা নয়। এমপি তার নিজের অবস্থান শক্ত রাখতে প্রতিটি ইউনিয়নে চেয়ারম্যান বানিয়েছেন।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোতালেব আরো বলেন, পৌরশহরে আ স ম ফিরোজ এমপির সম্পত্তিতে জনতা ভবন রয়েছে। আমি দলীয় কার্যালয়ের জন্য সেখান থেকে কিছু সম্পত্তি দান করতে অনুরোধ করেছিলাম। কিন্তু তিনি আমার অনুরোধ রাখেননি। বরং কয়েক দিন আগে জনতা ভবন থেকে আওয়ামী লীগের দলীয় সাইন বোর্ডটিও সরিয়ে নেয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, আগামী দিনে আ স ম ফিরোজ তার ছেলেকে এমপি বানাতে চান। এর আগে তার ভাইকে উপজেলা চেয়ারম্যান বানাতে চেয়েছিলেন। দলকে তিনি পারিবারিক সম্পত্তি মনে করায় তৃণমূলের নেতাকর্মীরা বঞ্চিত হচ্ছেন। তিনি যা কিছু করেণ সব নিজের স্বার্থে। এ পর্যন্ত চারজন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদককে দল থেকে দূরে ঠেলে দিয়েছেন।

এ প্রসঙ্গে আ স ম ফিরোজ এমপি নয়া দিগন্তকে বলেন, ‘আমি কোনো বক্তব্য দিতে রাজি নই। আমাকে বাউফলবাসী ভালো করেই জানে। উড়ে এসে জুড়ে বসিনি। বাউফলবাসীর ভালোবাসায় আমি বারবার এমপি হয়েছি।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে বাউফলে আওয়ামী লীগের দু’টি গ্রুপ সক্রিয়। একটির নেতৃত্বে রয়েছেন এমপি ফিরোজ। অপর গ্রুপের নেতৃত্ব দেন বাউফল পৌরসভার মেয়র জুয়েল। এই বিরোধের জেরে বিভিন্ন সময় হামলা-পাল্টা হামলা ও সংঘর্ষে একাধিক নিহতসহ অনেকে আহত হয়েছে। এ নিয়ে আদালতে একাধিক মামলা বিচারাধীন।

তবে এতদিন উপজেলা চেয়ারম্যান মোতালেব ছিলেন এমপি ফিরোজের পক্ষেই। অভ্যন্তরীণ স্বার্থের কারণে এবার উপজেলা চেয়ারম্যানও সঙ্গ ছাড়লেন এমপি ফিরোজের।

s
এই বিভাগের আরো সংবাদ
© All rights reserved © 2021 deshmediabd.com