কক্সবাজারের উখিয়ায় ইয়াবা লুটের ঘটনা দেখে তা প্রচার করায় ‘চোর অপবাদ’ দিয়ে দুই যুবককে গাছে বেঁধে বর্বর কায়দায় নির্যাতন করা হয়েছে। উপজেলার পালংখালী ইউনিয়নের থাইংখালী হাকিমপাড়া এলাকায় গত বৃহস্পতিবার (১৫ জুলাই) বিকালে এ নির্যাতনের ঘটনা ঘটে।
তবে শনিবার রাতে নির্যাতনের একটি ভিডিও ক্লিপ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর বিষয়টি সবার গোচরে এসেছে। নির্যাতনের শিকার আবছার (২২) স্থানীয় হাকিমপাড়া এলাকার আবুল কাসেমের ছেলে ও অপর জন একই এলাকার শাহ আলমের ছেলে নয়ন (১৬)।
আরও পড়ুন:
সড়ক উন্নয়নের স্টিকার লাগানো গাড়িতে ৭ হাজার ইয়াবা
স্থানীয়রা জানান, সপ্তাহ দুই আগে পালংখালী ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্সের পিছনের রাস্তা থেকে নির্যাতনকারী জাহাঙ্গীর ও আবদুস সালাম নামের দুই ব্যক্তি অজ্ঞাত ইয়াবা ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ১৪ হাজার ইয়াবা লুট করেন। দৃশ্যটি আবছার ও নয়ন দেখে ফেলে এবং পরে তা অন্যদের জানায়। এঘটনায় তাদের ওপর ক্ষিপ্ত হন ইয়াবা লুটকারী জাহাঙ্গীর ও আবদুস সালাম। একপর্যায়ে তারা বৃহস্পতিবার আবছার ও নয়নকে ধরে নিয়ে রশি দিয়ে গাছের সঙ্গে বেঁধে বর্বর নির্যাতন চালায়। তারা মোবাইল ফোন চুরি করেছে বলে অপবাদ দেয়।
এই নির্যাতনের ভিডিও প্রচারের পর বিষয়টি জানাজানি হয়। ভিডিওতে দেখা যায়, আবছার ও নয়নকে রশি দিয়ে বেঁধে মারধর করা হচ্ছে। এক পর্যায়ে আবছারকে মাটিতে ফেলে দেন জাহাঙ্গীর। মাটিতে পড়া অবস্থায় আবছারকে অমানবিকভাবে মারধর করলে এক পর্যায়ে তিনি অজ্ঞান হয়ে যান। এ সময় নির্যাতনকারী জাহাঙ্গীরের পিতা মুফিজ উদ্দীন চৌধুরী ঘটনাস্থলে এসে অজ্ঞান আবছারের কপালে লাথি মারেন। মারধরের পর কোথাও অভিযোগ করবে না মর্মে নির্যাতিত দুই তরুণের কাছ থেকে খালি স্ট্যাম্পে সইও নেন তিনি। অভিযোগ করলে বসতভিটা থেকে উচ্ছেদের হুমকি দেওয়া হয়।
অভিযুক্তরা হলেন, পালংখালী ইউনিয়নের থাইংখালী মগ পাড়ার বিল (হাকিম পাড়া) ৫ নম্বর ওয়ার্ডের মুফিজ উদ্দিন চৌধুরীর ছেলে জাহাঙ্গীর আলম (৩৫) ও একই এলাকার মৃত নজু মিয়ার ছেলে আবদুস সালাম (৩৮)। মফিজ উদ্দিন চৌধুরী পালংখালী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান এম গফুর উদ্দিন চৌধুরীর বড় ভাই।
উখিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আহমদ সঞ্জুর মোরশেদ বলেন, চেয়ারম্যান গফুর উদ্দিন চৌধুরীর সহযোগিতায় অভিযুক্তরা এখন পুলিশের কবজায়। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট ধারায় মামলা করা হচ্ছে।