আদালত প্রতিবেদকআওয়ামী লীগের মহিলাবিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য পদ থেকে বহিষ্কৃত হেলেনা জাহাঙ্গীরকে পৃথক চার মামলায় ১৪ দিন রিমান্ডে নেওয়ার অনুমতি দিয়েছেন আদালত। আজ ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালত রিমান্ডের এ আদেশ দেন।
এর আগে রাজধানীর গুলশান থানার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় তিনদিনের রিমান্ড শেষে আসামিকে আদালতে হাজির করে পুলিশ। পরে নতুন করে এ মামলায় ফের ১০ দিন রিমান্ডের আবেদন করেন।
রিমান্ড আবেদনে বলা হয়, আসামি হেলেনা জাহাঙ্গীর অনলাইনে ভার্চুয়াল জগতে ডিজিটাল প্লাটফর্ম ব্যবহার করে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকাররের বিভিন্ন মন্ত্রী, বিভিন্ন সংস্থাকে কটূক্তি করে দেশের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গের ভাবমূর্তী ক্ষুন্ন করাসহ মিথ্যা তথ্য প্রকাশ ও প্রচারের মাধ্যমে দেশের আইন-শৃঙ্খল পরিস্থিতির অবনতি ঘটায়। আসামি গোপনে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকাররের বিরোধী কার্যকলাপ ও পরিকল্পনায় লিপ্ত। এছাড়া আসামি জিজ্ঞাসাবাদে তাহার সন্ত্রাসী গোষ্ঠী, দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টিকারী দল ও সংস্থার সাথে জড়িত থাকার বিষয়ে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে। তাই অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টিকারী দল ও সংস্থা এবং বিভিন্ন সন্ত্রাসী গোষ্ঠীকে শনাক্ত করার জন্য এ আসামিকে রিমান্ডে নেওয়া প্রয়োজন।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, চার মামলার মধ্যে রাজধানীর পল্লবী থানার টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলার সাতদিন এবং প্রতারণার মামলার সাত দিন মোট ১৪ দিন রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করে পুলিশ। শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম শাহিনুর রহমান আসামির জামিন আবেদন নাকচ করে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলায় চারদিন ও প্রতারণার মামলায় চারদিন মোট ৮ দিন রিমান্ডে নেওয়ার অনুমতি দেন।
এছাড়া গুলশান থানার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় ১০ দিন এবং বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলায় পাঁচ দিন মোট ১৫ দিন রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করেন। শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম নিভানা খায়ের জেসি আসামির জামিন আবেদন নাকচ করে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় তিনদিন ও বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলায় তিন দিন মোট ৬ দিন রিমান্ডে নেওয়ার অনুমতি দেন।
এর আগে ৩০ জুলাই আসামি হেলেনা জাহাঙ্গীরকে তিন দিন রিমান্ডে পাঠায় আদালত। ওই রিমান্ড শেষে আজ তাকে আদালতে হাজির করে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা। এর আগে বৃহস্পতিবার ২৯ জুলাই রাতে রাজধানীর গুলশান-২ এর ৩৬ নম্বর সড়কের ৫ নম্বর বাড়ি ‘জেনেটিক রিচমন্ড’-এ অভিযান চালিয়ে হেলেনা জাহাঙ্গীরকে (৪৯) গ্রেফতার করে র্যাব। অভিযানকালে ওই বাসা থেকে ১৯ বোতল বিদেশি মদ, ১টি ক্যাঙ্গারুর চামড়া, ১টি হরিণের চামড়া, ২টি মোবাইল ফোন, ১৯টি চেক বই ও বিদেশি মুদ্রা, ২টি ওয়াকিটকি সেট এবং জুয়া (ক্যাসিনো) খেলার সরঞ্জামাদি- ৪৫৬টি চিপস জব্দ করা হয়। ওই রাতেই মিরপুরে হেলেনা জাহাঙ্গীরের মালিকানাধীন জয়যাত্রা টেলিভিশনের কার্যালয়েও অভিযান চালানো হয়।
যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদন না থাকায় জয়যাত্রা টেলিভিশন স্টেশন সিলগালা ও অবৈধ মালামাল জব্দ করা হয়। সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ‘বাংলাদেশ আওয়ামী চাকরিজীবী লীগ’ নামের একটি সংগঠনের পোস্টার ভাইরাল হলে আলোচনায় উঠে আসেন হেলেনা জাহাঙ্গীর। পোস্টারে সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি হেলেনা জাহাঙ্গীর আর সাধারণ সম্পাদক মাহবুব মনিরের নাম উল্লেখ করা হয়। এর পরেই আওয়ামী লীগের মহিলাবিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য পদ হারান হেলেনা জাহাঙ্গীর।