1. admin@deshmediabd.info : admin :
  2. support@bdsoftinc.info : adminr :
শনিবার, ০৭ জুন ২০২৫, ০২:৫৩ পূর্বাহ্ন

রাজের উত্থান যেভাবে-

রিপোর্টার
  • আপডেট : শনিবার, ৭ আগস্ট, ২০২১
  • ১৭৬ বার দেখা হয়েছে

সিনেমা প্রযোজক নজরুল ইসলাম রাজ। গোপালগঞ্জের সদর থানার দুর্গাপুর এলাকায় তার জন্ম। পড়াশোনা করেছেন খুলনার ফুলতলার একটি মাদ্রাসায়। ১৯৮৯ সালে দাখিল পাস করার পর আর্থিক অনটনে আর বেশি পড়াশোনা করা হয়নি। চলে যান ঢাকার সাভার এলাকায় এক আত্মীয়র বাসায়। সেখানে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি নেন। পরে সেখানকার এক ঠিকাদারের সঙ্গে তার পরিচয় হলে তিনি একপর্যায়ে অল্প পুঁজি নিয়ে সড়কের উপকরণ সরবরাহ করা শুরু করেন। এরপর সেখানে ড্রেজিং ব্যবসাসহ বিভিন্ন ব্যবসার সঙ্গে জড়িত হন।

উত্তরার একটি ক্লাবে ২০০৮ সালে এক সিনেমা পরিচালকের সঙ্গে তার পরিচয় ঘটে। এতেই তার কপাল খুলে যায়। ওই পরিচালক ঢাকায় প্রায় ৪০টির অধিক সিনেমা নির্মাণ করেছেন। এখন তিনি আর সিনেমা নির্মাণ করেন না। একাধিক প্রযোজকের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ তার বিরুদ্ধে পাওয়া গেছে।
ওই পরিচালকের হাত ধরেই তিনি প্রতিষ্ঠা করেন রাজ মাল্টিমিডিয়া। রাজ মাল্টিমিডিয়া মডেল ও নায়িকা বানানোর নামে ব্ল্যাকমেইলের ফাঁদ তৈরি করে বলে র‌্যাব জানতে পেরেছে। ওইসব মডেল ও নায়িকাদের পরে উচ্চবিত্ত সন্তানদের কাছে ভিড়িয়ে রাজ মোটা অঙ্কের টাকা আদায় করতেন। এ ছাড়াও তিনি গ্রেপ্তার হওয়ার পর চলচ্চিত্রের এক নায়কের নাম উঠে এসেছে। সেই নায়ক রাজের সঙ্গে দেশে এবং বিদেশে প্রায় ২৫টি লং ড্রাইভ দিয়েছেন। সেই লং ড্রাইভে ঢাকার পাশের এক উঠতি নায়িকাও সঙ্গী হয়েছিলেন বলে র‌্যাবের তদন্তে উঠে এসেছে। রাজের বিরুদ্ধে সিনেমা প্রযোজনা, ব্ল্যাকমেইলের ফাঁদ ও টেন্ডারবাজির অভিযোগ পাওয়া গেছে। গণপূর্ত ভবনে তার অবাধে যাতায়াত ছিল। সেখানে নিয়ে যেতেন সুন্দরী মডেল। র‌্যাবের মাঠ পর্যায়ের গোয়েন্দারা রাজের কয়েকটি ব্যাংক হিসাবের সন্ধান পেয়েছে। এরমধ্যে ১৪টি হিসাবে ৯ কোটি টাকা লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে। এ ছাড়াও টেন্ডার মোঘল নামে পরিচিত জিকে শামীমের সঙ্গেও সখ্যতা গড়ে ওঠে রাজের। সম্প্রতি তিনি জিকে শামীমকে কারাগারে বিশেষ সুবিধা পাইয়ে দিতে তদবির করেছিলেন।
গত বুধবার রাজধানীর বনানী এলাকায় বিকাল হতে রাত পর্যন্ত অভিযান পরিচালনা করে শামসুন্নাহার স্মৃতি ওরফে পরীমনি, মো. নজরুল ইসলাম ওরফে রাজ আশরাফুল ইসলাম দীপু ও মো. সবুজ আলীকে গ্রেপ্তার করা হয়। রাজের বিরুদ্ধে মাদক ও পর্নোগ্রাফি আইনে বনানী থানায় দুইটি মামলা হয়েছে। মামলাটি তদন্ত করছে ডিবি পুলিশ।
এ বিষয়ে র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম বিভাগের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন মানবজমিনকে জানান, ‘রাজ মাল্টিমিডিয়া নামে একটি প্রতিষ্ঠানের নামে বিভিন্ন অপকর্মের সন্ধান পাওয়া গেছে। তার মালিক প্রযোজক নজরুল ইসলাম রাজ। বিষয়টি তদন্ত চলছে।
মামলার বিষয়ে জানতে চাইলে বনানী থানার এস আই গুলশান আরা জানান, র‌্যাব-১ এর সিপিসি মুজিবর রহমান বাদী হয়ে পর্নোগ্রাফি আইনের একটি মামলা করেছেন। মামলা নম্বর ৭। মামলার আলামতে সেক্স পণ্য উদ্ধার দেখানো হয়েছে।
র‌্যাব সদর দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, রাজ গ্রেপ্তার হওয়ার পর তাকে প্রাথমিকভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করে র‌্যাব। তার জীবনের উত্থান শুনে তারা নিজেরাই হতভম্ব। তার উঠে আসার পেছনে সিনেমা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও নায়ক এবং একাধিক শিল্পপতির নাম জানতে পেরেছে র‌্যাব।
সূত্র জানায়, নায়িকা পরীমনিকে র‌্যাব আটকের পর তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে র‌্যাব। পরীমনি র‌্যাবকে জানিয়েছেন যে, তাকে মূলত চলচ্চিত্রে এনেছেন রাজ। এ ছাড়াও তার উচ্ছৃঙ্খল জীবনের পেছনে রাজও দায়ী। তারা একসঙ্গে দেশে এবং বিদেশে বিভিন্ন স্থানে ঘুরে বেড়িয়েছেন। দুইজনকে মুখোমুখি জিজ্ঞাসাবাদে তারা একে অপরকে দায়ী করেছেন। সূত্র জানায়, অবশ্য রাজ র‌্যাবের কাছে দাবি করেছেন যে, তাকে অনেকেই ব্যক্তিগতভাবে ব্যবহার করেছেন। তবে তিনি কেন তাদের ফাঁদে পা দিতে গিয়েছেন তার কোনো উত্তর দিতে পারেননি।

s
এই বিভাগের আরো সংবাদ
© All rights reserved © 2021 deshmediabd.com