1. admin@deshmediabd.info : admin :
  2. support@bdsoftinc.info : adminr :
  3. jeradmin@deshmediabd.com : :
সোমবার, ১৩ জানুয়ারী ২০২৫, ০৮:৩৬ অপরাহ্ন
সর্বশেষ সংবাদঃ
মোবাইল ইন্টারনেট নিয়ে বিটিআরসির সুখবর রাজশাহীর সঙ্গে সারা দেশের ট্রেন যোগাযোগ বন্ধ প্রচণ্ড বাতাসের আশঙ্কা, লস অ্যাঞ্জেলসে দাবানলে মৃত্যু ২৪ জমজমের পানি বলে ট্যাপের পানি বিক্রি করছিলেন ব্যবসায়ী! করের বোঝা চাপিয়েও রাজস্ব ঘাটতি ৪২ হাজার কোটি টাকা এবার আলোচনায় টিউলিপের পারিবারিক বন্ধু সালমানপুত্র শায়ান গভর্নরের সঙ্গে বৈঠক ব্যয় বৃদ্ধির চাপ, ব্যবসা গোটাতে চান উদ্যোক্তারা ► নতুন বিনিয়োগে আগ্রহ কম ► শিল্পের উৎপাদন ৩০-৪০% পর্যন্ত কমেছে : বিসিআই ► বেসরকারি খাতে ঋণের প্রবৃদ্ধি ৭.৬৬% ব্যবসায়ী থেকে সাধারণ মানুষ সংকটে সবাই কোথাও নেই সুখবর হতাশা কাজ করছে মানুষের মধ্যে – আবু আহমেদ অবৈধ হাসপাতাল ভয়ংকর চিকিৎসা Sheikh Hasina, 5 of her family members sued over Purbachal plots

এক বছরে ভ্যাট গোয়েন্দা অধিদপ্তরের ১৬৭৬ কোটি টাকার ফাঁকি উদ্ঘাটন

রিপোর্টার
  • আপডেট : রবিবার, ৮ আগস্ট, ২০২১
  • ৮৮ বার দেখা হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক: বিদায়ী ২০২০-২১ অর্থবছরে মূসক নিরীক্ষা, গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর (ভ্যাট গোয়েন্দা) ২৩৩টি ভ্যাট ফাঁকির অভিযোগ তদন্ত করেছে। এতে প্রায় এক হাজার ৬৭৬ কোটি টাকার ভ্যাট ফাঁকি উদ্ঘাটিত হয়েছে। জরিমানাসহ এই ফাঁকির টাকা থেকে আদায় হয়েছে প্রায় ১৪৩ কোটি টাকা। অর্থবছর শেষে ভ্যাট গোয়েন্দার কার্যক্রম মূল্যায়নে এ চিত্র উঠে এসেছে। গতকাল ভ্যাট গোয়েন্দার বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

বলা হয়েছে, সুষ্ঠু করদাতাবান্ধব পরিবেশ সৃষ্টি, রাজস্ব ফাঁকি প্রতিরোধ, বিদ্যমান আইন ও বিধির পরিপালন নিশ্চিতকরণসহ ভ্যাট আহরণে সহায়ক ভূমিকা রাখার জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত এনবিআরের এই গোয়েন্দা সংস্থাটি। নতুন ভ্যাট আইন বাস্তবায়ন শুরুর মধ্যেই করোনার বিস্তারের সময়টিতে ভ্যাট ফাঁকি রোধে বড় ধরনের কোনো অভিযানে নামেনি ভ্যাট গোয়েন্দা সংস্থা। পরবর্তী সময়ে অর্থনৈতিক কার্যক্রম ধীরে ধীরে চালু হওয়ায় এনবিআরের নির্দেশে ভ্যাট ফাঁকি রোধে মাঠপর্যায়ের রাজস্ব আহরণকারী দপ্তরের পাশাপাশি গোয়েন্দা কার্যক্রম জোরদার করে ভ্যাট গোয়েন্দা। এতে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব ফাঁকির প্রমাণও মিলেছে।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ভ্যাট গোয়েন্দাদের তদন্ত অনুযায়ী প্রধানত পাঁচ উপায়ে ভ্যাট ফাঁকি ঘটে থাকে। এগুলো হলো প্রথমত, কোন কোন নিবন্ধিত প্রতিষ্ঠান তাদের প্রকৃত উপকরণ ক্রয় ও উৎপাদিত পণ্য বিক্রির তথ্য গোপন করে মাসিক রিটার্নে কম টার্নওভার প্রদর্শন করে থাকে। ফলে কম প্রদর্শিত বিক্রির ওপর যথাযথ ভ্যাট আহরণ হয় না। দ্বিতীয়ত, কোন কোন কোম্পানি একাধিক বার্ষিক সিএ রিপোর্ট তৈরি করে। প্রকৃত অ্যাকাউন্টিংয়ের তথ্য ভ্যাট কর্তৃপক্ষের কাছে ঘোষিত হয় না।

তৃতীয়ত, অনেক প্রতিষ্ঠান বিক্রির ওপর ভ্যাট দিলেও ব্যয়ের ওপর উৎসে প্রযোজ্য ভ্যাট কর্তন করে না। এতে বিপুল পরিমাণ ভ্যাট ফাঁকি হয়। চতুর্থত, অনেকে নিবন্ধন না নিয়েই ব্যবসা পরিচালনা করছে। ভ্যাট আইন অনুসারে ব্যবসার আগে নিবন্ধন নেয়া বাধ্যতামূলক। তাদের কেউ কেউ আবার নিবন্ধন ছাড়া ক্রেতাদের কাছ থেকে অবৈধভাবে ভ্যাট নিচ্ছে। পঞ্চমত, আবার কেউ কেউ ভ্যাট নিবন্ধন নিলেও ক্রেতাদের কাছ থেকে সংগৃহীত ভ্যাট আইন অনুসারে সরকারি কোষাগারে জমা দেয় না। তাদের এক অংশ যথাযথভাবে ভ্যাট চালানও ইস্যু করে না।

ভ্যাট গোয়েন্দা অধিদপ্তর দুভাবে এ তদন্ত করেছে। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে বার্ষিক অডিট কর্মসূচি তৈরি করে প্রতিষ্ঠান নির্বাচন ও অডিট সম্পন্ন করে; অন্যটি ভ্যাট আইনের ধারা ৮৩ অনুসারে তল্লাশি অভিযান পরিচালনার মাধ্যমে। গত বছরের হিসাব অনুসারে অডিট সম্পন্ন করা হয় ১৪১টি প্রতিষ্ঠানের। ৮৩ ধারায় অভিযান করা হয় ৯২টি প্রতিষ্ঠানে। গত অর্থবছরে রাজধানী ছাড়াও দেশের বিভিন্ন প্রান্তে অভিযান করাসহ নিয়মিত অডিটের মাধ্যমে প্রায় বিপুল পরিমাণ ফাঁকি উদ্ঘাটন করেছে ভ্যাট গোয়েন্দা অধিদপ্তর। এ তালিকায় ব্যাংক, বিমা ও অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানসহ সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানও রয়েছে।

ভ্যাট গোয়েন্দা দপ্তরের চার্টার অব ফাংশন অনুযায়ী, নিয়মিত অডিট পরিকল্পনা প্রণয়ন, এনবিআরের নির্দেশনা বাস্তবায়ন এবং গোয়েন্দা তথ্য ও ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে বিশেষ অডিট ও অনুসন্ধান কার্যক্রমের মাধ্যমে সর্বমোট ১৪১টি প্রতিষ্ঠানের অডিট কার্যক্রম সম্পন্ন করা হয়েছে। এই অডিটের মাধ্যমে প্রায় এক হাজার ৪০৪ কোটি টাকা রাজস্ব ফাঁকি উদ্ঘাটিত হয়েছে। এরই মধ্যে অনেক প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ অডিটে উদ্ঘাটিত টাকা স্বপ্রণোদিত হয়ে তাৎক্ষণিকভাবে প্রায় ১৩৫ কোটি টাকা সরকারি কোষাগারে জমা দিয়েছে।

অডিটে সর্বোচ্চ রাজস্ব উদ্ঘাটিত প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছেÑচট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের ৪৬২ কোটি ২৮ লাখ, প্রিমিয়ার ব্যাংকের ১৪৫ কোটি ১৬ লাখ, ইউনাইটেড কর্মাশিয়াল ব্যাংকের ১২৫ কোটি ৭৩ লাখ, বেসিক ব্যাংকের ১০০ কোটি ৫১ লাখ ও জনতা ব্যাংকের ৪৯ কোটি ৫২ লাখ টাকা। আমেরিকান লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির ৪৮ কোটি ৮৪ লাখ, সোনালী ব্যাংকের ৪৪ কোটি ২৭ লাখ, আইসিবি ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্টের ২৬ কোটি ৩৭ লাখ, ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্স লিমিটেডের ২৫ কোটি ২৮ লাখ, ডিপিএসএসটিএস স্কুলের ২৩ কোটি তিন লাখ, কারিশমা সার্ভিসেসের ২০ কোটি ৯৭ লাখ, লংকাবাংলা ফাইন্যান্সেন ২০ কোটি ৬০ লাখ এবং এলিট পেইন্ট অ্যান্ড কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজের ২১ কোটি ২০ লাখ টাকা ছাড়াও তালিকায় রয়েছে আরও নামিদামি প্রতিষ্ঠান।

এছাড়া নিজস্ব জনবল, সোর্স, পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদ, ব্যক্তিবিশেষের গোপন অভিযোগপত্র ও এনবিআর থেকে সুনির্দিষ্ট প্রতিষ্ঠানের ভ্যাট ফাঁকির অভিযোগের প্রাথমিক অনুসন্ধানের মাধ্যমে সত্যতা যাচাই করে এ দপ্তরের গোয়েন্দাদল সরেজমিনে প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন ও দলিলাদি জব্দকরণের মাধ্যমে প্রায় ১৩৪ কোটি ছয় লাখ টাকা উদ্ঘাটন করেছে। এরই মধ্যে প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ অভিযানের মাধ্যমে উদ্ঘাটিত ফাঁকির ক্ষেত্রে স্বপ্রণোদিত হয়ে তাৎক্ষণিকভাবে প্রায় আট কোটি তিন লাখ টাকা সরকারি কোষাগারে জমা দিয়েছে। অভিযানে সর্বোচ্চ রাজস্ব উদ্ঘাটিত প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে আকতার ফার্নিচারের ৩৯ কোটি ৬৩ লাখ টাকা, মোহাম্মদী ট্রেডিংয়ের ৩৮ কোটি ৯৯ লাখ, চারুতা প্রাইভেট লিমিটেডের ৩০ কোটি ৩৬ লাখ, উজালা পেইন্টস ইন্ডাস্ট্রিজের ২৭ কোটি ১৪ লাখ ও হোটেল লেকশোর সার্ভিসের ১৬ কোটি ৯৮ লাখ টাকা। ফুড ভিলেজ প্লাসের ১৩ কোটি ৫২ লাখ, ফুড ভিলেজের ১২ কোটি ৯৩ লাখ, ডিবিএল সিরামিকসের ছয় কোটি ৮৯ লাখ, খান কিচেনের তিন কোটি ৬০ লাখ এবং সুং ফুড গার্ডেনের তিন কোটি ৩৪ লাখ টাকা ছাড়াও আরও অনেক প্রতিষ্ঠান রয়েছে তালিকায়।

অপরদিকে গত অর্থবছরে এ অধিদপ্তর বিভিন্ন মার্কেটে খুচরা পর্যায়ে বিশেষ জরিপ পরিচালনা করে। এ সময় এনবিআরের বিশেষ নির্দেশে ঢাকা ও ঢাকার বাইরে সর্বমোট ২৫টি মার্কেটে অবস্থিত ১৫ হাজার ৪৮২টি দোকানে জরিপ পরিচালনা করা হয়। জরিপে দেখা যায়, নতুন আইন অনুযায়ী ১৩ ডিজিটের ভ্যাট নিবন্ধনের সংখ্যা খুবই কম। বিশেষ করে চলতি বছরের ২৪ থেকে ৩১ মে এক সপ্তাহের ১৭টি মার্কেট জরিপে দেখা যায়, মোট এক হাজার ৯৭৪টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে নিবন্ধন পাওয়া যায় ৫১৬টির। বাকি এক হাজার ৪৫৮টি ব্যবসার কোনো ভ্যাট নিবন্ধন নেই। অর্থাৎ অনিবন্ধিত প্রতিষ্ঠানের হার প্রায় ৭৭ দশমিক ৩৬ শতাংশ। অন্যদিকে নিবন্ধিত ব্যবসার হার ২২ দশমিক ৬৪ শতাংশ। জরিপ অনুযায়ী মাসে পাঁচ হাজার টাকার ওপরে ভ্যাট দেয় মাত্র ১১৩টি। বাকি প্রতিষ্ঠান নিবন্ধন নিয়েছে, তবে তারা নামমাত্র ভ্যাট দেয়।

এ অধিদপ্তর পরিচালিত জরিপে মার্কেটে অবস্থিত দোকানের মালিক ও মার্কেট অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা করেছে এবং তাদের আইন পরিপালনে উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে। চলতি বছর এ-সংক্রান্ত ক্ষেত্রে নানা সংগঠনের সঙ্গে আরও আলোচনা সভা আয়োজনের পরিকল্পনা রয়েছে।

এনবিআরের ভ্যাট অনলাইন সূত্রে জানা যায়, ভ্যাট গোয়েন্দাদের জরিপ কার্যক্রম পরিচালনার পর মাঠপর্যায়ে ভ্যাট নিবন্ধন গ্রহণের হার মাসে প্রায় চারগুণ বেড়েছে, যার ইতিবাচক প্রভাব চলতি অর্থবছরে রাজস্ব খাতে লক্ষ করা যাবে বলে ভ্যাট গোয়েন্দা অধিদপ্তর মনে করে। ভ্যাট ফাঁকি রোধে নিত্যনতুন কৌশল উদ্ভাবন, কর্মকর্তাদের উদ্বুদ্ধকরণ ও অভিন্ন নীতি প্রয়োগের মাধ্যমে গত অর্থবছরে অধিদপ্তর নিরীক্ষা, তদন্ত ও অনুসন্ধানের মাধমে মোট এক হাজার ৬৭৬ কোটি টাকার ভ্যাট ফাঁকি উদ্ঘাটন করেছে, যার বিপরীতে ১৪৩ কোটি টাকা সরকারি কোষাগার তাৎক্ষণিকভাবে জমা হয়। সার্বিকভাবে এর ফলে মাঠপর্যায়ে রাজস্ব আহরণে ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে। এ উদ্ঘাটন বিগত ২০১৯-২০ অর্থবছরের তুলনায় প্রায় পাঁচগুণ বেশি এবং তাৎক্ষণিকভাবে আদায় প্রায় আড়াই গুণ বেশি। উল্লেখ্য, ২০১৯-২০ অর্থবছরে ভ্যাট ফাঁকি উদ্ঘাটন হয়েছিল ৩১৯ কোটি টাকা; আদায় হয়েছিল প্রায় ৫৭ কোটি টাকা।

s
এই বিভাগের আরো সংবাদ
© All rights reserved © 2021 deshmediabd.com