1. admin@deshmediabd.info : admin :
  2. support@bdsoftinc.info : adminr :
  3. jeradmin@deshmediabd.com : :
মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৭:০৭ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ সংবাদঃ
ব্রাজিলে বাস দুর্ঘটনায় ৩৮ জন নিহত ডলারের বাজার আবার অস্থির Govt grants 10-year tax holiday for renewable energy firms Mobile surveillance used in pinpointing victims’ location: Commission গ্যাস সংকটে উৎপাদন নেমে অর্ধেকে, কয়েক শ কারখানা বন্ধ ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ইসির পরিকল্পনায় ডিসেম্বর ২০২৫ ভোটার তালিকায় ত্রুটি নেই দাবি ইসির সরকারের এক পক্ষ ২০২৬-এর এপ্রিলে, বিএনপিসহ সমমনারা চায় ২০২৫-এর জুনের মধ্যে ভোট জুলাই গণ-অভ্যুত্থান ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শহীদ ও আহত ব্যক্তিদের প্রথম ধাপের খসড়া তালিকা প্রকাশ ২০২৫-এর মধ্যেই নির্বাচন চায় বিএনপি ও বিভিন্ন দল লাইসেন্স ও ট্যাক্সের আওতায় আসছে ব্যাটারিচালিত রিকশা ফের আন্দোলনে নামছে বিএনপি দ্রুত সুস্পষ্ট রোডম্যাপ দাবি, চলছে নির্বাচনি প্রস্তুতি

পরীমনি মাদক মামলায় ফের চার দিনের রিমান্ডেপিয়াসা ও মৌ’র বাসায় যাওয়া রাঘববোয়ালরা এখনও অধরা

রিপোর্টার
  • আপডেট : মঙ্গলবার, ১০ আগস্ট, ২০২১
  • ১১৮ বার দেখা হয়েছে

আজাদ সুলায়মান ॥ ঢাকাই চলচ্চিত্রের আলোচিত নায়িকা পরীমনি, কথিত মডেল পিয়াসা ও গায়িকা মৌ’র বাসায় যেসব রাঘববোয়াল নিয়মিত যেতেন, তারা এখনও ধরাছোঁয়ার বাইরে। তাদের আটক করা দূূরের কথা, উল্টো তারা যাতে নিরাপদ ও নির্বিঘ্নে থাকতে পারে সে কৌশলই নিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ঢাকার পুলিশ কমিশনার শফিকুল ইসলাম মঙ্গলবারও অভিযোগ করেছেন, পরীমনিকাণ্ডে সম্পর্ক ফাঁসের হুমকি দিয়ে চাঁদাবাজির ঘটনায় ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে অনেকেই বাড়ি থাকা বন্ধ করে দিয়েছে। তিনি এ জন্য মিডিয়াকে অভিযুক্ত করেছেন। কিন্তু তিনি স্পষ্ট করেননি, কারা মিডিয়ার পক্ষ থেকে এ ধরনের অনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত। এমনকি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কোন সদস্য এ ধরনের অনৈতিককাণ্ডে জড়িত কিনা সে বিষয়ে মুখ খোলেননি। এদিকে পরীমনি, তার সহযোগী রাজ, দীপু, সবুজ, পিয়াসার সহযোগী জিসানকে ফের রিমান্ডে নেয়া হয়েছে। পৃথক পৃৃথক আদালত তাদের রিমান্ড আদেশ মঞ্জুর করেন। এর মধ্যে বনানী থানার মাদক মামলায় পরীমনিকে চারদিনের, তার সহযোগী রাজ ও সবুজকে ছয়দিনের, পিয়াসার সহযোগী মিশু হাসান ও জিসানকে দুই দিনের রিমান্ডে নেয়া হয়েছে। মঙ্গলবার ঢাকার একাধিক আদালতে হাজির করা হলে তারা সবাই নিজেদের নির্দোষ দাবি করে জামিন চান। আদালতে পরীমনিকে একনজর দেখতে কৌতূহলী জনতার ভিড় দেখা দেয়। তাদের সামনেই পরীমনি চিৎকার করে বলেন, ‘আমি নির্দোষ, আমাকে ফাঁসানো হয়েছে।’

বর্তমানে সিআইডিতে রিমান্ডে থাকা এসব আসামির স্বজনদের অভিযোগ, শুধু এক তরফা তাদেরই জাতির সামনে খারাপ হিসেবে উপস্থাপন করা হচ্ছে। যারা পরীমনি, পিয়াসা, মৌ’র আসরে নিয়মিত মাস্তি করেছে, মদ ও নারীতে বুঁদ হয়ে পড়ে থাকত- তাদের একজনকেও তো আটক বা আসামি করা হলো না। পিয়াসার এক নিকটাত্মীয় মঙ্গলবার দৈনিক জনকণ্ঠকে বলেন, তার বারিধারার বাসায় যেতেন সমাজের অনেক রাঘববোয়াল। তাদের নাম শুধু কয়েকটি মিডিয়ায় বিক্ষিপ্তভাবে প্রকাশ হওয়াতেই টনক নড়ে গেছে, তোলপাড় চলছে ঢাকার কর্পোরেট দুনিয়ায়, মুখ খুলতে বাধ্য হয়েছেন আইন শৃঙ্খলাবাহিনীর প্রভাবশালী কর্তারা। এখন যদি পিয়াসা, পরীমনি ও মৌ তাদের মুখোশ উন্মোচন করে দেয় তখন অবস্থাটা কেমন হবে?

এ বিষয়ে মঙ্গলবার রাজের এক ঘনিষ্ঠ সহযোগী আদালতে দাঁড়িয়ে বলতে থাকেন, একের পর এক শুধু সেলিব্রেটি নায়িকা, প্রযোজক ও মডেলদের গ্রেফতার করে মিডিয়ায় হুলস্থূল ফেলানো হচ্ছে। অথচ যেসব হর্তাকর্তা তাদের আসরে গিয়ে আতিথেয়তা গ্রহণ করেছেন, তাদের ধরা হচ্ছে না। তারা এতটাই প্রভাবশালী যে, উল্টো আইনশ্খৃলা বাহিনীকে প্রেস ডেকে বলতে হচ্ছে- তাদের ভয় দেখিয়ে চাঁদাবাজির হুমকি দেয়া হচ্ছে। যারা পরীমনি, পিয়াসার দরবারে গিয়ে মাস্তি করেছেন, তাদের তো ভয় থাকবেই। তাদের সঙ্গে ছবি থাকতেই পারে। তাতে ভীতসন্ত্রস্ত হওয়ার কি আছে। এতে কি প্রমাণিত হয় না, তারাও সমান অপরাধী বলেই এতটা আতঙ্কিত।

এদিকে একটি গোয়েন্দা সংস্থা সূত্রে জানা যায়, ঢাকার ব্যবসায়ী, শিল্পপতি ও কর্পোরেট জগতের যাদের নাম প্রাথমিক তদন্তে এসেছে, তারা খুবই প্রভাবশালী। তারা পুলিশ, ডিবি, সিআইডি ও মিডিয়া কন্ট্রোল করার মিশন নিয়ে মাঠে নেমেছেন। যে যেভাবে পারছেন, নিজ নিজ নেটওয়ার্ক থেকে তদ্বির করছেন। তাদের তদ্বিরের মুখেই পড়েছে তদন্তকারীর সংস্থাগুলো। গত কদিন ধরেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও চলছে এ নিয়ে সমালোচনার ঝড়। অধিকাংশই প্রশ্ন তুলেছেন, পরীমনি, পিয়াসা মদ ও পর্নোগ্রাফির দরুন গ্রেফতার হন, কিন্তু তাদের যারা তৈরি করেছেন, তাদের আসরে যারা ভোগাবিলাসে মত্ত থাকতেন, তাদের কেন আইনের আওতায় আনা হবে না।

নিউজের নামে চাঁদাবাজির হুমকি ॥ এদিকে মঙ্গলবারও ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম সুস্পষ্ট ভাষায় ব্যক্ত করেন, চিত্রনায়িকা পরীমনিসহ গ্রেফতার কথিত মডেলদের সঙ্গে সম্পর্ক ফাঁসের হুমকি দিয়ে চাঁদা দাবির ঘটনায় অনেকে ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে বাড়িতে থাকা বন্ধ করে দিয়েছেন। দুপুরে ডিএমপি সদর দফতরে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি। ডিএমপি কমিশনার বলেন, মডেলদের সঙ্গে সম্পর্ক ফাঁসের হুমকি দিয়ে চাঁদাবাজি করছে একটি চক্র। চক্রটি সমাজের বিশিষ্টজনদের কাছে ফোন করে চাঁদা দাবি করছে। এতে অনেকেই ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে বাড়িতে থাকা বন্ধ করে দিয়েছেন। পুলিশের কাছে তারা জানতে চাচ্ছেন, আমরা কী বাড়িতে থাকব। আমি বললাম কেন? তারা বলছেন, আমাকে তো ওমুক মিডিয়া থেকে ফোন করে বলেছে, পরীমনি নাকি রিমান্ডে আমার নাম বলেছে। অথবা পিয়াসা আমার নাম বলেছে! আমি তাকে বলেছি, ভাই আপনার বিরুদ্ধে অভিযোগটা কী? কোন মামলা হয়েছে? তখন তিনি বলেন, কখন কে-কি করে তা তো জানি না। একাধিক ব্যক্তি আমাদের কাছে এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে জানিয়েছেন, মডেল ইস্যুতে তাদের সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে এমন ব্যক্তিদের তালিকার কথা বলে তাদের কাছে চাঁদা চাওয়া হচ্ছে। তাদের বলা হচ্ছে, আপনি যদি এই পরিমাণ অর্থ না দেন, তাহলে আমাদের কাছে যে তথ্য আছে, তা দিয়ে নিউজ করে দেব। এসব নিউজ করে হয়তো তাদের সামাজিকভাবে হেনস্তা করা যাবে, কিন্তু আইনগতভাবে তারা কোন অপরাধ করেছেন বলে আমি মনে করি না, বলেন ডিএমপি কমিশনার।

যাদের ফোন দিয়ে চাঁদা চাওয়া হচ্ছে তারা মামলা করছেন না কেন- এমন প্রশ্নে কমিশনার বলেন, তারা সামাজিক মর্যাদার জায়গায় আছেন বলেই মামলা করতে চাচ্ছেন না। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যদি পরীমনি বলে আমাকে সিনেমার নায়িকা বানানোর কথা বলে ওমুক ব্যক্তি আমার সঙ্গে খারাপ আচরণ করেছে, সেটি একটি মামলার বিষয় হতে পারে। সেই ক্ষেত্রে ব্যবসায়ী আসামি হতে পারে অথবা ওই ব্যবসায়ী যদি বলে পরীমনি আমাকে ফাঁদে ফেলে আমার কাছ থেকে দুই কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। এমন কোন অভিযোগ কী পরীমনির পক্ষ থেকে করা হয়েছে? অথবা ব্যবসায়ীর পক্ষ থেকে পুলিশের কাছে এমন অভিযোগ করা হয়েছে? কোনটিই করা হয়নি। তো পুলিশ কেন তালিকা করবে? পুলিশের পক্ষ থেকে এমন কোন তালিকা তৈরি হচ্ছে না। সিআইডি থেকে সাংবাদিকদের বলা হচ্ছে, ব্ল্যাকমেলের বিষয়ে তারা বেশকিছু অভিযোগ পেয়েছে। এমন প্রশ্নে ডিএমপি কমিশনার বলেন, তারা যদি অভিযোগ পেয়ে থাকে তাহলে তাদের অনুরোধ করব থানায় মামলা করাক। মামলা তো সিআইডিতে হবে না, মামলা থানায় অথবা আদালতে হবে। মামলা হওয়ার পরে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম বলেন, মামলাটি সিআইডি তদন্ত করছে। আমি নিজেও সিআইডি প্রধানের সঙ্গে কথা বলেছি। সিআইডি প্রধান বলেছেন, এ ধরনের তালিকা তৈরি করা অথবা কাউকে আটক করার আইনগত কোন ভিত্তি নেই এবং এ ধরনের কোন কাজ পুলিশের কোন সংস্থা করছে না। কোন তালিকা তৈরি করা অথবা আটক করা হবে ধরনের কোন কাজ করছে না পুলিশ। তিনি বলেন, পরীমনির বাসায় যে মাদক পাওয়া গেছে, এক্ষেত্রে পরীমনি বলেছেন তার কাছে লাইসেন্স আছে। লাইসেন্স থাকলেও তার কাছে কতটুকু মদ ছিল, লাইসেন্স অনুযায়ী সে কতটুকু মদ নিতে পারেন, এসবের বৈধতা আছে কি-না এগুলো তদন্ত করে ওই মামলায় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

ডাকা হচ্ছে অনেককেই- সিআইডি ॥ সিআইডির প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ মহাপরিদর্শক ব্যারিস্টার মাহবুবুর রহমান বলেছেন, চিত্রনায়িকা পরীমনি, পিয়াসা ও মৌ’র মামলার বিষয়ে আমরা বেশ কয়েকজনকে ডেকেছি, আরও বিভিন্নজনকে ডাকব। তবে মিডিয়াতে আগেই তাদের নাম নিশ্চিত না হয়ে প্রচার করা উচিত না। এছাড়া পরীমনি এক পোশাকেই ১২২ ঘণ্টা রয়েছেন এটাও সত্যি নয়। মঙ্গলবার সিআইডির প্রধান কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।

তিনি বলেন, আমরা অভিযুক্ত সবার বাসায় অভিযান চালিয়েছি। আমরা ৩টা জিপ, একটা বিএমডব্লিউ, একটা মাজদা এবং একটা ফেরারি গাড়ি জব্দ করেছি। মোবাইল জব্দ করেছি। আমরা চেষ্টা করব নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে সব মামলার তদন্ত শেষ করতে। তবে অনলাইন, পত্রিকা ও সোস্যাল মিডিয়াতে এসবের সঙ্গে জড়িত অনেকের নাম এসেছে। এরকম খণ্ডচিত্র এলে অনেকের সম্মানহানি হয়। আমরা তদন্ত করছি, আমাদের সময় দেন, আমরাই তদন্ত শেষে সব জানিয়ে দেব।

এ সময় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ব্যারিস্টার মাহবুবুর রহমান বলেছেন, গ্রেফতারের সময় থেকে মঙ্গলবার আদালতে হাজির করা পর্যন্ত পরীমনি একই পোশাকে রয়েছেন- বিষয়টি সত্য নয়। মাদক আইনে করা মামলায় পরীমনিকে চারদিনের রিমান্ড শেষে মঙ্গলবার ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে তোলা হয়। রিমান্ড শুনানির দিন যে পোশাকে পরীমনিকে আদালতে হাজির করা হয়েছিল ঠিক একই পোশাকে মঙ্গলবার তাকে আদালতে হাজির করা হয়। ১২২ ঘণ্টা পরীমনির পোশাক পরিবর্তন না করাকে রাজনীতি বললেন রাষ্ট্রপক্ষের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) আব্দুল্লাহ আবু। রিমান্ড শুনানি চলাকালে কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে কাঁদতে দেখা যায় পরীমনিকে। এ সময় পরীমনির আইনজীবী মজিবুর রহমান বলেন- একজন নায়িকা ১২২ ঘণ্টা এক পোশাকে রয়েছেন। তিনি তো একজন নায়িকা। তার তো একটা লাইফস্টাইল রয়েছে।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটি ডিফেন্সের কথা। ডিফেন্স অনেক কিছুই বলতে পারে। আমরা পরীমনিকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। এক পোশাকের কথা সত্য নয়।

সিআইডি প্রধান বলেন, আটটি মামলা তদন্ত করছে সিআইডি। এ ঘটনায় আসামি রয়েছে ১০ জন। তাদের মধ্যে আমাদের কাছে আছে আটজন। রিমান্ড শেষ হলে আমরা বিস্তারিত জানাব। রিমান্ড শেষে আদালতে তাদের সোপর্দ করে আবারও রিমান্ডে আনা হয়েছে।

মডেলদের মাদকের বিষয়ে তদন্ত হচ্ছে, নাকি অন্য ইস্যু নিয়েও তদন্ত চলছে- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, তদন্তের ক্ষেত্রে আমাদের একটি সেট রুলস রয়েছে। আমরা সেটাকে ডব্লিউ ফাইভ বলে থাকি। পুলিশ রিপোর্ট তৈরির ক্ষেত্রে বিভিন্ন উত্তর আমাদের প্রস্তুত করতে হয়। মাদক ছাড়াও একাধিক বিষয় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। আমরা যেগুলো উদ্ধার করেছি, সেগুলো কোথা থেকে এলো, কীভাবে এলো, সোর্স কোথায় এগুলো আমাদের জানা প্রয়োজন। সম্পত্তির বিষয়েও তদন্ত করা হচ্ছে। ছয়টি গাড়ি জব্দের বিষয়ে তিনি বলেন, গাড়িগুলোর বিষয়ে বিআরটিএ’র কাছে জানতে চাওয়া হয়েছে। পরীমনির বাসা থেকে হ্যারিয়ার গাড়ি জব্দ করা হয়েছে। গাড়ির মালিক কারা, কীভাবে এসেছে এসব বিষয়ে জানতে পারব। গাড়িগুলোর একটি তালিকা আমাদের কাছে আছে সেটি পরবর্তীতে আপনাদের দিয়ে দেয়া হবে।

এ বিষয়ে সিআইডির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মিডিয়া) আজাদ রহমান বলেন, তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের মাধ্যম থেকে জেনেছি, পরীমনিকে গত ৬ আগস্ট সিআইডিতে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আনা হয়। এরপর পরীমনি একাধিকবার পোশাক পরিবর্তন করেছেন। এছাড়া তিনি একাধিক মাস্কও পরিবর্তন করেছেন।

পরীমনি, পিয়াসা, রাজ, সবুজ, মিশু ও জিসান ফের রিমান্ডে ॥ এদিকে পরীমনি, রাজ, পিয়াসার দুই সহযোগী জিসান ও মিশু হাসানকে ফের রিমান্ডে নেয়া হয়েছে। পৃথক পৃৃথক আদালত তাদের রিমান্ড আদেশ মঞ্জুর করেন। এর মধ্যে মাদক মামলায় পরীমনিকে আরও চারদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে আদালত। মাদক ও পর্নোগ্রাফি মামলায় প্রযোজক নজরুল ইসলাম রাজ ও সহযোগী সবুজ আলীকে ছয়দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। মাদক মামলায় দুই দিন, আর পর্নোগ্রাফি মামলায় চারদিন। মঙ্গলবার ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট দেবব্রত বিশ্বাস শুনানি শেষে এ আদেশ দেন। রাষ্ট্রপক্ষের প্রসিকিউটর আব্দুল্লাহ আবু চারদিনের রিমান্ড শেষে বনানী থানার মাদক মামলায় ফের তাদের পাঁচদিনের রিমান্ডের আবেদন করা হয়। এ সময় আসামিপক্ষের আইনজীবী রিমান্ড বাতিল করে জামিন আবেদন করেন। অপরদিকে রাষ্ট্রপক্ষ বিরোধিতা করেন। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে বিচারক রিমান্ডের এ আদেশ দেন। গত ৫ আগস্ট তাদের চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মামুনুর রশিদ। মঙ্গলবার রিমান্ড শেষে তাদের আদালতে হাজির করে সিআইডি।

এদিকে শুনানি শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন পরীমনির আইনজীবী মজিবুর রহমান। তিনি বলেন, আসামি পরীমনির বিরুদ্ধে শুধুমাত্র মাদক রাখার অভিযোগ উঠেছে। এছাডা আর কোন অভিযোগ তার বিরুদ্ধে নেই। এ অভিযোগে তাকে চার দিনের রিমান্ডে নেয়া হয়েছে। তারপরও মঙ্গলবার ফের তাকে রিমান্ডে নেয়ার কোন যৌক্তিকতা নেই। এই মাদক মামলার সুযোগে অন্য কোন স্বার্থ হাসিল হতে পারে না। পরীমনি এক দিনের চিত্রনায়িকা না। তার দীর্ঘদিনের ক্যারিয়ার নষ্ট করা হচ্ছে। এটা খুবই দুঃখজনক। মজিবুর রহমান বলেন, গ্রেফতারের পর থেকে ১২০ ঘণ্টা তিনি এক কাপড়ে রিমান্ডে রয়েছেন।

আমি নির্দোষ ॥ রিমান্ড শুনানিতে কাঠগড়ায় আনা হলে অঝোরে কাঁদতে দেখা যায় পরীমনিকে। এছাড়াও আদালত থেকে বের হওয়ার সময় তিনবার চিৎকার করেছেন এই চিত্রনায়িকা। চিৎকার করে তিনি বলেন, ‘আমি নির্দোষ, আমাকে ইচ্ছা করে ফাঁসানো হয়েছে। আমাকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে।’ এরপরই তাকে আদালতের গারদখানায় নিয়ে যাওয়া হয়। পরীমনিকে দেখতে মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় ঢাকার চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পৌঁছেন পরীমনির নানা শামসুল হক। দুপুরে রিমান্ড শুনানিতে কাঠগড়ায় আনা হলে অঝোরে কাঁদতে দেখা যায় পরীকে। এ সময় পরীকে দেখতে এজলাসে ভিড় করেন আদালতের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। আদালতের এক কর্মচারী পরীমনির ছবি তুলতে গেলে পুলিশ, আইনজীবী ও উপস্থিত অন্যদের মধ্যে বাগ্বিতণ্ডার ঘটনা ঘটে। কিছুক্ষণের মধ্যেই অবশ্য পরিস্থিতি শান্ত হয়।

রাজ মেয়েদের বাসায় ডেকে অশ্লীল কাজ করাতেন ॥ একই দিন আদালতে জানানো হয়, রাজ মেয়েদের বাসায় নিয়ে অশ্লীল কাজ করাতেন, সেগুলোর ভিডিও ক্লিপ ধারণ করতেন। যা সমাজের ঘৃণিত একটি কাজ। ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট দেবব্রত বিশ্বাসের আদালতে রিমান্ড শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষের পাবলিক প্রসিকিউটর আবদুল্লাহ আবু এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, আসামি রাজের অপকর্মের সঙ্গে আরও কারা জড়িত আছেন, কেন ভিডিও ক্লিপ ধারণ করতেন বিষয়গুলোর সুষ্ঠু তদন্তের প্রযোজনে তাকে রিমান্ডে নেয়া প্রয়োজন।

অপরদিকে আসামিপক্ষের আইনজীবী এসএম আক্তারুজ্জামান হিমেল রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিনের আবেদন করেন। তিনি শুনানিতে বলেন, পর্নোগ্রাফি মামলায় কিছু মালামাল জব্দ করা হয়েছে।

পিয়াসার সহযোগী জিসান দুদিনের রিমান্ডে ॥ এছাড়া মডেল পিয়াসার সহযোগী জিসানের বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইনে করা মামলায় দুদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। মঙ্গলবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট দেবব্রত বিশ্বাস শুনানি শেষে রিমান্ডের এই আদেশ দেন। এ সময় আসামিপক্ষের আইনজীবীরা রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিনের আবেদন করেন। রাষ্ট্রপক্ষের পাবলিক প্রসিকিউটর আবদুল্লাহ আবু বিরোধিতা করেন। উভযপক্ষের শুনানি শেষে আদালত দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

পরীমনি কাণ্ডে সাকলায়েনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে ॥ ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম বলেছেন, ঢাকাই চলচ্চিত্র নায়িকা পরীমনি কাণ্ডে পুলিশ কর্মকর্তা হিসেবে এডিসি গোলাম সাকলায়েন শিথিলের ভূমিকায় পুলিশ বাহিনী বিব্রত। তাকে গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি) থেকে বদলি করা হয়েছে। তদন্ত করে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। মঙ্গলবার দুপুরে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা জানান।

গাড়িটি ট্রায়ালে নিয়েছিলেন পরীমনি ॥ চিত্রনায়িকা পরীমনির ৩ কোটি টাকার যে গাড়িটি উপহার পেয়েছেন বলে গুঞ্জন ছড়িয়েছে, তা সত্য নয়। যে গাড়িটি নিয়ে এত কথা হচ্ছে সেটি আদতে তার কাছে বিক্রিই হয়নি। তিনি নিজেই কেনার কথা বলে টেস্ট ড্রাইভ বা ট্রায়াল দিতে একদিনের জন্য শোরুম থেকে নিয়ে গিয়েছিলেন। পরবর্তী সময়ে সেটি না কিনে আবার শোরুমে ফিরিয়ে দিয়েছেন। এমনকি সেই গাড়ি এখনও রাজধানীর গুলশানের সেই শোরুমেই আছে।

মঙ্গলবার সকালে গাড়ি বিক্রেতা প্রতিষ্ঠান অটো মিউজিয়ামের কর্ণধার হাবিব উল্লাহ ডন এই তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেন, গতবছর আমার গুলশানের শোরুমে পরীমনি আসেন। তিনি বিভিন্ন গাড়ি দেখেন, ফিয়াট অটোমোবাইলস-এর ‘মাসেরাতি’ ব্র্যান্ডের গাড়িটি তার পছন্দ হয়। আমি তখন বিদেশে, গাড়িটি নেয়ার সময় আমার স্টাফরা তাকে জিজ্ঞাসা করেছিল- আপনি ক্যাশে নেবেন, নাকি ব্যাংক লোনে ? পরীমনি তখন স্টাফদের পরে জানাবেন বলে গাড়িটি টেস্ট ড্রাইভে নিয়ে যান। আমার শো রুমের স্টাফ আমাকে বিষয়টি জানায়।

সিটি ব্যাংকের জিডি ॥ চিত্রনায়িকা পরীমনি ইস্যুতে রাজধানীর গুলশান থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছে সিটি ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। গুলশান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল হাসান জনকণ্ঠকে জানান, সোমবার রাতে সিটি ব্যাংকের হেড অব কোর্ট অপারেশন গাজী এম শওকত হাসান জিডিটি করেন। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, সম্প্রতি কয়েকটি গণমাধ্যমে এসেছে পরীমনিকে সাড়ে ৩ কোটি টাকার বিলাসবহুল গাড়ি উপহার দেয়া ব্যক্তি সিটি ব্যাংক লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মাশরুর আরেফিন। সোমবার এক ফেসবুক পোস্টে মাশরুফ আরেফিন বলেছেন, পরীমনিকে তিনি কখনও দেখেননি। এবার এই ঘটনায় ওই রাতেই ঢাকার গুলশান থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছে সিটি ব্যাংক।

s
এই বিভাগের আরো সংবাদ
© All rights reserved © 2021 deshmediabd.com