1. admin@deshmediabd.info : admin :
  2. support@bdsoftinc.info : adminr :
  3. jeradmin@deshmediabd.com : :
রবিবার, ১২ জানুয়ারী ২০২৫, ১১:৩৩ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ সংবাদঃ
আতঙ্ক হতাশায় পুলিশ ► নানামুখী টানাপোড়েন ও ট্রমা কাটিয়ে জনগণের বন্ধু হওয়ার চেষ্টা ► যেখানে অপরাধ সেখানে উপস্থিতি জানান দিতে হবে, আস্থার জায়গা তৈরি করতে হবে : বিশেষজ্ঞ Fire breaks out at Tejgaon truck stand ‘Brutal’ tram collision in France’s Strasbourg injures dozens সাভারে অ্যাম্বুলেন্সে পেছন থেকে দুটি বাসের ধাক্কা, পুড়ে নিহত চতুর্মুখী সংকটে বৃহৎ শিল্প আতঙ্ক ও উদ্বেগে ব্যবসায়ীরা ♦ গ্যাসের দাম বাড়ানোর উদ্যোগ শিল্পবাণিজ্যে মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা ♦ নতুন উদ্যোক্তারা বাজারে টিকতে পারবেন না ♦ কষ্ট বাড়বে সাধারণ মানুষের ♦ বাড়বে মূল্যস্ফীতি লস অ্যাঞ্জেলসে দাবানলে নিহত ২ Whole streets burn as fires rage around Los Angeles দেশে যে কোনো সময় ৭ মাত্রার ভূমিকম্পের শঙ্কা বড় ধরনের ভূমিকম্পের ঝুঁকিতে বাংলাদেশ

খামারি থেকে ‘প্রতারক’, ২৯ দিনে সরান গ্রাহকের ৪৭ কোটি টাকা

রিপোর্টার
  • আপডেট : মঙ্গলবার, ৩০ নভেম্বর, ২০২১
  • ১০১ বার দেখা হয়েছে

জুয়েল রানা, ২৩ পেরোনো তরুণ। সিরাজগঞ্জের বহুলী ইউনিয়নের বেড়াবাড়ী গ্রামে বেড়ে ওঠা। লেখাপড়ায় ছিল না তেমন মনোযোগ। ২০১৭ সালে কী মনে করে যেন জুয়েল অংশ নেন এটুআই প্রকল্পের লার্নিং অ্যান্ড আর্নিং প্রশিক্ষণে। সেই প্রশিক্ষণ কাজে লাগিয়ে গবাদি পশু ও মাছের খামার করে বসেন। তাতে সফলতা ধরা দেয়নি খুব একটা। পরে খামারের ভুবন ছেড়ে জুয়েল নাম লেখান ই-কমার্স ব্যবসায়।

অনলাইনে সিরাজগঞ্জশপ ডটকম নামের একটি প্রতিষ্ঠান খুলে রাতারাতি জুয়েলের হাতে আসে ‘আলাদিনের চেরাগ’! প্রতারণার মাধ্যমে কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা কামিয়ে দাপিয়ে বেড়িয়েছেন কোটি টাকার গাড়িতে। কিনেছেন তিনটি বাড়ি ও জমি।

গত ৩ আগস্ট কম্পানি হিসেবে সিরাজগঞ্জশপ নিবন্ধিত হয়। অস্বাভাবিক লেনদেন ও প্রতারণার অভিযোগ ওঠায় গত ৩১ আগস্ট থেকে বন্ধ করা হয় প্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রম। এই ২৯ দিনেই মোবাইল ব্যাংকিং কম্পানি ‘নগদে’র হিসাব থেকে ৪৭ কোটি ৪৩ লাখ ১৮ হাজার ৯৬৩ টাকা সরিয়ে নেয় সিরাজগঞ্জশপ। কিছু গ্রাহকের আইডিতে রিফান্ডের নামে টাকা স্থানান্তর করে কৌশলে তুলে নেন জুয়েল রানা। এই অভিযোগ ওঠার পরই অফিস গুটিয়ে পালিয়েছেন তিনি। প্রতিষ্ঠানটির ছয়টি ব্যাংক হিসাবে এক বছরে ৩০০ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে। অথচ এখন আছে মাত্র এক লাখ টাকা।

ই-কমার্সের নামে প্রতারণার অভিযোগে সিরাজগঞ্জশপ নিয়ে অনুসন্ধানে নেমে এসব তথ্য পেয়েছে অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। শিগগিরই এই প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং মামলা করা হবে বলে জানা গেছে।

অনুসন্ধানকারীরা বলছেন, হিসাব থেকে ভুয়া রিফান্ডে ৪৭ কোটি টাকা সরানোর সদুত্তর না পেয়ে গত ১৩ সেপ্টেম্বর বনানী থানায় মামলা করেছে ‘নগদ’ কর্তৃপক্ষ। বিভিন্ন অজুহাতে ব্যাংক হিসাব থেকেও ১২ কোটি টাকা সরানোর প্রাথমিক তথ্য পেয়েছে অনুসন্ধানদল। কোনো গ্রাহক মামলা না করায় নগদের মামলা ও লেনদেনের তথ্যে চলছে অনুসন্ধান। পলাতক জুয়েলকেও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

এদিকে ই-কমার্সের নামে প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে এমন ৩৪ প্রতিষ্ঠান ঘিরে পুলিশের তদন্ত চলছে। এর মধ্যে ১৫টির বিরুদ্ধে প্রতারণা ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে ৪১টি মামলা করা হয়েছে। অনুসন্ধান শেষে পাঁচটি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং মামলা করেছে সিআইডি। বাকি ২৯টি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং মামলা করতে অনুসন্ধান চলছে। এর প্রথম দিকেই আছে সিরাজগঞ্জশপের নাম।

গত বৃহস্পতিবার সিআইডির আর্থিক অপরাধ শাখার বিশেষ পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবির বলেন, সিরাজগঞ্জশপের বিষয়ে অনুসন্ধান চলছে। অনুসন্ধান শেষ হলে মানি লন্ডারিং মামলা করা হবে। তদন্ত শেষ না হলে সুনির্দিষ্ট কিছু জানানো সম্ভব নয়।

যেভাবে ওঠে অভিযোগ : অনুসন্ধানকারী ও স্থানীয় সূত্র জানায়, প্রায় দুই বছর আগে সিরাজগঞ্জ শহরের এম এ মতিন সড়ক ও কাঠেরপুল এলাকায় দুটি অফিস নিয়ে বিশাল ছাড়ের বিজ্ঞাপনে ব্যবসা শুরু করে সিরাজগঞ্জশপ। গত ১৪ মার্চ নগদের ‘কেওয়াইসি’ ফরম পূরণ করে মার্চেন্ট হিসাব খোলে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া জুয়েলের ব্যক্তিগত ছয়টি এবং প্রতিষ্ঠানের নামে ছয়টি হিসাবে হয় লেনদেন। আগস্টে অভিযোগ ওঠে, গ্রাহকদের লক্ষাধিক অর্ডারে শতকোটি টাকা নিয়ে পণ্য না দিয়ে ঘোরাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে অনেক গ্রাহক অভিযোগ তুললেও জেলা থেকে পরিচালিত প্রতিষ্ঠানটি শুরুতে নজরদারির বাইরেই ছিল।

ঢাকার বনানী থানায় করা নগদের মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, গত ৩০ আগস্ট সিরাজগঞ্জ ডটকমের ‘রিফান্ড রিকোয়েস্ট’-এর মাধ্যমে অস্বাভাবিক লেনদেন নগদের কাছে ধরা পড়ে। একই পরিমাণ টাকা একই হিসাব নম্বরে বারবার দেওয়ার জন্য রিকোয়েস্ট (অনুরোধ) করা হচ্ছিল। অদ্ভুত বিষয় হলো, সফলভাবে পণ্য ডেলিভারি হয়ে গেছে, এমন অর্ডারের বিপরীতেও রিফান্ড রিকোয়েস্ট আসছিল। অর্ডারেও ছিল গরমিল। রিফান্ড রিকোয়েস্ট গভীর রাতে ছিল বেশি। এসব কারণে নগদের সন্দেহ হয় যে কারসাজি করে গ্রাহকদের টাকা তুলে নিচ্ছে সংশ্লিষ্ট লোকজন।

মামলার বাদী নগদের সিনিয়র এক্সিকিউটিভ তৌহিদুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘মামলার কোনো অগ্রগতি সম্পর্কে আমরা এখনো জানি না।’

বনানী থানার মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই রাশেদুজ্জামান বলেন, ‘আমি আসামিকে খুঁজে পাইনি। মামলার পর থেকে ফোন বন্ধ করে সে গাঢাকা দিয়েছে।’

খামার থেকে প্রতারণায় : ২০১৭ সালে জুয়েল সিরাজগঞ্জ অ্যাগ্রো লিমিটেড ও সিরাজগঞ্জ ফিশ অ্যান্ড হ্যাচারি নামের দুটি খামার গড়ে তোলেন। ২০২০ সাল থেকে সিরাজগঞ্জশপ ডটকম ও ই-সেলার বাজার লিমিটেড নামের দুটি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানও চালু করেন। কিছুদিন খামারের মাংস, মাছ ও দুধ অনলাইনে বিক্রি করা হয়। এরপর তিনি বাইরের পণ্য বিক্রির অর্ডার নিতে থাকেন। তাঁর তিন খামারে ৩০০ ষাঁড় প্রতিপালন এবং বায়োফ্লেক ট্যাংকে প্রায় ১২৫ টন শিং ও কই মাছ চাষ করা হয়। সিরাজগঞ্জ ও তাড়াশে জমিসহ তিনটি বাড়ি কিনেছেন জুয়েল। তাড়াশের গুল্টা বাজারে কোটি টাকা দামের বাড়ি ও মার্কেট নির্মাণ শুরু করেন তিনি। অভিযোগ উঠলেও কোটি টাকার গাড়িতে ঘুরে ফিরছিলেন জুয়েল। মামলা করার পর থেকেই তিনি হাওয়া। দুটি অফিস তালাবদ্ধ। সেখানে তল্লাশি করে প্রয়োজনীয় নথিপত্র ও আসবাব পাননি তদন্তকারীরা। কম্পানির ডেলিভারির গাড়িগুলোরও হদিস নেই। তিন খামারে উৎপাদন বন্ধ। কয়েকজন স্বজনকেও জিজ্ঞাসাবাদ করেছে সিআইডি।

জুয়েলের বড় ভাই আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘জুয়েল গ্রাহকের ১২৫ কোটি টাকা ফেরত দিয়েছে শুনেছি। নগদ অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ না করলে বাকি আট থেকে ১০ কোটি টাকাও হয়তো ফেরত দিত।’

s
এই বিভাগের আরো সংবাদ
© All rights reserved © 2021 deshmediabd.com