1. admin@deshmediabd.info : admin :
  2. support@bdsoftinc.info : adminr :
  3. jeradmin@deshmediabd.com : :
সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:৪৯ অপরাহ্ন
সর্বশেষ সংবাদঃ
ব্রাজিলে বাস দুর্ঘটনায় ৩৮ জন নিহত ডলারের বাজার আবার অস্থির Govt grants 10-year tax holiday for renewable energy firms Mobile surveillance used in pinpointing victims’ location: Commission গ্যাস সংকটে উৎপাদন নেমে অর্ধেকে, কয়েক শ কারখানা বন্ধ ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ইসির পরিকল্পনায় ডিসেম্বর ২০২৫ ভোটার তালিকায় ত্রুটি নেই দাবি ইসির সরকারের এক পক্ষ ২০২৬-এর এপ্রিলে, বিএনপিসহ সমমনারা চায় ২০২৫-এর জুনের মধ্যে ভোট জুলাই গণ-অভ্যুত্থান ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শহীদ ও আহত ব্যক্তিদের প্রথম ধাপের খসড়া তালিকা প্রকাশ ২০২৫-এর মধ্যেই নির্বাচন চায় বিএনপি ও বিভিন্ন দল লাইসেন্স ও ট্যাক্সের আওতায় আসছে ব্যাটারিচালিত রিকশা ফের আন্দোলনে নামছে বিএনপি দ্রুত সুস্পষ্ট রোডম্যাপ দাবি, চলছে নির্বাচনি প্রস্তুতি

কাবা শরিফের বিশেষ ৩ বৈশিষ্ট্য কী?

রিপোর্টার
  • আপডেট : বুধবার, ২৯ ডিসেম্বর, ২০২১
  • ১৫৯ বার দেখা হয়েছে

কাবা শরিফ ইসলামের অন্যতম নিদর্শন। সেখানে আরও অনেক নিদর্শন আছে। পবিত্র এ স্থানে যাওয়ার ব্যাপারে যেমন দিকনির্দেশনা আছে আবার না যাওয়ারও মন্দ পরিণাম আছে। এ পবিত্র ঘরটিকে মহান আল্লাহ সবার জন্য নিরাপত্তার স্থান হিসেবেও নির্ধারণ করেছেন। মহান আল্লাহ বলেন-

فِیۡهِ اٰیٰتٌۢ بَیِّنٰتٌ مَّقَامُ اِبۡرٰهِیۡمَ وَ مَنۡ دَخَلَهٗ کَانَ اٰمِنًا ؕ وَ لِلّٰهِ عَلَی النَّاسِ حِجُّ الۡبَیۡتِ مَنِ اسۡتَطَاعَ اِلَیۡهِ سَبِیۡلًا ؕ وَ مَنۡ کَفَرَ فَاِنَّ اللّٰهَ غَنِیٌّ عَنِ الۡعٰلَمِیۡنَ

‘তাতে বহু সুস্পষ্ট নিদর্শন রয়েছে, (যেমন) মাক্বামে ইবরাহিম (পাথরের উপর ইবরাহিম আলাইহিস সালামের পদচিহ্ন)। যে কেউ সেখানে প্রবেশ করে, সে নিরাপত্তা লাভ করে। মানুষের মধ্যে যার সেখানে যাওয়ার সামর্থ্য আছে, আল্লাহর উদ্দেশ্যে ঐ ঘরের হজ করা তার (পক্ষে) অবশ্যক কর্তব্য। আর যে অস্বীকার করবে (সে জেনে রাখুক যে), আল্লাহ জগতের প্রতি অমুখাপেক্ষী।’ (সুরা আল-ইমরান : আয়াত ৯৭)

আলোচ্য আয়াতে কারিমায় কাবা শরিফের তিনটি বৈশিষ্ট্য ঘোষণা করা হয়েছে। তাতে ওঠে এসেছে কাবা শরিফ প্রাঙ্গনে অবস্থিত বিশেষ স্থানের কথাসহ তাতে অবস্থানকারীদের নিরাপত্তার কথা এবং সামর্থ্যবানদের হজে যাওয়ার আবশ্যকতা ঘোষণা করা হয়েছে। আবার সামর্থ্য থাকার পরও যারা হজ করবে না তাদের প্রতিও ইঙ্গিত এসেছে।

কাবা শরিফের নিদর্শন

কোরআনুল কারিমের এ আয়াতে মহান আল্লাহ তাআলা কাবা শরিফের তিনটি বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করেছেন। তাহলো-

প্রথমত : এতে আল্লাহর কুদরতের নিদর্শনাবলীর মধ্যে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি নিদর্শন রয়েছে; আর তা হচ্ছে- মাকামে ইবরাহিম।

দ্বিতীয়ত : যে ব্যক্তি কাবা শরিফে প্রবেশ করে, সে নিরাপদ ও বিপদমুক্ত হয়ে যায়; তাকে হত্যা করা বৈধ নয়। কাবা শরিফ নির্মিত হওয়ার দিন থেকে এখন পর্যন্ত আল্লাহ তাআলা এর বরকতে শত্রুর আক্রমণ থেকে মক্কাবাসীদের নিরাপদে রেখেছেন। এমন কি বাদশাহ আবরাহা যখন বিরাট হস্তীবাহিনীসহ কাবা ঘরের প্রতি ধাবিত হয়েছিল। সে সময়ও মহান আল্লাহ তাঁর কুদরতে ঝাঁকে ঝাঁকে পাখি পাঠিয়ে তাদের নিশ্চিহ্ন করে দেন। মক্কার হারামে প্রবেশকারী মানুষ, এমনকি জীবজন্তু পর্যন্ত বিপদমুক্ত হয়ে যায়।

তৃতীয়ত : সারা দুনিয়ার মুসলমানের জন্য কাবা শরিফে হজ পালন করা ফরজ। যদি এ ঘর তথা মক্কায় পৌছার শক্তি ও সামর্থ্য থাকে। ‘যার সেখানে যাওয়ার সামর্থ্য আছে’ –এর মর্মার্থ হলো- দুনিয়ার সব প্রান্ত থেকে পবিত্র নগরী মক্কায় যাওয়ার থাকার আবার সেখান থেকে ফিরে আসার সম্পূর্ণ খরচ পূরণ করার মতো যথেষ্ট পাথেয় যার কাছে আছে; জীবনে একবার তার জন্য সেখানে যাওয়া আবশ্যক কর্তব্য তথা ফরজ।

এ ঘোষণা মধ্যে রাস্তার ও জান-মালের নিরাপত্তা এবং শারীরিক সুস্থতার সামর্থ্যের বিষয়টিও অন্তর্ভুক্ত। আবার নারীর জন্য মাহরাম (স্বামী অথবা যার সঙ্গে তার বিবাহ চিরতরে হারাম এমন কোন লোক) থাকাও জরুরী। (ফাতহুল কাদির)

এই আয়াতটি প্রত্যেক সামর্থ্যবান ব্যক্তির জন্য হজ ফরজ হওয়ার দলিল। আর হাদিস দ্বারা এ কথা পরিষ্কার হয়ে যায় যে, হজ জীবনে একবারই ফরজ। (ইবনে কাছির)

যারা হজ না করে

সামর্থ্য থাকার পরও যারা হজ না করে কোরআনের এ আয়াতের শেষাংশের পরিভাষায় তাকে ‘কুফরি বা অস্বীকার বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে। এ ঘোষণা থেকে হজ ফরজ হওয়ার বিষয়টি আরও সুস্পষ্ট হয়ে যায়। এতে হজ ফরজ সম্পর্কে আর কোনো সন্দেহের অবকাশ থাকে না। তাই বহু হাদিসেও সাহাবিদের উক্তিতে সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও যে হজ্জ করে না, তার ব্যাপারে কঠোর ধমক এসেছে।’ (ইবনে কাসির)

এসব বিষয় তুলে ধরেই মহান আল্লাহ ঘোষণা করেন-

‘তাতে অনেক সুস্পষ্ট নিদর্শন আছে, যেমন মাকামে ইবরাহিম। আর যে কেউ সেখানে প্রবেশ করে সে নিরাপদ। আর মানুষের মধ্যে যার সেখানে যাওয়ার সামর্থ্য আছে, আল্লাহর উদ্দেশ্যে ঐ ঘরের হজ করা তার জন্য অবশ্যক কর্তব্য। আর যে কেউ কুফরি করলো; সে জেনে রাখুক! নিশ্চয়ই আল্লাহ সৃষ্টিজগতের মুখাপেক্ষী নন।’

মাকামে ইবরাহিম

যখন কোরআনে মাকামে ইবরাহিমে নামাজ আদায় করার আদেশ নাজিল হয় তখন কাবা শরিফ তওয়াফকারীদের সুবিধার্থে পাথরটি সেখান থেকে সরিয়ে কাবা শরিফের সামনে সামান্য দূরে জমজম কুপের কাছে স্থাপন করা হয়।

বর্তমানে মাকামে ইবরাহিমকে সরিয়ে নিয়ে এটিকে কাঁচ দ্বারা বেষ্টন করে সংরক্ষণ করে দেওয়া হয়েছে। হজ-ওমরায় অংশগ্রহণকারীদের জন্য তাওয়াফ করার পর এর পাশে দাঁড়িয়ে নামাজ পড়া উত্তম। শাব্দিক অর্থের দিক থেকে মাকামে ইবরাহিম সমগ্র মসজিদে হারামকেও বুঝায়। এ কারণেই ফিকহবিদগণ বলেন- মসজিদে হারামের যে কোনো স্থানে তওয়াফ পরবর্তী নামাজ পড়ে নিলেই তা আদায় হয়ে যাবে।

কাবা শরিফে নিরাপত্তা

কাবা শরিফের দ্বিতীয় বৈশিষ্ট্য বর্ণনা প্রসঙ্গে বলা হয়েছে যে, যে ব্যক্তি এতে প্রবেশ করে, সে নিরাপদ হয়ে যায়। এ নিরাপত্তা মুলত সৃষ্টিগতভাবে। আল্লাহ তাআলা সৃষ্টিগতভাবেই প্রত্যেক জাতি ও সম্প্রদায়ের অন্তরে কাবা ঘরের প্রতি সম্মান ও শ্রদ্ধাবোধ নিহিত রেখেছেন।

অজ্ঞতার যুগের আরব ও তাদের বিভিন্ন গোত্র অসংখ্য পাপাচারে লিপ্ত থাকা সত্বেও তারা কাবা ঘরের সম্মান রক্ষার জন্য প্রাণ উৎসর্গ করতেও কুণ্ঠিত ছিল না। হারামের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করতে গিয়ে তারা কাবা শরিফ প্রাঙ্গনে কারো পিতার হত্যাকারীকে দেখেও কিছুই বলত না।

উল্লেখ্য, মক্কা বিজয়ের সময় আল্লাহর পক্ষ থেকে হারামের অভ্যন্তরে কিছুক্ষণ যুদ্ধের অনুমতি দেয়া হয়েছিল। এর উদ্দেশ্য ছিল কাবা শরিফকে পবিত্র করা। বিজয়ের পর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঘোষণা করেন যে, এ অনুমতি কাবা ঘরকে পবিত্রকরণের উদ্দেশ্যে কয়েক ঘন্টার জন্যই ছিল। এরপর আগের ন্যায় চিরকালের জন্যে কাবা শরিফে অভ্যন্তরে যুদ্ধ-বিগ্রহ নিষিদ্ধ হয়ে গেছে। তিনি আরও বলেন, ‘আমার আগে কারো জন্য হারামের অভ্যন্তরে যুদ্ধ করা হালাল ছিল না, আমার পরেও কারো জন্য হালাল নয়। আমাকেও মাত্র কয়েক ঘন্টার জন্যে অনুমতি দেয়া হয়েছিল, পরে আবার হারাম করে দেয়া হয়েছে।’ (বুখারি, মুসলিম)

হজ ফরজ

আয়াতে কাবা শরিফের তৃতীয় বৈশিষ্ট্যের বর্ণনা প্রসঙ্গে বলা হয়েছে যে, আল্লাহ তাআলা মানব জাতির জন্য শর্তসাপেক্ষে কাবা ঘরের হজ ফরজ করেছেন। শর্ত এই যে- ‘সে পর্যন্ত পৌছার সামর্থ্য থাকতে হবে।’

সামর্থ্যের ব্যাখ্যা প্রসঙ্গে বলা হয়েছে- যেসব ব্যক্তির হাতে সাংসারিক প্রয়োজনের অতিরিক্ত এ পরিমাণ অর্থ থাকতে হবে, যা দ্বারা সে কাবা ঘর পর্যন্ত যাতায়াত ও সেখানে অবস্থানের ব্যয়ভার বহন করতে সক্ষম হয়। এছাড়া ঘরে ফিরে আসা পর্যন্ত পরিবার-পরিজনের ভরণ-পোষণেরও ব্যবস্থা থাকতে হবে। দৈহিক দিক থেকে হাত পা ও চোখ কর্মক্ষম হতে হবে। কারণ, যাদের এসব অঙ্গ বিকল, তাদের পক্ষে স্বীয় বাড়ী ঘরে চলাফেরাই দুস্কর। এমতাবস্থায় সেখানে যাওয়া ও হজের অনুষ্ঠানাদি পালন করা তার পক্ষে কিরূপে সম্ভব হবে?

আবার নারীদের জন্য হজ করতে হলে স্বামী বা মাহরাম আবশ্যক। মাহরাম না থাকলে ইসলামি শরিয়তে নারীদের হজ বৈধ নয়। তাই নারীদের সামর্থ্য তখনই হবে, যখন তার সঙ্গে কোনো মাহরাম পুরুষ হজ থাকবে; নিজ খরচে করুক অথবা নারী তার খরচ বহন করুক। এভাবে কাবা শরিফে পৌঁছার জন্য রাস্তা নিরাপদ হওয়াও সামর্থ্যের একটি অংশ। যদি রাস্তা বিপজ্জনক হয় এবং জানমালের ক্ষতির প্রবল আশঙ্কা থাকে, তবে হজের সামর্থ্য নাই বলে মনে করা হবে। হাদিসে এসেছে-

হজরত ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহুমা বলেন, আয়াতে সামর্থ্য বলতে, বান্দার শারীরিক সুস্থতা এবং নিজের উপর কোনো প্রকার কমতি না করে পাথেয় ও বাহনের খরচ থাকা বুঝায়।’ (তাবারি)

পরিশেষে আয়াতে কুফর বলতে হজরত ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, আয়াতে কুফর বলতে বোঝানো হয়েছে এমন ব্যক্তির কাজকে; যে হজ করাকে নেককাজ হিসেবে মেনে নিল না আর হজ ত্যাগ করাকে গোনাহের কাজ মনে করলো না। (তাবারি)

কাবা শরিফ মুসলিম উম্মাহর অন্যতম ঐতিহাসিক নিদর্শন ও ইবাদতের স্থান। পবিত্র এ স্থানের ফরজ হজ আদায়সহ সব নিদর্শন জেয়ারত হোক সব মুমিন মুসলমানের নিরাপদ ও সাওয়াবের কাজ। আল্লাহ তাআলা সবাইকে কাবা ঘরে ইবাদত-বন্দেগি ও হজ-ওমরাহ করার তাওফিক দিন। আমিন।

s
এই বিভাগের আরো সংবাদ
© All rights reserved © 2021 deshmediabd.com