“সংঘাতময় পরিস্থিতিতে যৌন সহিংসতা প্রতিরোধে যদি সংশ্লিষ্টদেশ এগিয়ে না আসে তবে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় বিশেষ করে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদকেই দায়িত্ব নিতে হবে”-১৬ এপ্রিল নিরাপত্তা পরিষদে ‘নারীর ক্ষমতায়ন, লিঙ্গ সমতা ও ন্যায়বিচার পাওয়ার মাধ্যমে সংঘাতময় পরিস্থিতিতে যৌন সহিংসতা প্রতিরোধ বিষয়ক এক উন্মুক্ত বিতর্কে অংশ নিয়ে একথা বলেন জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের উপস্থায়ী প্রতিনিধি তারেক মোঃ আরিফুল ইসলাম।
নিরাপত্তা পরিষদের চলতি এপ্রিল মাসের সভাপতি পেরু এই উন্মুক্ত বিতর্কের আয়োজন করে। অনুষ্ঠানটিতে ‘সংঘাতময় পরিস্থিতিতে যৌন সহিংসতা’ বিষয়ক জাতিসংঘ মহাসচিবের বিশেষ প্রতিনিধি প্রমিলা প্যাটেন এবং ‘নারী, শান্তি ও নিরাপত্তা’ বিষয়ক এনজিও ওয়ার্কিং গ্রুপের পক্ষে রোহিঙ্গা প্রতিনিধি রাজিয়া সুলতানা বক্তব্য রাখেন। সুলতানা জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের নারী ও মেয়েদের চ্যালেঞ্জ এবং সুরক্ষার প্রয়োজনীয়তার বিষয়টি তার বক্তব্যে তুলে ধরেন।
উপ-স্থায়ী প্রতিনিধি তার বক্তব্যে বাংলাদেশে আশ্রয়গ্রহণকারী যৌন সহিংসতার শিকার বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা নারীদের যাদের একটি বড় অংশ গর্ভবতী, তাদের কথা এবং প্রজনন স্বাস্থ্যসহ অন্যান্য শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যগত বিষয়ের প্রতি বিশেষ গুরুত্ব প্রদানের কথা উল্লেখ করেন। নির্যাতিত এসকল নারী ও মেয়েরা যাতে তাদের জীবন ও ভবিষ্যৎ সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নিতে পারে সে বিষয়ে তাদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য তিনি কমিউনিটি নেতৃবৃন্দ এবং সেবাদানকারীদের ভূমিকার প্রশংসা করেন।
বাংলাদেশের প্রতিনিধি আরো বলেন অতিরিক্ত সুরক্ষার বিষয়টি নিশ্চিত না হলে এ জাতীয় ঘৃণিত ঘটনা বন্ধ হবে না এবং মর্যাদাসহ নিরাপদে ও নিরাপত্তার সাথে নিজ ভূমিতে বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর প্রত্যাবর্তন কোন আশার আলো দেখবে না। বাংলাদেশে আশ্রিত সহিংসতার শিকার এসকল রোহিঙ্গা নারী ও মেয়েদের জন্য বাংলাদেশ সরকার সকল পক্ষের সাথে পরামর্শ করে একটি জাতীয় কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করতে যাচ্ছে মর্মে তিনি জানান।
সংঘাত সংশ্লিষ্ট যৌন সহিংসতার ওপর মহাসচিবের রিপোর্টের সুপারিশমালাকে ভিত্তি ধরে আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তার প্রতি হুমকি সৃষ্টিকারী ‘সংঘাতময় পরিস্থিতিতে যৌন সহিংসতা’র বিষয়ে সুদৃঢ় পদক্ষেপ নিতে নিরাপত্তা পরিষদের প্রতি আহ্বান জানান বাংলাদেশের প্রতিনিধি।
অনুষ্ঠানে নিরাপত্তা পরিষদের ১৫টি সদস্য দেশসহ প্রায় ৭০টি দেশের প্রতিনিধিগণ বক্তব্য রাখেন।