1. admin@deshmediabd.info : admin :
  2. support@bdsoftinc.info : adminr :
  3. jeradmin@deshmediabd.com : :
বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:১৪ অপরাহ্ন
সর্বশেষ সংবাদঃ
সচিবালয়ে আগুন: ৭ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন প্রযুক্তির নতুন দিগন্ত নতুন বছরে আলোচনায় থাকবে যেসব উদ্ভাবন উইকিপিডিয়া কীভাবে পরিচালিত হয়, কতটা নির্ভরযোগ্য এর তথ্য? এক্সক্লুসিভ কাটা-ছেঁড়া ছাড়ছে না ড্যাপকে সচিবালয়ে লাগা আগুন ১০ ঘণ্টা পর পুরোপুরি নিভল প্রাণঘাতী কমিয়ে শর্ট ব্যারেল অস্ত্র তিন বিভাগে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির আভাস জাহাজে ৭ খুন: লাশ নিতে স্বজনদের ভিড়, শিল্প মন্ত্রণালয়ের তদন্ত কমিটি গঠন ৪৩ বিলিয়নের চাপে দেশ ♦ আওয়ামী লীগ সরকারের প্রকল্পে বিদেশি ঋণ কিস্তি পরিশোধের ঝুঁকি ♦ অন্তর্বর্তী সরকারকে পরিশোধ করতে হবে ২.৬ বিলিয়ন, বাকি দায় যাবে নির্বাচিত সরকারের ঘাড়ে Khulna-Dhaka train services via Padma Bridge begin officially

অনলাইনে চলছে জাল টাকা কেনাবেচা

রিপোর্টার
  • আপডেট : বুধবার, ২৩ মার্চ, ২০২২
  • ৯০ বার দেখা হয়েছে

জাল টাকার কারবার এখন অনলাইনেও। বিভিন্ন পেজ খুলে জাল টাকার বিজ্ঞাপন দেওয়া হচ্ছে। বলা হচ্ছে, দেশের যেকোনো স্থানে নিরাপত্তার সাথে পৌঁছে দেওয়া হবে। আবার ইনবক্সে যোগাযোগের জন্যও বলা হচ্ছে। অন্তত ১৬টি চক্র জাল টাকা সারা দেশে ছড়িয়ে দিচ্ছে বলে জানা গেছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অনলাইন প্ল্যাট ফর্মকে ব্যবহার করে নানা ধরনের অপরাধী চক্র যেমন সক্রিয় হচ্ছে তেমনি জাল টাকার কারবারিরাও বসে নেই। জাল টাকার কারবারিও এখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের মাধ্যমে তারা তাদের কারবার চালাচ্ছে।

তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কর্মকর্তারা বলছেন, দেশে আসন্ন রমজান ও ঈদকে সামনে রেখে জাল টাকার কারবারিরা সক্রিয় হয়ে উঠছে। গ্রাহক পেতে তারা অনলাইন প্ল্যাট ফর্মকে বেছে নিতে পারে তারা। আবার প্রতারণার কাজেও এ পেজগুলোকে ব্যবহার করতে পারে। কর্মকর্তারা বলছেন, সাইবার টিম এগুলো মনিটরিং করছে। সময় মতো এ চক্রগুলোও আইনের আওতায় আসবে।

ডিবির উপকমিশনার (ডিসি) মো. মশিউর রহমান বলেন, চক্র একই। এরা এখন যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এগুলো ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে তা গোয়েন্দা বিভাগ অবগত। এ বিষয় তারা কাজও করছেন। তিনি বলেন, সামনে রোজা এবং ঈদকে টার্গেট করে প্রতিবারের মতো এবারো চক্রটি সক্রিয় হওয়ার চেষ্টা করছে।

তিনি বলেন, যারা জাল টাকার কারবারি, তারা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার হলেও জামিনে মুক্তি পেয়ে ফের একই কাজ শুরু করে। তাদের ভালো পথে আনা যাচ্ছে না। এরা সাধারণত ঢাকার উপকণ্ঠে বেশি সক্রিয় থাকে। খুবই নিখুঁতভাবে তারা জাল টাকার নোট তৈরি করছে।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এক সময় ৪০০ টাকার কালি ও ২০০ টাকার কাগজ দিয়ে জাল টাকা বানিয়ে তা ৮ থেকে ১০ হাজার টাকায় বিক্রি করত তারা। ফলে অন্য পেশায় থাকলেও বেশি লাভের আশায় অনেকে এ পেশায় জড়িয়ে পড়েছে। তবে বর্তমানে জাল টাকা তৈরির কালি ও কাগজের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় এবং আমাদের হাতে অনেকে গ্রেপ্তার হওয়ার পর তাদের তৎপরতা কিছুটা কমেছে। এসব টাকা তৈরির উপকরণের দাম বৃদ্ধি করলে জাল টাকা তৈরি অনেকটাই কমে যাবে।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, জাল টাকার চক্র অতি সম্প্রতি ফেসবুকে নানা ধরনের জাল টাকা সংক্রান্ত পেজ খুলেছে। সেখানে তারা বিজ্ঞাপন দিয়েছে। কম রেটে জাল টাকা সরবরাহ করা হয়। যোগাযোগের জন্য ইনবক্স এবং মোবাইল নম্বরও (হোয়াটস অ্যাপ) দেওয়া হয়েছে।

অনুসন্ধানে আরো জানা যায়, ‘জাল টাকা কম দামে বিক্রি করি’ একটি পেজ রয়েছে। সেখানে জাল টাকার বিষয়ে নানা ধরনের তথ্যও দেওয়া হয়েছে। এ রকম অন্তত তিনটি পেজ খোঁজ পাওয়া যায়। সেখানে আসন্ন রোজা ও ঈদকে সামনে রেখে বলা হয়েছে যেকোনো নোট তারা সরবরাহ করতে পারবেন। দেশের যেকোনো জেলা হলেও সমস্যা নেই।

এদিকে গোয়েন্দা পুলিশের সাইবার মনিটরিংয়ের টিমের এক কর্মকর্তা বলেন, বর্তমানে নানা ধরনের অপরাধী যে অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে জাল টাকার কারবারিরাও এ থেকে বাদ যায়নি। বিষয়টি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। দ্রুত এ বিষয়ে অভিযানও পরিচালনা করা হবে।

ডিবির দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা জানান, জাল টাকা তৈরিতে সারা দেশে সক্রিয় ১৬টি চক্রের বিষয়ে তথ্য পাওয়া গেছে। সেগুলোর মূল হোতাদের নামও পাওয়া গেছে। তারা হলেন- ইমন, জামান, জাকির, সেলিম, হামির, সিহাব, হুমায়ন কবির, বিহারি সুমন, আমজাদ, কাওসার, সেলিম বেপারি, সাইফুল ওরফে রিকশা সাইফুল, খশরু ও সাগর।

বিভিন্ন সময় গ্রেপ্তার জাল টাকার কারবারিদের জিজ্ঞাসাবাদেই তাদের বিষয়ে তথ্য মিলে। এসব চক্র আগে উৎসবকে ঘিরে জাল টাকা তৈরি করত। এখন তারা সারাবছরই জাল টাকা তৈরি করে বাজারে ছড়িয়ে দিচ্ছে। চক্রের হোতাদের বিরুদ্ধে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন থানায় তিন থেকে ১০টি করে মামলাও রয়েছে। প্রায় সবাই কোনো না কোনো সময় পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছেন। তবে তিন থেকে ছয় মাসের বেশি কেউ জেল খাটেননি। জামিনে বেরিয়ে আবার একই অপকর্মে জড়িয়ে পড়েছেন তারা।

জাল টাকা তৈরিতে ব্যবহূত সরঞ্জামা সংগ্রহের বিষয়ে ডিবির এক কর্মকর্তা জানান, যে কাগজ ব্যবহার হয়, সেগুলো নীলক্ষেত থেকে সংগ্রহ করা। অন্যান্য উপাদানের সোর্স— বিশেষ করে কেমিক্যাল পুরান ঢাকা থেকে নেয়। আর জাল টাকা বাজারে ছড়ানো হয় তিন ধাপে। আর প্রতিটি চক্রের রয়েছে ২০ থেকে ২৫ সদস্য। তারা বিভাগ, জেলা, উপজেলা পর্যায়ে কাজ করেন। মূল হোতাদের কাছ থেকে তারা ১ লাখ জাল টাকা ১৫ হাজার টাকায় কেনেন।

জানা গেছে, উৎপাদকের এক লাখ টাকা তৈরি করতে খরচ হয় সাত থেকে ১০ হাজার টাকা। তারা পাইকারি বিক্রেতার কাছে ১ লাখ টাকা ১৪-১৫ হাজার টাকায় বিক্রয় করে। পাইকারি বিক্রেতা ১ম খুচরা বিক্রেতার নিকট বিক্রয় করে ২০-২৫ হাজার টাকা, ১ম খুচরা বিক্রেতা ২য় খুচরা বিক্রেতার নিকট বিক্রয় করে ৪০-৫০ হাজার টাকায় এবং ২য় খুচরা বিক্রেতা মাঠ পর্যায়ে সেই টাকা আসল এক লাখ টাকায় বিক্রয় করে।

গ্রেপ্তার জাল নোট কারবারি ও গোয়েন্দা সূত্র জানায়, জাল নোট তৈরির জন্য প্রথমে টিস্যু কাগজের এক পার্শ্বে বঙ্গবন্ধুর প্রতিচ্ছবি স্ক্রিনের নিচে রেখে গাম দিয়ে ছাপ দিতো। এরপর ১০০০ লেখা এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের মনোগ্রামের ছাপ দিতো। অতপর অপর একটি টিস্যু পেপার নিয়ে তার সাথে ফয়েল পেপার থেকে টাকার পরিমাপ অনুযায়ী নিরাপত্তা সূতা কেটে তাতে লাগিয়ে সেই টিস্যুটি ইতিপূর্বে বঙ্গবন্ধুর প্রতিচ্ছবি জলছাপ দেওয়া টিস্যু পেপারের সাথে গাম দিয়ে সংযুক্ত করে দিতো।

এভাবে টিস্যু পেপার প্রস্তুত করে বিশেষ ডট কালার প্রিন্টারের মাধ্যমে ল্যাপটপে সেভ করে রাখা টাকার ছাপ অনুযায়ী প্রিন্ট করা হতো। ওই টিস্যু পেপারের উভয় দিক প্রিন্ট এবং প্রতিটি টিস্যু পেপারে মোট ৪টি জাল টাকার নোট প্রিন্ট করা হতো। এরপর প্রিন্টকৃত টিস্যু পেপারগুলো কাটিং গ্লাসের উপরে রেখে নিখুঁতভাবে কাটিং করা হয়। পরবর্তীতে কাটিংকৃত জাল টাকাগুলো বিশেষভাবে বান্ডিল করে এটি চক্রের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করা হয়।

ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের অতিরিক্ত কমিশনার কেএম হাফিজ আক্তার বলেন, ঈদ বা বড় বড় উৎসব গুলোতে জাল টাকা প্রস্তুতকারক ও কারবারীদের অপতৎপরতা বেড়ে যায়। ইতোমধ্যে বেশ কিছু কারবারিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। যারা বাইরে আছে তাদের গ্রেপ্তারে প্রতিদিনই অভিযান চলছে। পুলিশ রোজার আগ থেকেই সতর্ক অবস্থানে রয়েছে, যাতে কেউ জাল নোট বাজারে ছাড়তে না পারে।

উদ্ধার হওয়া জাল টাকা আগের টাকার চেয়ে অনেক বেশি নিখুঁত উল্লেখ করে তিনি বলেন, উদ্ধার হওয়া জাল টাকায়ও নিরাপত্তা সুতা স্থাপন করা হয়েছে। এসব নিরাপত্তা সুতা তারা কিভাবে জোগাড় করেছে সেই ব্যাপারে গ্রেপ্তারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। সাধারণ চোখে বোঝা খুবই কঠিন যে এটা জাল টাকা। তবে অরজিনাল টাকা কিছুটা খসখসে এবং জাল টাকা বেশি মসৃণ বলে তিনি জানান। এক্ষেত্রে টাকা লেনদেনের ক্ষেত্রে সচেতন হওয়ার আহবান জানান পুলিশের এই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা।

s
এই বিভাগের আরো সংবাদ
© All rights reserved © 2021 deshmediabd.com