আদেশে বলা হয়, করোনাভাইরাস জনিত রোগের প্রাদুর্ভাবের কারণে দীর্ঘদিন শ্রেণিকক্ষে পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীদের শিক্ষা কার্যক্রম ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষার্থীদের শিখন ঘাটতি পূরণকল্পে এ বিভাগের আওতাধীন মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসমূহে ২৬ এপ্রিল পর্যন্ত যথাযথ বিধি অনুসরণপূর্বক শ্রেণিকক্ষে পাঠদান অব্যাহত রাখার অনুরোধ করা হলো।
একইসঙ্গে আদেশে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে একাডেমিক কাউন্সিল ও সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত মোতাবেক এ সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।
এর আগে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে জারি করা এক আদেশে ২০ রমজান পর্যন্ত প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা রাখার সিদ্ধান্ত জানানো হয়। এক্ষেত্রে প্রাথমিকে সকাল সাড়ে ৯টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত ক্লাসের সময়সীমা নির্ধারণ করে অধিদপ্তর।
এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহেই শুরু হচ্ছে সিয়াম সাধনার মাস পবিত্র মাহে রমজান। প্রতিবছর রোজার মাস ঘিরে স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকে। তবে করোনার দুই বছরে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা অনেকটা ব্যাহত হওয়ায় ক্ষতি পুষিয়ে নিতে এবছর রোজার মাসে স্কুল-কলেজে ক্লাস চালু রাখার সিদ্ধান্ত নিলো সরকার।
এদিকে রোজায় সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট আবেদন করা হয়েছে। রিটে ২০ রমজান পর্যন্ত প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা রাখার সিদ্ধান্তের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে। গতকাল রোববার হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় আইনজীবী অ্যাডভোকেট ইউনুছ আলী আকন্দ এ রিট দায়ের করেন। রিটে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিবকে বিবাদী করা হয়েছে।
রোজায় স্কুল-কলেজ খোলা রাখার বিষয়ে গত গত ২৭ ফেব্রুয়ারি শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, অন্যান্য বছর রমজানে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলেও এবার ক্লাস চালু থাকবে। তবে ঈদের স্বাভাবিক ছুটি বহাল থাকবে।
গত ২৪ মার্চ প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে জারি করা এক আদেশে বলা হয়েছিল, রমজানে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ক্লাস চলবে সকাল সাড়ে ৯টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত। এ সময়ের মধ্যে নামাজ পড়ার জন্য ৩০ মিনিট বিরতি পাবে শিক্ষকরা।
আদেশে আরও বলা হয়, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সরাসরি শ্রেণি কার্যক্রম ২০ রমজান পর্যন্ত চালু থাকবে। শুধু রমজান মাসে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সরাসরি শ্রেণি পাঠদান পরিচালনার জন্য নির্দেশনাগুলো পালনে নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হয়।
দেশে মহামারি করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে ২০২০ সালের ১৭ মার্চ সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করে সরকার। দীর্ঘ ১৮ মাস পর গত বছরের সেপ্টেম্বরে খুলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এর চার মাস যেতে না যেতেই চলতি বছরের শুরুতে করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় গত ২১ জানুয়ারি ফের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয় সরকার। যা বহাল ছিল ২১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত।
এরপর পর্যায়ক্রমে মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো খুলে দেয় সরকার। সবশেষ মার্চের প্রথম সপ্তাহে খুলে প্রাথমিক বিদ্যালয়। বর্তমানে প্রাক-প্রাথমিকেরও শ্রেণিকক্ষে পাঠদান চলছে।