1. admin@deshmediabd.info : admin :
  2. support@bdsoftinc.info : adminr :
  3. jeradmin@deshmediabd.com : :
রবিবার, ১২ জানুয়ারী ২০২৫, ০৪:৫৬ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ সংবাদঃ

তৃণমূল আওয়ামী লীগে ঠাঁই পাচ্ছে বিতর্কিতরা

রিপোর্টার
  • আপডেট : বৃহস্পতিবার, ১৯ মে, ২০২২
  • ৯২ বার দেখা হয়েছে

আগামী জাতীয় সম্মেলন ও জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে দল গোছানোর কাজ করছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। দলের সভাপতি শেখ হাসিনার নির্দেশে বিরামহীনভাবে মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটিতে নতুন নেতৃত্ব আনতে তৃণমূলে সম্মেলন করছেন দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা। বিতর্কিত ও অনুপ্রবেশকারীদের বাদ দিয়ে ত্যাগী নেতাদের দলে আনার বিষয়ে দলের হাইকমান্ড থেকে বারবার বলা হচ্ছে। কিন্তু অনেক বিভাগ ও জেলায় কেন্দ্রের নির্দেশ উপেক্ষা করে জামায়াত, বিএনপি ও বিতর্কিতদের দলে পুনর্বাসন করা হচ্ছে বলে অভিযোগ আছে। ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থীদেরও বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনের গুরুত্বপূর্ণ পদে আনা হচ্ছে। আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন, যারা দলীয় হাইকমান্ডের নির্দেশ অমান্য করে বিতর্কিতদের দলে ভিড়াচ্ছে, তাদেরও জবাবদিহিতার আওতায় আনা হবে। অভিযোগ প্রমাণ হলে সাংগঠনিক রীতি অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জানা গেছে, জামায়াতসংশ্লিষ্ট পরিবারের ছেলে মহিবুল হাসান মুকিতকে গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক করা হয়েছে। এ নিয়ে পলাশবাড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগে অসন্তোষ তৈরি হয়েছে। স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতারা এবং মুক্তিযোদ্ধারা ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তাদের প্রশ্ন, যে ব্যক্তির বাড়িতে জামায়াত-শিবিরের লজ বা মেস ছিল, সেই ব্যক্তি কীভাবে আওয়ামী লীগের এত গুরুত্বপূর্ণ পদ পেতে পারে?

মুকিতের পরিবারের জামায়াতসংশ্লিষ্টতা নিয়ে প্রথম আওয়ামী লীগ সভাপতির কাছে লিখিত অভিযোগ করেন আমিনুল ইসলাম নামে এক স্থানীয় নেতা। এরপর একে একে মুখ খুলতে শুরু করেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা ও অঙ্গসংগঠনগুলো। মুক্তিযোদ্ধারাও এর বিরোধিতা করেন। কেন্দ্রের নির্দেশে মুকিতের পরিবারের জামায়াতসংশ্লিষ্টতা নিয়ে জেলা আওয়ামী লীগ ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি হলে এর কার্যক্রমে বাধা দেওয়ার অভিযোগও রয়েছে মুকিতের বিরুদ্ধে।

চিঠিতে আমিনুল ইসলাম উল্লেখ করেন, ‘১৯৯০ সালে মুকিতের বাবা প্রফেসরপাড়ায় আমাদের তিনটি বাসার একটি ভাড়া নিয়েছিল। আশপাশের লোকজন তার বাবা জামায়াত করে- এমন অভিযোগ করলে আমার বাবা তৎকালীন থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আধাঘণ্টার মধ্যে বাসা থেকে বের করে দেন। এটা পলাশবাড়ীর সবাই জানেন। এ ছাড়া তার মা কলেজের প্রিন্সিপাল, উনি শিবির ও ছাত্রী সংস্থার ছেলেমেয়েকে সবসময় বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করতেন, তাদের নিয়ে মিটিং করতেন। এটাও সবাই জানে। আমি নিজেও বিষয়টা ভালোভাবে জানি।’ তিনি আরও বলেন, ‘এই রকম জামায়াত পরিবারের ছেলে কীভাবে সাংগঠনিক সম্পাদক হয়? আমি তদন্ত কমিটির কাছে আমার স্টেটমেন্ট দিয়েছি, আমার জানামতে শতকরা ৯৫ ভাগ লোকই তার পরিবারের জামায়াতসংশ্লিষ্টতার বিষয়ে তথ্য দিয়েছে। এত কিছু প্রমাণ থাকার পরও আর কি তদন্ত করা দরকার?’

পলাশবাড়ীর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আব্দুর রহমান সরকার বলেন, ‘তদন্ত কমিটি আমার সঙ্গে কথা বলেছে, আবারও আসবে শুনেছি। আমি তাদের পারিবারিক অবস্থা বলেছি। তার নানা হারিকেন প্রতীক নিয়ে ১৯৭০ সালের নির্বাচনে অংশ নেন। মুসলিম লীগের নেতা ছিলেন তিনি।’

রংপুর বিভাগে দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন শফিকের কাছে এ বিষয়ে জানতে চেয়ে মুঠোফোনে ফোন দিলে তিনি ব্যস্ততা দেখিয়ে ফোন কেটে দেন।
অন্যদিকে কেন্দ্রের নির্দেশনা অমান্য করে তৃণমূলে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী এবং তাদের মদদদাতাদের পুনর্বাসন চলছেই। শুধু মনোনয়ন নয়, দল ও সহযোগী সংগঠনের শীর্ষপদও তাদের দেওয়া। জেলা-উপজেলা থেকে কেন্দ্রে পাঠানো রেজুলেশনের সুপারিশে আসছে নামও।

গত নির্বাচনে ত্রিশাল পৌরসভায় নৌকার পরাজয়ের পেছনে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখেন তৎকালীন উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক ইব্রাহিম খলিল নয়ন। এ সংক্রান্ত একটি চিঠি সেখানকার নৌকার প্রার্থী নবী নেওয়াজ সরকার আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা ও সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের কাছে দেন। কিন্তু সেই নয়নকে চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে ত্রিশাল উপজেলার স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি করা হয়েছে।

পিরোজপুর উপজেলার কলারদোয়ানিয়া ইউনিয়নে দলীয় মনোনয়নের জন্য গত ইউপি নির্বাচনের বিদ্রোহী প্রার্থী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নান্না মিয়া ও উপজেলা যুবলীগের সহসভাপতি কবির হোসেনের নাম কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে বলে জানা গেছে।

মৎস্যজীবী লীগের ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি করা হয়েছে বহুল বিতর্কিত তাজরীন ফ্যাশন গার্মেন্টসের কর্ণধার মামলার আসামি দোলোয়ার হোসেনকে। অন্যদিকে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ মৎস্যজীবী লীগেও বিতর্কিতদের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে আনার চেষ্টা চলছে বলে অভিযোগ আছে।

গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র পদ থেকে অব্যাহতি ও গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক থেকে বহিষ্কৃত জাহাঙ্গীর আলমকেও দলে ফেরানোর চেষ্টা করছেন কেউ-কেউ। এমন আশ্বাস পেয়ে জাহাঙ্গীর আলম গত রমজান থেকে দলীয় কার্যক্রমও শুরু করেছেন। বিভিন্ন সভা-সমাবেশে গিয়ে দৃঢ়ভাবে বলছেন, ‘হারানো পদ তিনি ফেরত পাবেন’।

এ ছাড়া নেত্রকোনা, জামালপুর, নোয়াখালী, ফেনীসহ বেশ কয়েকটি জায়গায় বিতর্কিতদের দলে আনা হয়েছে বলে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় দপ্তরে অভিযোগ পাঠানো হয়েছে।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম এ বিষয়ে আমাদের সময়কে বলেন, যারা বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সঙ্গে বেঈমানি করেনি, যারা শেখ হাসিনার নেতৃত্ব ও নির্দেশনার প্রতি আস্থাশীল- কেবল তারাই দলের কমিটিতে আসবে। এ ছাড়া দুর্নীতিবাজ, ঠকবাজ, প্রতারক, অনুপ্রবেশকারী- এদের স্থান আওয়ামী লীগে হবে না। কেউ বিতর্কিতদের দলে এনেছে তা প্রমাণ হলে অবশ্যই সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক রীতি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

s
এই বিভাগের আরো সংবাদ
© All rights reserved © 2021 deshmediabd.com