নিজস্ব প্রতিবেদক
ছাত্রী ও তার মাকে যৌন হয়রানির অভিযোগে মো. মামুন (৩১) নামে একজন গৃহশিক্ষককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ। শুক্রবার ঢাকার দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জ এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টার।
শনিবার বিকেলে সিআইডি এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, অভিযুক্ত মামুন ও ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী এবং তার মা দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জ এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা। মামুন এলাকায় টিউশনি করেন। সুমি (ছদ্ম নাম) ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে পড়া অবস্থায় গৃহশিক্ষক মামুন তাকে পড়াতেন। ওই সময় গোপনে সুমির অজান্তে তার শরীরের স্পর্শকাতর স্থানের ছবি মোবাইলের মাধ্যমে ধারন করে রাখেন মামুন।
ওই ছবি প্রকাশ করার ভয় দেখিয়ে কৌশলে সবার অজান্তে অভিযুক্ত শিক্ষক মামুন বিভিন্ন সময় সুমির আরও কিছু স্পর্শকাতর ছবি তুলে তার মোবাইলে সংরক্ষণ করে রাখেন। সুমি অপ্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ায় ভয়ে বিষয়টি পরিবারের কাউকে জানায়নি। এদিকে সম্প্রতি সুমির অষ্টম শ্রেণির পরীক্ষার ফলাফল খারাপ হওয়ার কারণে তার পরিবার মামুনকে বাদ দিয়ে দেয়।
এরপর থেকে অভিযুক্ত মামুন সুমির স্কুলে যাতায়াতের সময় আগে ধারণ করা গোপ ছবি প্রকাশ করার ভয় দেখিয়ে তার সাথে শারীরিক সম্পর্ক করার প্রস্তাব দেন। প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় মামুন সুমির পরিবারের ছবি ব্যবহার করে সুমির মায়ের নামে একটি ফেইক ফেসবুক আইডি খোলেন।
ওই আইডি থেকে মামুন সুমির মায়ের ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারে বার্তা পাঠিয়ে কুপ্রস্তাব দেন। সুমির মা সাড়া না দিলে তিনি সুমির গোপন ছবি পাঠিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল করার হুমকি দিতে থাকেন। বিভিন্ন সময় অভিযুক্ত মামুন ওই ফেক আইডির ম্যাসেঞ্জার থেকে সুমির মাকে বিভিন্ন ধরণের অশ্লীল ছবি ও ভিডিও পাঠাতে থাকেন।
মামুনের ধারন করা ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারের বিষয়ে সুমির পরিবার সিআইডির সাইবার পুলিশরে কাছে অভিযোগ জানায়। পরে সিআইডির সাইবার পুলিশ ঘটনাটি অনুসন্ধান করে অভিযোগের সত্যতা পায়। এরপর তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় অভিযুক্তের অবস্থান শনাক্ত করে। পরে শুক্রবার ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ এলাকা থেকে অভিযুক্ত মামুনকে গ্রেপ্তার করে। এ সময় তার কাছ থেকে অপরাধ কাজে ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি জব্দ করা হয়।
এই ঘটনায় মামুনের বিরুদ্ধে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা এবং পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে।