নিজস্ব প্রতিবেদক
ঢাকায় পুলিশ কর্মকর্তা হত্যা মামলার আসামি রবিউল ইসলাম ওরফে আরাভ খান পাঁচ বছরের কম সময়ের মধ্যে কীভাবে এত টাকার মালিক হলেন, তা খুঁজে বের করতে অনুসন্ধান শুরু করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
সিআইডির ফিন্যান্সিয়াল ক্রাইম স্কোয়াডের মানি লন্ডারিং শাখা ইতিমধ্যে রবিউলের দেশ-বিদেশে থাকা সম্পদের তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ শুরু করেছে। সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই শহরে রবিউলের কী পরিমাণ অর্থসম্পদ রয়েছে এবং তাঁর এসব সম্পদের মালিক হওয়ার পেছনে কারা আছেন, সে বিষয়ে জানার চেষ্টা চলছে বলে সিআইডি সূত্র জানিয়েছে।
সিআইডির সংশ্লিষ্ট বিভাগের একজন কর্মকর্তা শুক্রবার প্রথম আলোকে বলেন, রবিউলের সম্পদের তথ্য জানতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে দুবাই কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি পাঠানো হচ্ছে। চিঠিটি প্রথমে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সিআইডির গণমাধ্যম শাখার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আজাদ রহমান বলেন, রবিউলের অপরাধলব্ধ আয় খুঁজতে সিআইডির ফিন্যান্সিয়াল স্কোয়াডের অনুসন্ধান চলছে। অনুসন্ধান শেষে এ বিষয়ে বিস্তারিত বলা যাবে।
আরও পড়ুন
দুবাই থেকে ‘আরাভকে’ দেশে ফেরানোর প্রক্রিয়া জটিল
রবিউল ইসলাম ওরফে আরাভ
দুবাইয়ে আরাভ খান নামে পরিচিত রবিউল ঢাকায় পুলিশ কর্মকর্তা মামুন এমরান খান হত্যা মামলার আসামি। বাংলাদেশ পুলিশের তথ্যের ভিত্তিতে তাঁর বিরুদ্ধে রেড নোটিশ জারি করেছে আন্তর্জাতিক পুলিশ সংস্থা ইন্টারপোল। রেড নোটিশে তাঁর নাম লেখা হয়েছে রবিউল ইসলাম। বয়স ৩৫ বছর। জাতীয়তা দেখানো হয়েছে বাংলাদেশি। জন্মস্থান বাগেরহাট। খুনের দায়ে তাঁর বিরুদ্ধে এ নোটিশ বলে জানানো হয়।
পুলিশ সদর দপ্তরের মুখপাত্র ও সহকারী মহাপরিদর্শক (এআইজি) মো. মনজুর রহমান গতকাল রাতে বলেন, সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী রবিউল দুবাইয়ে আছেন। সেখান থেকে তাঁকে দেশে ফিরিয়ে আনতে ইন্টারপোলের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হচ্ছে।
আরও পড়ুন
আরাভ খান গ্রেপ্তারি পরোয়ানার মধ্যেও এক বছরে দুবার বাংলাদেশে এসেছিলেন
আরাভ খান নামে দুবাইয়ের এই স্বর্ণ ব্যবসায়ী মূলত বাংলাদেশে পুলিশ পরিদর্শক হত্যা মামলার আসামি রবিউল ইসলাম। তাঁকে দেশে ফিরিয়ে আনতে ইন্টারপোলের সহায়তা চেয়েছে পুলিশ
পুলিশের বিশেষ শাখার পরিদর্শক মামুন এমরান ২০১৮ সালের ৮ জুলাই রাজধানীর বনানীর একটি ফ্ল্যাটে খুন হন। পরদিন গাজীপুরের জঙ্গল থেকে তাঁর আধপোড়া মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় মামুনের বড় ভাই জাহাঙ্গীর আলম খান বাদী হয়ে ঢাকার বনানী থানায় মামলা করেন। মামলাটি তদন্ত করে পলাতক রবিউলসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে ২০১৯ সালের ৩১ মার্চ অভিযোগপত্র দেয় গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
ঢাকায় পুলিশের তথ্যানুযায়ী, মামুন এমরান খান খুনের পর রবিউল পালিয়ে যান। পরে আরাভ খান নামে ভারতীয় পাসপোর্ট নিয়ে তিনি দুবাইয়ে অবস্থান করেন। গত ১৫ মার্চ দুবাইয়ের নিউ গোল্ড সুকে জমকালো অনুষ্ঠানে আরাভ জুয়েলার্স নামে একটি সোনার দোকানের উদ্বোধন করেন তিনি। ওই অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের ক্রীড়া ও বিনোদনজগতের অনেক তারকাকে হাজির করে ব্যাপক আলোচনায় আসেন।