বাংলাদেশ-আফগানিস্তান ম্যাচের টস যারা দেখেননি, তারা আফসোস করেছেন বিকালে, যখন ম্যাচ জয়ের সূর্য বাংলাদেশের আকাশে। আজ যতই কাজ থাকুক, ভারতের ধর্মশালায় বেলা ১১টায় বাংলাদেশ-ইংল্যান্ড ম্যাচের টস দেখতে চাইবেন তারা। চোখ টিভির পর্দায় রাখতে বাধ্য করছে সাকিবদের বাংলাদেশ। আফগানিস্তানের বিপক্ষে বাংলার ক্রিকেটারদের নৈপুণ্য দেশের কোটি কোটি ভক্তের মধ্যে আশার ফুল ফুটিয়েছে। প্রথম ম্যাচটা যদি ভালো হয়, পুরো টুর্নামেন্টে উদ্দীপনা আসে। সাকিবরা তো দেখিয়ে দিলেন। অনেক সংকটেও কীভাবে লড়াই করতে হয়। কীভাবে নেতৃত্বগুণাবলি দিয়ে দেশের মানুষের মুখে হাসি ফোটানো যায়। অনেকের ভয় ইংল্যান্ডকে নিয়ে। আবার অনেকের মধ্যে চাঙ্গা ভাব—দলটার নাম ইংল্যান্ড হয়েছে তো কী হয়েছে।
ক্রিকেট ভক্তরা যেটাই বলুক, বিশ্বকাপে প্রথম ম্যাচ জিতে বাংলাদেশ চাঙ্গা হয়ে আছে। আর অন্যদিকে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডের অবস্থা খুব একটা ভালো না। প্রথম ম্যাচেই নিউজিল্যান্ডের কাছে ৯ উইকেটে হেরে প্রচণ্ড ধাক্কা খেয়েছে। সেখান থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর চাপটা সরিয়ে নিতে চায় আজ বাংলাদেশকে হারিয়েছে। সাকিবদের বাংলাদেশ আগেও ইংল্যান্ডকে ধাক্কা দিয়েছে। ইংরেজি পরীক্ষার আগে যতটুকু প্রস্তুতি দরকার সব কয়টা বই পড়ে নিয়েছেন সাকিব। অস্ট্রেলিয়ান সাংবাদিক সংবাদ সম্মেলনে একটা প্রশ্ন করেছিলেন সাকিবকে। তার জবাব শুনে অস্ট্রেলিয়ান সেই সাংবাদিক বিড়বিড় করে বলছিলেন, টেরিবল ক্রিকেটার। ডেয়ারিং। চোখে চোখ রেখে কথা বলেন সাকিব। চোখে চোখ রেখে ব্যাট চালান, বল করেন বাংলাদেশের অধিনায়ক।
বিশ্বকাপ ক্রিকেটে এবার অন্য বাংলাদেশ। সংবাদমাধ্যম থেকে দূরে সরিয়ে রাখা হয়েছে। বিশ্বকাপ ফুটবলে আর্জেন্টিনার ম্যাচে অধিনায়ক মেসিকে সংবাদ সম্মেলনে আনা হতো না। মেসিকে কোন প্রশ্ন করবে, কি উত্তর হবে তা নিয়ে মাঠে প্রভাব পড়ুক তা কেউ চায় না। মেসিকে খুব যত্ন করে তুলে রাখা হতো। বাংলাদেশের সব ক্রিকেটারকেও এবারে বিশ্বকাপে তুলে রাখা হয়েছে। বাইরের সঙ্গে কোনো কথা বলার সুযোগ নেই। প্রথম ম্যাচে কোচ হাথুরুসিংয়ে কথা বলেছেন। আর গতকাল এসেছেন বাংলাদেশ দলের স্পিন কোচ রঙ্গনা হেরাথ। তার কাজ হলো বোলিং নিয়ে কথা বলা। কিন্তু তাকে প্রশ্ন শুনতে হলো ধর্মশালার আউট ফিল্ড নিয়ে। আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচেই এই মাঠ নিয়ে কথা উঠেছিল। অনেক বেশি বালু। মাঠ নরম। কিন্তু হেরাথ আউট ফিল্ড নিয়ে কিছু বললে আইসিসির নজরে পড়বেন কি না, সেই শঙ্কায় হয়তো এড়িয়ে গেছেন। হেরাথের কথা একটাই আউট ফিল্ডের সঙ্গে মানিয়ে নিতে হবে। একই কথা ইংল্যান্ড অধিনায়ক জস বাটলারও আউট ফিল্ড নিয়ে কথা বললেও তিনি সাবধান থাকার মন্ত্র দিয়েছেন তার খেলোয়াড়দের। ফিল্ডিং করতে গিয়ে আঘাতপ্রাপ্ত না হওয়ার কথা বলেছেন জস বাটলার।
এ বছর মিরপুরে সিরিজে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডে ম্যাচ জিতেছিল বাংলাদেশ। সেটাই শেষ জয়। মানসিকভাবে এগিয়ে থাকার সুযোগ, কিন্তু বাংলাদেশ সেটা ভাবছে না। সেটা বুঝেন ইংলিশ অধিনায়ক জস বাটলার। কারণ ওয়ার্মআপ ম্যাচে খেলেননি সাকিব। না খেলেই তার পারফরম্যান্স যেভাবে উজ্জ্বলতা ছড়িয়েছে। নেতৃত্বগুণ যেভাবে বিশ্বকাপ ক্রিকেটের মঞ্চে আলোচনায় উঠেছে। তাতে দুলকি চালে চললে হবে না। তার পরও সংবাদ সম্মেলনে জস বাটলারের শেষ কথা হচ্ছে ইংল্যান্ড বাংলাদেশের কাছে হুমকি হতে পারে না।’ তাহলে কি বাংলাদেশকে সহজ প্রতিপক্ষ হিসাবে দেখছে ইংল্যান্ড। জস বাটলার জানিয়েছেন বিশ্বকাপে সব প্রতিপক্ষই সমান। মাত্রই তো বিশ্বকাপ শুরু হলো। আপনি সময় দিন। এখনো অনেক পথ বাকি আছে।’ শেষ বিশ্বকাপ জয়ী ইংল্যান্ডের অধিনায়ক সবকিছু দেখে শুনে বাস্তবতা মেনে নিয়ে একটা কথা বলেছেন, ‘আমাদের ইংল্যান্ডের জন্য বাংলাদেশ সহজ প্রতিপক্ষ হতে পারে না। বাংলাদেশ এখন অনেক পরিণত একটা দল। তবে এটা ঠিক যে, ধর্মশালার কন্ডিশন বলছে এই মাঠে বাংলাদেশের চেয়ে ইংল্যান্ড এগিয়ে থাকবে।’ দেখা যাক ইংলিশ পরীক্ষায় বাংলাদেশ কত নম্বর পায়।