অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল জানিয়েছেন, দেশে বর্তমানে (ডিসেম্বর ২০১৮ পর্যন্ত) ঋণ খেলাপির সংখ্যা দুই লাখ ৬৬ হাজার ১১৮ জন। আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী এ তথ্য জানান। সে সঙ্গে তিনি শীর্ষ ২০ ঋণ খেলাপির তালিকাও প্রকাশ করেন। তবে কে কত টাকা ঋণ খেলাপি তা উল্লেখ করা হয়নি।
স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বৈঠকে প্রশ্নোত্তর টেবিলে উত্থাপিত হয়। সরকারি দলের সদস্য ওয়ারেসাত হোসেন বেলালের প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী দেশের শীর্ষস্থানীয় ২০ ঋণ খেলাপির নাম-ঠিকানা প্রকাশ করেন। মন্ত্রী জানান, উচ্চ আদালতের স্থগিতাদেশ থাকায় যোগ্য কিছু সংখ্যক ঋণ খেলাপি প্রতিষ্ঠানের নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি।
মন্ত্রীর তথ্য মতে, শীর্ষ ২০ ঋণ খেলাপি হচ্ছে কোয়ান্টাম পাওয়ার সিস্টেমস লিমিটেড, সামান্নাজ সুপার অয়েল লিমিটেড, বি. আর. স্পিনিং মিলস লিমিটেড, সুপ্রোভ স্পিনিং লিমিটেড, রিমেক্স ফুটওয়্যার লিমিটেড, রাইজিং স্টিল লিমিটেড, কম্পিউটার সোর্স লিমিটেড, বেনেটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, ম্যাক্স স্পিনিং মিলস্, এস এ অয়েল রিফাইনারি লিমিটেড, রুবিয়া ভেজিটেবল অয়েল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, আনোয়ারা স্পিনিং মিলস, ক্রিসেন্ট লেদার প্রডাক্টস লিমিটেড, সুপ্রোভ রোটর স্পিনিং লিমিটেড, ইয়াসির এন্টারপ্রাইজ, চৌধুরী নিটওয়্যারস লিমিটেড, সিদ্দিক ট্রেডার্স, রুপালী কম্পোজিট লেদার ওয়্যার লিমিটেড, আলপ্পা কম্পোজিট টাওয়েলস লিমিটেড এবং এম এম ভেজিটেবল অয়েল প্রডাক্টস লিমিটেড।
সরকারি দলের সাংসদ হাজী সেলিমের প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী জানান, রাষ্ট্রায়ত্ত ৬টি ব্যাংকের খেলাপি ঋণের পরিমাণ (সেপ্টেম্বর ২০১৮ পর্যন্ত) ৪৪ হাজার ২৮৯ কোটি ১৩ লাখ টাকা। এর মধ্যে সোনালী ব্যাংকের ১২ হাজার ৫২৬ কোটি ৫৩ লাখ, জনতা ব্যাংকের ১২ হাজার ২২ কোটি ৫৪ লাখ, বেসিক ব্যাংকের ৮ হাজার ৪৪১ কোটি ৫৬ লাখ, অগ্রণী ব্যাংকের ৫ হাজার ৬৪৮ কোটি ৫৩ লাখ, রূপালী ব্যাংকের ৪ হাজার ৮৭০ কোটি ৪৭ লাখ, বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের ৭৭৯ কোটি ৫০ লাখ টাকা।
সরকারি দলের সদস্য ইসলাফিল আলমের প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী জানান, ফার্মার্স ব্যাংকের (বর্তমানে পদ্মা ব্যাংক লি.) প্রতি আমানতকারীদের আস্থা ফিরিয়ে আনতে বেইল আউট প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সরকারি মালিকানাধীন সোনালী, জনতা, অগ্রণী ও রূপালী ব্যাংক এবং ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ (আইসিবি) ৭১৫ কোটি টাকার মূলধন সরবরাহ করেছে।
সরকারি দলের সাংসদ দিদারুল আলমের প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী মুস্তফা কামাল জানান, দেশের ২৭ গত ডিসেম্বর পর্যন্ত ৫৭টি তফসিলি ব্যাংকের মোট আমানতের পরিমাণ ১১ লাখ ১৫ হাজার ৩৫৭ কোটি টাকা। একই সময়ে বিনিয়োগের পরিমাণ ৯ কোটি ২২ লাখ ৮৮৪ কোটি ৫ লাখ টাকা।
সরকারি দলের সাংসদ এম আবদুল লতিফের প্রশ্নের জবাবে মুস্তফা কামাল জানান, ডিসেম্বর ২০১৮ মাসের হিসাব অনুযায়ী মোবাইল ব্যাংকিংয়ের দৈনিক গড় লেনদেন সংখ্যা ৬৭ লাখ ৭৭ হাজার।এতে দৈনিক এক হাজার ৩ কোটি টাকা লেনদেন হয়। মোবাইল ব্যাংকিংয়ের সার্ভিস চার্জ কমানোর জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক সবপক্ষগুলোকে নিয়ে কাজ করছে বলে মন্ত্রী জানান।
এদিকে সরকারি দলের ইসরাফিল আলমের প্রশ্নের জবাবে ডাক টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তফা জব্বার জানান, ভিওআইপি কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত থাকায় পাঁচটি টেলিকম কোম্পানির কাছ থেকে মোট ৮৬০ কোটি ৬০ লাখ টাকা জরিমনা আদায় করা হয়েছে। এর মধ্যে গ্রামীণ ফোনের কাছ থেকে ৪১৮ কোটি ৪০ লাখ টাকা, রবি আজিয়াটা থেকে ১৪৫ কোটি টাকা, বাংলা লিংক থেকে ১২৫ কোটি টাকা, র্যাংঙ্কস টেলিকম থেকে ১৬৪ কোটি টাকা এবং পিপলস টেলিকম থেকে ৮ কোটি ২০ লাখ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়।