অনলাইন ডেস্ক
পুরো দেশেই জেঁকে বসেছে শীত। চলতি জানুয়ারি মাসে শীতের তীব্রতা বেড়েছে। ঠান্ডাজনিত রোগে কাবু হচ্ছে শিশু ও বয়স্করা। চিকিৎসকরা বলছেন, শীতে শিশুদের ডায়রিয়া, সর্দি-কাশি, শ্বাসকষ্টসহ নানা ধরনের রোগ দেখা দেয়। শীতের সময় শিশু ও বয়স্করা বিভিন্ন রোগে আক্রান্তের ঝুঁকিতে থাকে।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউটসহ রাজধানীর বেশ কয়েকটি হাসপাতালে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, হাসপাতালে সর্দি-জ্বরে আক্রান্ত রোগীর চাপ বেড়েছে। সর্দি-জ্বরে আক্রান্তদের অধিকাংশই শিশু। রয়েছেন বয়স্করাও।
এছাড়া অনেকে আবার বেসরকারি হাসপাতালেও চিকিৎসা করাচ্ছেন। অর্থাৎ ঠান্ডাজনিত রোগে হাসপাতালগুলোতে শিশু ও বয়স্ক রোগীর ভিড় বাড়ছে।
আলী আহমেদ। বাড়ি মাদারীপুরের শিবচরে। পরিবার নিয়ে থাকেন মিরপুর ১২ নম্বর এলাকায়। ৮ বছরের ছেলে শান্তকে নিয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এসেছেন।
তিনি বলেন, ছেলেটার তিন চারদিন ধরে জ্বর ও শ্বাসকষ্ট হচ্ছিল। প্রথমে বুঝতে পারিনি। এলাকার ফার্মেসি থেকে ওষুধ খাইয়েছি। গ্যাসও (লেবু লাইজার) দিয়েছি। ভেবেছিলাম সুস্থ হয়ে যাবে। কিন্তু আজ অবস্থা খুব খারাপ হওয়ায় হাসপাতালে নিয়ে এসেছি।
তিনি আরও বলেন, ডাক্তার দেখিয়েছি। কিছু টেস্ট করিয়েছে ডাক্তার। রিপোর্ট ভাল। এখন আল্লাহর রহমতে ভাল আছে। বাসায় চলে যাচ্ছি।
বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউটের শিশু মেডিসিন বিভাগের আবাসিক চিকিৎসক ডা. রিজওয়ানুল আহসান গণমাধ্যমকে জানান, এখানে অন্যান্য সময় যত শিশু রোগী আসতো, শীতের প্রকোপে জানুয়ারির শুরু থেকে তার দ্বিগুণের বেশি আসছে। প্রতিদিন যেখানে ২০০ থেকে ২৫০ শিশু রোগী আসতো, সেখানে গত কয়েক দিনে প্রতিদিন ৪০০ থেকে ৫০০ রোগী আসছে।
জানুয়ারি মাসে শিশু হাসপাতালে গড়ে প্রতিদিন ৭০০-৮০০ জন রোগী বহির্বিভাগে চিকিৎসা নেন। যেটা সাধারণ সময়ে ৩০০ থেকে ৪০০-এর মধ্যে থাকে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। হাসপাতালের রেকর্ড থেকে জানা যায়, গত ১৫ দিনে শুধু ৮০টির মতো শিশু নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে।
রাজধানীর শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউটের পেডিয়েটিক রেসপিরেটরি মেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. কামরুজ্জামান বলেন, হাসপাতালে প্রতিদিন ১ হাজার থেকে ১ হাজার ২০০ রোগী আসছে। যাদের বেশির ভাগই ডায়রিয়া, নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত। শীতের প্রকোপের কারণে এখন শিশুরা নিউমোনিয়া, রোটা ভাইরাসে আক্রান্ত হচ্ছে বেশি।
শিশু হাসপাতালের তথ্য বলছে, চলতি বছরের প্রথম ১৪ দিনে এ হাসপাতালে ২২৩টি নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত শিশু ভর্তি হয়েছে। আর ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছে ৯৮টি। হাসপাতালে ভর্তি শিশুর মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় ৯ শিশুর মৃত্যু হয়েছে। নিউমোনিয়ার উপসর্গ নিয়ে গত ১৪ দিনে ৩৬ শিশুর মৃত্যু হয়েছে।