স্পোর্টস ডেস্ক
প্রথমে ব্যাট করে মাত্র ১০৬ রানে অলআউট হয়ে হারের শঙ্কায় পড়েছিল বাংলাদেশ। তবে ছোট এই পুঁজি নিয়েই লড়াই করলেন বাংলাদেশের বোলাররা। শুরুতে তানজিম হাসান সাকিবের তোপের পর শেষের কাজটি করেছেন মোস্তাফিজুর রহমান। নেপালকে ৮৫ রানে অলআউট করে ২১ রানের জয়ে কোনো সমীকরণ ছাড়াই সুপার এইটে পৌঁছে গেল বাংলাদেশ।
শেষ ১৭ বলে নেপালের দরকার ছিল মাত্র ২৩ রান। তবে এরপর ১ রান করতে নেপাল খেলেছে ১৩ বল, হারিয়েছে ৪ উইকেট। পরিধি আরও ছোট করে আনা যাক। শেষ ২ ওভারে নেপালের প্রয়োজন ছিল ২২ রান। ১৯তম ওভারে এসে কোনো রান না দিয়ে ১ উইকেট নিয়ে ম্যাচ বাংলাদেশের পক্ষে নিয়ে আসেন মোস্তাফিজ। প্রথম পাঁচ বলের একটিও ব্যাটে-বলে করতে পারেননি হুমকি হয়ে ওঠা দিপেন্দ্র সিং আইরি। শেষ বলে ব্যাট ছুঁয়ে পৌঁছে যায় লিটন দাসের হাতে। শেষ ওভারে এসে প্রথম দুই বলেই নেপালকে গুটিয়ে দেন সাকিব আল হাসান।
এদিন ইনিংসের শুরুতে বল হাতে তোপ দাগেন তানজিম হাসান সাকিব। ৪ ওভারে মাত্র ৭ রান দিয়ে তুলে নেন শুরুর দিকে নেপালের ৪ উইকেট। এদিন ২ ওভারই মেডেন দেন তানজিম। বিশ্বকাপে যা কোনো বাংলাদেশির প্রথম কীর্তি। তাছাড়া এটি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে কোনো বাংলাদেশির দ্বিতীয় সেরা বোলিং ফিগার। ৪ ওভারে সমান ৭ রান দিয়ে মোস্তাফিজ শিকার করেন ৩ উইকেট।
এর আগে, নির্ধারিত ২০ ওভারের ৩ বল বাকি থাকতেই মাত্র ১০৬ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ। টুর্নামেন্টে এখনো পর্যন্ত এটিই বাংলাদেশের সর্বনিম্ন দলীয় ইনিংস। এর আগে, দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ১০৯ রানে থেমেছিলেন নাজমুল হোসেন শান্তরা। এছাড়া আগের কোনো ম্যাচেই অলআউট হয়নি বাংলাদেশ, এবারের টুর্নামেন্টে নেপালের বিপক্ষেই প্রথম। তাছাড়া আইসিসির কোনো সহযোগী দেশের বিপক্ষেও এটি বাংলাদেশের সর্বনিম্ন সংগ্রহ। এর আগে লজ্জার এই রেকর্ডটি ছিল হংকংয়ের বিপক্ষে, ১০৮ রানে। সেই ম্যাচে হেরেছিল বাংলাদেশ।
জিতলেই সরাসরি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সুপার এইট, এমন সমীকরণ নিয়ে কিংসটাউনের আর্নস ভেলে নেপালের বিপক্ষে ব্যাটিংয়ে নামেন নাজমুল হোসেন শান্তরা। তবে শুরুটা একদমই ভালো করতে পারেনি টাইগাররা। ইনিংসের প্রথম বলেই আউট হয়ে ফিরেছেন তানজিদ হাসান তামিম। সোমপাল কামির করা বলে কট এন্ড বল হন তিনি। একই ওভারে আউট দেওয়া হয়েছিল লিটন দাসকেও। তবে রিভিও নিয়ে বাঁচেন তিনি। তবে পরের ওভারে আরও এক উইকেট হারায় বাংলাদেশ। দিপেন্দ্র সিং আইরির বলে সরাসরি বোল্ড হন বাংলাদেশ অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত।
পাওয়ার প্লের মধ্যে আরও দুই উইকেট হারায় বাংলাদেশ। ২১ রানে লিটন দাসকে (১০) হারানোর পর ৩০ রানের মাথায় ফেরেন ইনফর্ম ব্যাটার তাওহিদ হৃদয়ও (৯)। এরপর সাকিবের সঙ্গে ভালোই ব্যাট করছিলেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। তবে ভুল বোঝাবুঝিতে মাহমুদউল্লাহ রানআউট হয়ে ফিরলে বিপদে পড়ে বাংলাদেশ। দলীয় ৫২ রানের মাথায় ১৩ রান করে আউট হন মাহমুদউল্লাহ। ১২তম ওভারের চতুর্থ বলে ফেরেন সাকিবও (১৭)। রোহিত পউডেলের বলে দলীয় ৬১ রানে আউট হন তিনি। তানজিম হাসান সাকিব বা জাকের আলীরাও কেউ ভরসা হতে পারেননি। দলীয় ৬৯ রানে তানজিমের পর ৭৫ রানে ফিরেছেন জাকের।
বাংলাদেশের আগের বিভিন্ন ম্যাচ বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, হুট করে কেউ দাঁড়িয়ে ইনিংস বড় করে দিয়েছেন। নেপালের বিপক্ষে আজ চার-ছক্কা মেরে তেমন একটি সম্ভাবনার জানান দিচ্ছিলেন রিশাদ হোসেন। এর আগে শ্রীলংকার বিপক্ষে বড় রান করার উদাহরণও আছে রিশাদের। তবে চার-ছ আজ আর সেটি সম্ভব হয়নি। দলীয় ৮৮ রানে বাউন্ডারি মারতে গিয়ে ধরা পড়েন তিনি। তবে শেষদিকে তাসকিনের দৃঢ়তায় এক শ ছাড়ায় বাংলাদেশের দলীয় ইনিংস। ১৫ বলে ১২ রানে অপরাজিত থাকেন তাসকিন। তবে দুর্ভাগ্যজনকভাবে রান আউটে কাটা পড়েন মোস্তাফিজ। তাতে ৩ বল বাকি থাকতেই ১০৬ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ।