নিজস্ব প্রতিবেদক
স্ত্রীর নামে ধানমন্ডির ১১ নম্বর রোডে ৪ কোটি টাকার ফ্ল্যাট, মোহাম্মদপুরে ৫ কোটি টাকার ফ্ল্যাট, নবোদয় হাউজিংয়ে ১০ কোটি টাকার বহুতল বাড়ি, মানিকগঞ্জে ১০ কোটি টাকার ২০ বিঘা জমি, বাড্ডায় ১০ কোটি টাকার ৮ বিঘা জমি, রাজধানীর শপিং মলে ৪ কোটি টাকার দোকান, বায়তুল মোকাররম মার্কেটে ১০ কোটি টাকার দোকান, টেকনাফে ৫ কোটি টাকার স্থাপনাসহ ৩ বিঘা জমি, ইনানী সৈকতে ১০ কোটি টাকার স্থাপনাসহ ১ বিঘা জমি, চট্টগ্রামে ১০ কোটি টাকার জমি। মোশাররফের নামে ধানমন্ডির ১৬ নম্বর রোডে ৬ কোটি টাকার ফ্ল্যাট
সাবেক বন কর্মকর্তা মোশাররফ হোসেন ও তার স্ত্রী পারভীন সুলতানার বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। প্রাথমিক তদন্তে তাদের ১১২ কোটি টাকার সম্পদের তথ্য পেয়েছে সংস্থাটি।
সাবেক বন সংরক্ষক মোশাররফ হোসেন দুর্নীতির দায় থেকে নিজেকে আড়াল করতে নিয়েছেন নানা কৌশল। দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত বেশির ভাগ সম্পদই তিনি করেছেন স্ত্রীর নামে। আর স্ত্রীকে দায়িত্ব দিয়েছেন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানেরও।
দুদক কর্মকর্তারা বলছেন, বন বিভাগে চাকরি করাকালে তিনি নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে অবৈধ সম্পদের পাহাড় গড়েছেন। নামে-বেনামে তার শতকোটি টাকার সম্পদ রয়েছে। অনুসন্ধান শেষে আরও অনেক সম্পদের তথ্য পাওয়া যাবে। আর তিনি সন্তানের নামেও করেছেন বিপুল সম্পদ।
জানা গেছে, দুর্নীতির অভিযোগে বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয় প্রজ্ঞাপন জারি করে তাকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠায়। অবসরে যাওয়ার পর তিনি ‘মেঘনা বিল্ডার্স’ নামে আবাসন ব্যবসা শুরু করেন।
দুদক সূত্র জানায়, তাদের নামে ফ্ল্যাট, জমি, বিভিন্ন স্থাপনা, ব্যাংকে জমানো টাকা, মেয়াদি আমানতসহ নানা সম্পদের তথ্য পাওয়া গেছে। স্ত্রী পারভীন সুলতানার নামে চালু করেন মেঘনাস ফিটনেস সেন্টার। এই প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমেই সম্পদের উৎস গোপন এবং দুর্নীতির দায় থেকে নিজেকে আড়াল করার চেষ্টা করেন। আর কালো টাকা সাদা করার উদ্দেশে অপরাধলব্ধ অর্থ বৈধ দেখাতে মোশাররফ আবাসন খাতের ব্যবসায় নামেন। বর্তমানে তিনি মেঘনা রিয়েল এস্টেট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক। সম্পদের মধ্যে পারভীন সুলতানার নামে রাজধানীর ধানমন্ডির ১১ নম্বর রোডে অজান্তা অ্যাপার্টমেন্টে ৪ কোটি টাকা মূল্যের ২ হাজার ৪০০ বর্গফুটের ফ্ল্যাট, মোহাম্মদপুরের ইকবাল রোডে মেমোরো ভিলায় ৫ কোটি টাকা মূল্যের ৪ হাজার ৮২০ বর্গফুটের ফ্ল্যাট, মোহাম্মদপুরের নবোদয় হাউজিং সোসাইটির বি ব্লকে ১০ কোটি টাকা মূল্যের বহুতল বাড়ি, মানিকগঞ্জের রাখোরা মৌজায় ১০ কোটি টাকা মূল্যের ২০ বিঘা জমি, ঢাকার বাড্ডার সাঁতারকুল মৌজায় ১০ কোটি টাকা মূল্যের ৮ বিঘা জমি, রাজধানীর একটি শপিং মলে ৪ কোটি টাকা মূল্যের ৪০০ বর্গফুটের দোকান, বায়তুল মোকাররম মার্কেটে ১০ কোটি টাকার ৩০০ বর্গফুটের দোকান, কক্সবাজারের টেকনাফে ৫ কোটি টাকা মূল্যের স্থাপনাসহ ৩ বিঘা জমি এবং ইনানী সমুদ্রসৈকতে ১০ কোটি টাকা মূল্যের স্থাপনাসহ ১ বিঘা জমি, চট্টগ্রামের পাহাড়তলীতে ১০ কোটি টাকা মূল্যের ৬ কাঠা জমি। এ ছাড়া মোশাররফের নামে আছে- রাজধানীর ধানমন্ডির ১৬ নম্বর রোডে (পুরনো-২৭) ১৬ নম্বর প্লটে জেনেটিক প্লাজার চতুর্থ তলায় ৬ কোটি টাকা মূল্যের ৩ হাজার বর্গফুটের একটি ফ্ল্যাট। এই ফ্ল্যাটেই তিনি বাস করেন। তার নামে ঢাকা চন্দ্রিমা সুপার মার্কেটে ২ কোটি টাকা মূল্যের ৩০০ বর্গফুটের দোকান, ঢাকার পূর্বাচলে ২০ কোটি টাকা মূল্যের স্থাপনাসহ ১০ কাঠা জমি, বাগেরহাটের গোপালকাঠি গ্রামে ২০ কোটি টাকা মূল্যের স্থাপনাসহ ১০ কাঠা জমি। এ ছাড়া বিভিন্ন জনকে ঋণ হিসেবে দিয়েছেন ১ কোটি টাকা। মোশাররফের মেয়ে মোহনা থাকেন যুক্তরাষ্ট্রে। দেশটিতে ৫ কোটি টাকায় তার নামে কিনে দিয়েছেন একটি ফ্ল্যাট।