নিজস্ব প্রতিবেদকনোয়াখালী
নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার চর এলাহী ইউনিয়নের একটি দুর্গম চরে মা ও মেয়েকে ঘর থেকে তুলে নিয়ে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। গত রোববার রাতে ঘটনাটি ঘটার পর স্থানীয় সমাজপতিদের কাছে বিচার চেয়ে পাননি ভুক্তভোগীরা। পরে বাধ্য হয়ে আজ শনিবার সন্ধ্যায় স্থানীয় পুলিশ ক্যাম্পে গিয়ে মৌখিক অভিযোগ করেন। নির্যাতনের শিকার নারী ও তাঁর মেয়েকে পুলিশ থানায় নিয়ে গেছে।
নির্যাতনের শিকার নারী অভিযোগ করেন, তাঁর স্বামী কাভার্ড ভ্যান চালক। বাড়িতে তিনি তাঁর মেয়ে (১৭), এক দেবরসহ (২১) থাকেন। তাঁদের বাড়ির আশপাশে তেমন কারও বাড়িঘর নেই। গত রোববার রাত ১১টার দিকে একই ইউনিয়নের বাসিন্দা ছয় যুবক তাঁর বাড়িতে আসে। তাঁরা ঘরের দরজা খুলে ভেতরে ঢুকে তাঁর দেবরের মুখ, হাত-পা বেঁধে রাখে। এরপর তাঁর মেয়ে ও তাঁকে ঘর থেকে বের করে নিয়ে যায়।
নারীর অভিযোগ, যুবকদের মধ্যে তিনজন তাঁকে টেনে নিয়ে যায় বাড়ির পুকুরপাড়ে। আর তিনজন তাঁর মেয়েকে বসতঘরের পাশের রান্নাঘরের সামনে নিয়ে যায়। এরপর তাঁকে পুকুরপাড়ে ও মেয়েকে রান্নাঘরের সামনে রাত তিনটা পর্যন্ত ধর্ষণ করে ওই যুবকেরা। যাওয়ার সময় ঘর থেকে টাকাপয়সাসহ জিনিসপত্রও লুট করে নিয়ে যায়। ঘটনাটি কাউকে না জানানোর জন্য হুমকিও দিয়ে যায় তারা।
আজ শনিবার রাত পৌনে আটটার দিকে মুঠোফোনে ওই নারী জানান, এ ঘটনার পর পরদিন সকালে বিষয়টি স্থানীয় সমাজপতিদের জানান এবং তাঁদের কাছে ঘটনার বিচার চান। তাঁরা বিচারের নামে টালবাহানা করতে থাকেন। পরে বাধ্য হয়ে তিনি আজ বিকেলে স্থানীয় চর বালুয়া পুলিশ ক্যাম্পে গিয়ে মৌখিক অভিযোগ করেন। তখন পুলিশ পুরো ঘটনা শুনে তাঁকে কোম্পানীগঞ্জ থানায় পাঠানো হবে বলে জানায়।
নারী অভিযোগ করেন, তাঁকে ও মেয়েকে ধর্ষণের ঘটনায় জড়িত ছয়জনের সবাই চর এলাহী বিএনপির এক সাবেক নেতার (যিনি ৫ আগস্টের পর খুন হয়েছেন) অনুসারী। ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত ব্যক্তিরা তাঁকে নানা ধরনের হুমকি দিয়ে যাচ্ছে। তারা সবাই এলাকায় প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে।
কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা গাজী মুহাম্মদ ফৌজুল আজিম প্রথম আলোকে বলেন, মা ও মেয়ে দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছেন বলে তিনি সন্ধ্যায় খবর পেয়েছেন। মা ও মেয়ে স্থানীয় পুলিশ ক্যাম্পে যাওয়ার পর সেখান থেকে তাঁকে তথ্যটি জানানো হয়েছে। তিনি নির্যাতনের শিকার মা ও মেয়েকে থানায় পাঠাতে বলেছেন। থানায় এলে তাঁদের মুখ থেকে বক্তব্য শুনে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে উপজেলা বিএনপির সদস্যসচিব মাহমুদুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, চর এলাহী ইউনিয়নে একটি ধর্ষণের ঘটনা তিনি শুনেছেন। তবে কে বা কারা ওই ঘটনায় জড়িত, সেটি জানেন না। এই ঘটনায় যারাই জড়িত, পুলিশ তদন্ত করে তাদের বিরুদ্ধে নিশ্চয়ই আইনগত ব্যবস্থা নেবে।