1. admin@deshmediabd.info : admin :
  2. support@bdsoftinc.info : adminr :
  3. jeradmin@deshmediabd.com : :
বুধবার, ১৩ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৩৩ অপরাহ্ন
সর্বশেষ সংবাদঃ
Climate vulnerable countries require enough support: CA ধানমন্ডি ৩২ কে ‘কাফেলা’ মনে করা ব্যক্তিদের উপদেষ্টা নিয়োগ: হাসনাত আবদুল্লাহ অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা হতে পারবেন না যারা রেললাইনে বসে মজুরির টাকা ভাগাভাগির সময় ট্রেনের ধাক্কায় নিহত ৪ প্রতিমন্ত্রীর মর্যাদায় প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী হলেন তিনজন লুট ১৯ হাজার কোটি টাকা উত্তাল জিরো পয়েন্ট ♦ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের গণজমায়েত কর্মসূচি ♦ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিএনপি ♦ কঠোর অবস্থানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী শিশুর শরীরে সিসার বিষ ♦ সাড়ে ৩ কোটির বেশি শিশুর দেহে উপস্থিতি ♦ সিসাদূষণে ক্ষতিগ্রস্ত দেশের তালিকায় বাংলাদেশ চতুর্থ ♦ খেলনায় উচ্চমাত্রায় Expatriates to avail facilities like guests at airports: CA গাজীপুরে ৩৫ ঘণ্টায়ও অবরোধ তুলেনি শ্রমিকরা, যাত্রীদের মারাত্মক ভোগান্তি ৩০ কারখানা ছুটি ঘোষণা

গাজীপুরে ৩৫ ঘণ্টায়ও অবরোধ তুলেনি শ্রমিকরা, যাত্রীদের মারাত্মক ভোগান্তি ৩০ কারখানা ছুটি ঘোষণা

রিপোর্টার
  • আপডেট : রবিবার, ১০ নভেম্বর, ২০২৪
  • ৪ বার দেখা হয়েছে

গাজীপুরে বকেয়া বেতন-ভাতা পরিশোধ ও বন্ধ কারখানা চালুর দাবিতে রোববার (১০ নভেম্বর) সন্ধ্যা পর্যন্ত প্রায় ৩৫ ঘণ্টা ধরে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে রেখেছে টিএনজেড গ্রুপের ৫টি কারখানার পোশাক শ্রমিকরা। অবরোধের কারণে ওই মহাসড়কে প্রায় ২০ কিলোমিটার এলাকায় স্মরণকালের ভয়াবহ যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়াও ঢাকা-টাঙ্গাইল ও ঢাকা বাইপাস মহাসড়কসহ বিভিন্ন আঞ্চলিক সড়কগুলোতে হাজার হাজার যানবাহন আটকা পড়ে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়েছে।

দু’দিন ধরে লাগাতার মহাসড়ক অবরোধের কারণে স্থবির হয়ে পড়েছে গাজীপুরের জনজীবন। এতে অবর্ণণীয় দুর্ভোগ ও ভোগান্তি পোহাচ্ছেন গাজীপুরসহ ঢাকা, ময়মনসিংহ ও টাঙ্গাইলসহ দেশের বিভিন্ন জেলার নারী-পুরুষ ও শিশু যাত্রীরা।

এদিকে, শ্রমিক অন্দোলনের কারণে ভাংচুর এড়াতে রোববার বিকেল পর্যন্ত আশপাশের অন্তত ৩০টি পোশাক কারখানা ছুটি ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ। সন্ধ্যা ৭টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত শ্রমিকরা মহাসড়ক অবরোধ তুলে নেয়নি।

পুলিশ ও আন্দোলনরত শ্রমিকরা জানায়, মহানগরীর মোগরখাল এলাকার টিএনজেড অ্যাপারেলস লিমিটেডের পাঁচটি কারখানার শ্রমিকদের গত দুই মাসের (সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর) বকেয়া বেতন বাবদ প্রায় ১৪/১৫ কোটি টাকা পাওনা রয়েছে। কর্তৃপক্ষ একাধিকবার আশ্বাস দিয়েও তা পরিশোধ করেনি। সর্বশেষ গত ৩ নভেম্বর নির্ধারিত তারিখে শ্রমিকদের পাওনাদি পরিশোধের কথা থাকলেও ওইদিন তা পরিশোধ না করে কর্মকর্তারা কারখানা তালাবদ্ধ করে পালিয়ে যায়।

এরপর থেকে মালিক পক্ষের লোকজন কারখানায় আসেননি, এমনকি কারখানাটির উৎপাদন কাজ বন্ধ রয়েছে। প্রতিদিনই শ্রমিকরা কাজে যোগ দিতে কারখানায় এসে ফিরে যায়। এতে শ্রমিকদের মাঝে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। এর জের ধরে শনিবার সকালে শ্রমিকরা কারখানার সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করে। একপর্যায়ে সকাল ৯টার দিকে তারা কারখানার পার্শ্ববর্তী ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের কলম্বিয়া কারখানার সামনে অবস্থান নিয়ে অবরোধ করে বিক্ষোভ করতে থাকে। এতে ওই মহাসড়কের উভয় পাশে সকল প্রকার যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

পুলিশ, যাত্রী ও স্থানীয়রা জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনী ও র‌্যাব সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসে শ্রমিকদের বুঝিয়ে সড়কের উপর থেকে সরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করলেও শ্রমিকরা তাদের দাবিতে অনঢ় থেকে রাতভর সড়কের উপর অবস্থান করতে থাকে। পরদিন রোববার সন্ধ্যা ৭টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত টানা প্রায় ৩৫ ঘণ্টা ধরে মহাসড়ক অবরোধ করে রেখেছে আন্দোলনরত শ্রমিকরা।

লাগাতার অবরোধের কারণে স্থবির হয়ে পড়েছে গাজীপুরের জনজীবন। এতে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের উভয়দিকে প্রায় ২০ কিলোমিটার ব্যাপী যানজট বিস্তৃত হয়েছে। এছাড়াও বিকল্প পথে চলাচল করতে গিয়ে ঢাকা-টাঙ্গাইল ও ঢাকা-বাইপাস মহাসড়কসহ বিভিন্ন আঞ্চলিক সড়কগুলোতেও হাজার হাজার যানবাহন আটকা পড়ে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। এতে স্মরণকালের ভয়াবহ যানজটের কারণে চরম দুর্ভোগ ও ভোগান্তিতে পড়েন রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্সসহ বিভিন্ন যানবাহনের যাত্রীরা। এছাড়া তরিতরকারি ও কাঁচামালসহ বিভিন্ন পণ্যবাহী যানবাহন আটকা পড়ায় মালামালের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এমনকি বিদেশগামী যাত্রীরা নির্ধারিত সময়ে বিমানবন্দরে পৌঁছতে না পেরে হতাশ হয়ে ফিরে যান। গন্তব্যে পৌঁছতে না পেরে অনেককে কান্নাকাটি করতেও দেখা গেছে।

এদিকে, গাজীপুর শিল্প পুলিশের পুলিশ সুপার (এসপি) সারোয়ার আলম জানান, শ্রমিক অন্দোলনের কারণে গাজীপুরের কোনাবাড়ি-জিরানী এলাকার রেজাউল অ্যাপারেলস লিমিটেড, কেএম নোবলী গার্মেন্টস, বানিকা ফ্যাশন লিমিটেড, ডরিন গার্মেন্টস, ডরিন অ্যাপারেলস, লাইফ টেক্সটাইল, এবিএম ফ্যাশন, পিএন কম্পোজিট নিট লিমিটেড, ভোগড়া বাইপাস এলাকার টিএনজেড অ্যাপারেলস, বেসিক ক্লথ লিমিটেড, অ্যাপারেল পালাস ইকো লিমিটেড, বেসিক নিটওয়্যার লিমিটেডসহ অন্তত ৩০টি পোশাক কারখানা ছুটি ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ।

তিনি জানান, রোববার সকালে টিএনজেড গ্রুপের আন্দোলনরত শ্রমিকরা তাদের সাথে যোগ দেয়ার জন্য আশেপাশের বিভিন্ন কারখানায় গিয়ে শ্রমিকদের বের করে আনার চেষ্টা করে। এসময় বাধা দিলে তারা ইটপাটকেল ছুড়ে বিভিন্ন কারখানায় ভাংচুর করে। এতে আতঙ্ক দেখা দেয়। পরিস্থিতি সামাল দিতে আশেপাশের কারখানাগুলো ছুটি ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ।

কিশোরগঞ্জের অনন্যা ক্লাসিক পরিহনের বাসচালক রিপন জানান, তার গাড়িতে কয়েকজন বিদেশগামী যাত্রী ছিলেন। তারা শনিবার সকাল ৯টার দিকে অবরোধে পড়েন। বাসটি পরদিন রোববার সন্ধ্যা পর্যন্ত সেখানেই আটকা পড়ে আছে। বাসের বিদেশগামী যাত্রীরা নির্ধারিত সময়ে বিমানবন্দরে পৌঁছতে না পেরে তারা হতাশ হয়ে কান্নাকাটি করে বাস থেকে নেমে বাড়ি ফিরে যান।

যাত্রীরা জানান, বিভিন্ন যানবাহনের আটকেপড়া যাত্রীরা তাদের গন্তব্য যেতে যানজটে বাসে বসে না থেকে দুপুরের পর থেকে হেঁটে তাদের গন্তব্যে যেতে দেখা গেছে। বয়স্ক, শিশু, নারী যাত্রীরা পড়েছেন বিপাকে। তাছাড়া যাদের সাথে বড় ব্যাগসহ ছোট শিশু রয়েছে তাদেরকেও বেশ কষ্ট করে গন্তব্য যেতে হচ্ছে। ছোট ছোট যানবাহন বিশেষ করে মোটরসাইকেল, রিকশা, ইজিবাইক যাওয়ার চেষ্টা করলে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকেরা লাঠিসোটা নিয়ে তাদের দিকে তেড়ে আসছেন।

স্থানীয় মুরগীর পাইকারি ব্যবসায়ী হিমেল মিয়া জানান, সিরাজগঞ্জ থেকে একটি পিকআপ ভর্তি করে মুরগি নিয়ে ঢাকা যাওয়ার পথে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের বাইমাইল এলাকায় যানজটের কবলে পড়েন। দীর্ঘ সময় ধরে আটকা পড়ে থাকায় তার প্রায় ১৩০টি মুরগি মারা গেছে।

ময়মনসিংহগামী আলম এশিয়া পরিবহনের চালক সেলিম মিয়া বলেন, ‘শনিবার সকাল সোয়া ৮টায় মহাখালী থেকে ময়মনসিংহের উদ্দেশে গাড়ি ছেড়ে এসেছি। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ময়মনসিংহ পৌঁছার কথা থাকলেও রোববার সন্ধ্যা পর্যন্ত বোর্ডবাজার এলাকায় যানজটে বসে আছি। এতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।’

এদিকে, গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে বিকল্প সড়ক ব্যবহারে অনুরোধে করে একটি ট্রাফিক আপডেট দেয়া হয়েছে। ওই আপডেটে বলা হয়েছে, ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক ও ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক ব্যবহারকারী যাত্রীদের জ্ঞাতার্থে জানানো যাচ্ছে যে, বকেয়া বেতন-ভাতার দাবিতে গার্মেন্টসের শ্রমিকরা ভোগড়া বাইপাস ও মালেকের বাড়ির মাঝামাঝি কলম্বিয়া গার্মেন্টসের সামনে শনিবার থেকে শুরু করা মহাসড়ক অবরোধ এখন পর্যন্ত অব্যাহত আছে। বিধায়, যাত্রীদের বিকল্প রাস্তা ব্যবহার করার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে।

এ বিষয়ে জানতে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) ইব্রাহিম খান বলেন, শনিবার আন্দোলনের শুরু থেকেই গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের ক্রাইম ডিভিশন, ট্রাফিক ডিভিশন, শিল্প ও থানা পুলিশসহ যৌথবাহিনীর সবাই মিলে কলম্বিয়া গার্মেন্টসের সামনে টিএনজেডের শ্রমিকরা যে অবরোধ করে রেখেছে। আমরা তাদের বারবার বলেছি রাস্তাটা ছেড়ে দিয়ে সরে যাওয়ার জন্য। কিন্তু তারা জানায় বেতন-ভাতা পরিশোধ না করা পর্যন্ত সড়ক থেকে সরে যাবে না।

তিনি জানান, আমরা মালিকপক্ষের সাথে কথা বলার চেষ্টা করেছি। মালিকপক্ষ বৃহস্পতিবার শ্রমিকদের বেতন-ভাতা পরিশোধের আশ্বাস দিলেও তারা পরিশোধ করেনি।

তিনি আরো জানান, এ ব্যাপারে ওই গ্রুপের চেয়ারম্যান হেদায়েতুল হকের সাথে মোবাইলে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। এছাড়াও প্রতিষ্ঠানের মালিক শামীম সাহেব বিদেশে অবস্থান করায় তার সাথেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। সন্ধ্যা ৭টায় শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত শ্রমিকরা মহাসড়ক অবরোধ করে রেখেছেন।

s
এই বিভাগের আরো সংবাদ
© All rights reserved © 2021 deshmediabd.com