যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প চীনের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যে ভারসাম্য ফেরাতে একটি ন্যায্য ও সমঝোতা ভিত্তিক চুক্তি করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। সোমবার ওয়াশিংটনে হোয়াইট হাউসে অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি অ্যালবানিজের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় ট্রাম্প এ কথা বলেন। তিনি আশা প্রকাশ করেন, চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এই চুক্তিতে সহযোগিতার জন্য এগিয়ে আসবেন।
ট্রাম্প বলেন, “আমরা চীনের সঙ্গে একটি ন্যায্য বাণিজ্যিক চুক্তি করতে চাই এবং আশা করি শি জিনপিং এতে সম্মতি দেবেন। যদি চীনের পক্ষ থেকে সম্মতি না আসে, তবে যুক্তরাষ্ট্র ১৫৫ শতাংশ রপ্তানি শুল্ক আরোপ করবে।” তিনি আরও বলেন, “বিশ্বের অনেক দেশ যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে অন্যায্য সুবিধা গ্রহণ করছে, যা আর চলতে দেওয়া যাবে না।”
যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে চীনের বিপুল পরিমাণ পণ্য প্রবেশ করে। এসব পণ্যের মধ্যে রয়েছে খাদ্যসহ মহাকাশ গবেষণায় ব্যবহৃত কাঁচামাল। ট্রাম্প ২০২৫ সালের ২০ জানুয়ারি ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকেই চীনের সঙ্গে বাণিজ্যিক ভারসাম্য ফিরিয়ে আনার বিষয়ে জোর দিয়েছেন।
গত আগস্ট মাসে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে ‘শুল্কযুদ্ধ’ শুরু হয়। ট্রাম্প চীনের ওপর আরোপিত রপ্তানি শুল্ক ৩০ শতাংশ থেকে ১৪৫ শতাংশে উন্নীত করেন। পাল্টা পদক্ষেপে চীনও মার্কিন পণ্যের ওপর ধার্যকৃত শুল্ক ১০ শতাংশ থেকে ১২৫ শতাংশে উন্নীত করে। তবে দুই দেশের সরকার ৯০ দিনের জন্য এই বর্ধিত শুল্ক স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নেন। ওই সময়সীমা আগামী নভেম্বর মাসে শেষ হবে।
আরও গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো, আগামী ৩১ অক্টোবর দক্ষিণ কোরিয়ার সিউলে এশিয়া-প্যাসিফিক ইকোনমিক কো-অপারেশন (এপেক) সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে আমেরিকার ট্রাম্প ও চীনের শি জিনপিং অংশগ্রহণ করবেন। মার্কিন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ওই সম্মেলনের ফাঁকে দুই নেতার মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের সম্ভাবনা রয়েছে।
বিশ্ব বাণিজ্য এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যকার এই সমঝোতা গুরুত্ব বহন করে। বিশেষ করে বাণিজ্যিক শুল্ক ও নিষেধাজ্ঞার ফলে দুই দেশের অর্থনীতিতে যে প্রভাব পড়েছে, সেটি বিবেচনায় রেখে ভবিষ্যতে সম্পর্কের উন্নয়নে এই চুক্তি কী ভূমিকা রাখে, তা আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের নজরকাড়া বিষয়।