যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আগামী বছরের প্রথম দিকে চীন সফরে যাবেন। বেইজিংয়ের আমন্ত্রণে এই সফর সম্পন্ন হবে বলে হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের জানান ট্রাম্প। একইসঙ্গে তিনি উল্লেখ করেন, এই মাসের শেষ দিকে দক্ষিণ কোরিয়ায় অনুষ্ঠিত হবে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে তার বৈঠক, যেখানে দুই দেশের মধ্যে ‘ন্যায়সঙ্গত’ বাণিজ্য চুক্তি সম্পন্ন হওয়ার আশা প্রকাশ করেন।
ট্রাম্প বলেন, “আমাকে চীন সফরের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে এবং বিষয়টি প্রায় চূড়ান্ত।” তিনি আরও বলেন, দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্ক সমৃদ্ধ করার প্রয়োজন রয়েছে এবং যুক্তরাষ্ট্র চায় চীন সয়াবিন আমদানি বৃদ্ধি করুক, যা যুক্তরাষ্ট্রের মধ্য-পশ্চিমাঞ্চলের কৃষকদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
গত কয়েক মাসে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে বাণিজ্য সংক্রান্ত উত্তেজনা তীব্র হয়েছে। চীন বিরল খনিজ রপ্তানিতে নতুন নিয়ন্ত্রণ আরোপ করলে, যুক্তরাষ্ট্র চীনা পণ্যের ওপর শুল্ক ১০০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ানোর হুমকি দেয়। তবে ট্রাম্প সোমবার বলেন, “আমরা সবাই মিলে উন্নতি করতে চাই।”
চীনের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়ে ট্রাম্প জানান, তার শি জিনপিংয়ের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক রয়েছে। তিনি বলেন, “চীন তাইওয়ান দখল করতে চায় না” এবং যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী সামরিক শক্তি হওয়ায় চীন সরাসরি আক্রমণ করার সাহস করবে না। একই সঙ্গে ট্রাম্প স্বীকার করেন, তাইওয়ান চীনের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল এবং শি জিনপিং এটিকে ‘চোখের মণি’ হিসেবে বিবেচনা করেন।
তবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা দপ্তর আগে জানিয়েছিল, চীন ২০২৭ সালের মধ্যে তাইওয়ান দখলের পরিকল্পনা করছে। গত জুনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ ‘শ্যাংরি-লা ডায়ালগ’ সম্মেলনে চীনকে এশিয়া-প্রশান্ত অঞ্চলের জন্য হুমকি হিসেবে উল্লেখ করেন। 이에 জবাবে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছিল, “তাইওয়ানকে চীনের বিরুদ্ধে কৌশলগত হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা বা আগুন নিয়ে খেলতে হবে না যুক্তরাষ্ট্রকে।”
এই সব বিবৃতি ও ঘটনা এক্ষেত্রে দুই দেশের সম্পর্কের জটিলতা এবং বৈশ্বিক ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতিরই প্রতিফলন ঘটায়। আসন্ন চীন সফর এবং বৈঠকে বাণিজ্য ও নিরাপত্তা সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এশিয়া-প্রশান্ত অঞ্চলে দু’সন্ত্রাসী শক্তির মধ্যকার সম্পর্ক ভবিষ্যতের আন্তর্জাতিক পরিস্থিতির ওপর উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলবে।