বাহরাইনের ঈসা স্পোর্টস সিটিতে শনিবার অনুষ্ঠিত যুব এশিয়ান গেমসের নারী কাবাডি ইভেন্টে ৪৭-৪০ পয়েন্টে শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে ব্রোঞ্জ পদক নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশ। ম্যাচের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ লড়াই শেষে জয় তুলে নেয় লাল-সবুজের কিশোরীরা।
এই জয়ের মাধ্যমে যুব এশিয়ান গেমসের ইতিহাসে প্রথমবার পদক পেল বাংলাদেশ। এর আগে অনুষ্ঠিত প্রথম দুই আসরে কোনো পদক অর্জন করতে পারেনি দেশটি। নারী কাবাডি দলের এই অর্জন জাতীয় ক্রীড়াঙ্গনে এক ঐতিহাসিক মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
ম্যাচের প্রথমার্ধেই নিজেদের আধিপত্য স্থাপন করে বাংলাদেশ। শুরুর থেকেই ভালো ছন্দে থাকা দলটি প্রথমার্ধ শেষ করে ২৫-১৮ পয়েন্টে এগিয়ে থেকে। দ্বিতীয়ার্ধে শ্রীলঙ্কা সমতা ফেরাতে আক্রমণাত্মক খেলা শুরু করে এবং উভয় দলই ২২ পয়েন্ট করে সংগ্রহ করে। তবে প্রথমার্ধের ব্যবধান ধরে রেখে বাংলাদেশ ৪৭-৪০ পয়েন্টে জয় নিশ্চিত করে।
ম্যাচ শেষে খেলোয়াড়দের উচ্ছ্বাস ছিল চোখে পড়ার মতো। কিশোরী এই দলটি শুধু একটি জয় নয়, বরং দেশের জন্য একটি আন্তর্জাতিক গেমসে প্রথমবারের মতো পদক এনে দিয়েছে।
এই আসরে নারী কাবাডি বিভাগে অংশ নিয়েছে মাত্র পাঁচটি দেশ—ইরান, ভারত, থাইল্যান্ড, বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কা। নিয়ম অনুযায়ী, শীর্ষ চার দলকেই পদক দেওয়া হবে। তাই বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার মধ্যকার ম্যাচটি ছিল কার্যত ‘ব্রোঞ্জ নির্ধারণী’। দুই দলই আগের তিন ম্যাচে হেরেছিল ভারতের, ইরানের ও থাইল্যান্ডের বিপক্ষে। আজকের জয়ই নির্ধারণ করে দিয়েছে চতুর্থ স্থান এবং সেইসঙ্গে বাংলাদেশের পদক নিশ্চিত করে।
নারী দলের সাফল্যের পর পুরুষ কাবাডি দলেও এসেছে আশার আলো। সাত দলের এই বিভাগে বাংলাদেশ এরই মধ্যে জয় পেয়েছে শ্রীলঙ্কা ও ইরানের বিপক্ষে। আগামী ম্যাচে তারা মুখোমুখি হবে থাইল্যান্ডের। বর্তমান পারফরম্যান্সের ভিত্তিতে বালক দলও পদক জয়ের দৌড়ে রয়েছে।
দীর্ঘ এক যুগ পর অনুষ্ঠিত হচ্ছে এশিয়ান ইয়ুথ গেমসের তৃতীয় আসর। রোববার (২২ অক্টোবর) হবে আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন। এবারের আসরে মোট ২৫টি ডিসিপ্লিনে প্রতিযোগিতা হচ্ছে, যার মধ্যে বাংলাদেশ অংশ নিচ্ছে ১৩টি ডিসিপ্লিনে।
আগামী দিনগুলোতে অ্যাথলেটিক্স, আরচারি, শুটিং, সুইমিং, ব্যাডমিন্টনসহ বেশ কিছু ইভেন্টে অংশ নেবে বাংলাদেশ। তবে কাবাডিতে মেয়েদের এই অর্জন গোটা দলের জন্য একটি উদ্দীপনা তৈরি করেছে, যা অন্য খেলাগুলোতেও ভালো পারফরম্যান্সে অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করতে পারে।
যুব এশিয়ান গেমসে নারী কাবাডি দলের এই ব্রোঞ্জ পদক বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনের জন্য একটি তাৎপর্যপূর্ণ অর্জন। অনূর্ধ্ব-১৮ মেয়েরা তাদের সাহস, একাগ্রতা ও পারস্পরিক সমন্বয় দিয়ে প্রমাণ করেছে, যথাযথ প্রশিক্ষণ ও পরিকল্পনা থাকলে আন্তর্জাতিক মঞ্চেও তারা সাফল্য এনে দিতে পারে। ভবিষ্যতে এ ধরনের অর্জন আরও প্রসারিত হবে বলেই আশা করা যায়।