আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ মানবতাবিরোধী অপরাধের তিন পৃথক মামলায় সেনাবাহিনীর সাবেক ও বর্তমান ১৫ জন কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।
বুধবার (২২ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ৮টার দিকে ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদার-এর নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বেঞ্চ এই আদেশ দেন। অন্যান্য দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ এবং বিচারক মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম (সাবেক এডিজি, র্যাব)
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তোফায়েল মোস্তফা সারোয়ার
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. কামরুল হাসান
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহাবুব আলম
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল কেএম আজাদ
কর্নেল আবদুল্লাহ আল মোমেন
কর্নেল আনোয়ার লতিফ খান (অবসরকালীন ছুটিতে)
লে. কর্নেল মো. মশিউর রহমান (সাবেক পরিচালক, র্যাব গোয়েন্দা শাখা)
লে. কর্নেল সাইফুল ইসলাম সুমন
লে. কর্নেল মো. সারওয়ার বিন কাশেম
লে. কর্নেল মো. রেদোয়ানুল ইসলাম (বর্তমানে বিজিবি)
মেজর মো. রাফাত বিন আলম
মেজর জেনারেল শেখ মো. সরওয়ার হোসেন (সাবেক পরিচালক, ডিজিএফআই)
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহবুবুর রহমান সিদ্দিকী
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহমেদ তানভির মাজাহার সিদ্দিকী
এই ১৫ জন ছাড়াও আরও ১০ সেনা কর্মকর্তা ও রাজনৈতিক নেতাদের বিরুদ্ধে গুম, নির্যাতন ও গণহত্যার অভিযোগে তিনটি মামলা চলমান রয়েছে।
TFI (টাস্কফোর্স ইন্টারোগেশন) সেল ও JIC (জয়েন্ট ইন্টারোগেশন সেল)-এ গোপন আটকের অভিযোগ
১৮ ও ১৯ জুলাই ২০২৪ সালে ঢাকার রামপুরায় ২৮ জন নিহতের ঘটনায় দায়ের করা গণহত্যার মামলা
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তারেক রহমান-সহ আরও কয়েকজন পলাতক আসামির বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গৃহীত হয়েছে
প্রসিকিউশনের দাবি অনুযায়ী, এসব অপরাধ সংঘটিত হয়েছে আওয়ামী লীগের দীর্ঘ শাসনামলে, যেখানে রাজনৈতিক বিরোধীদের টার্গেট করে রাষ্ট্রীয় বাহিনী ব্যবহার করা হয়েছে।
পলাতক আসামিদের হাজির করতে দুটি জাতীয় পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ
TFI ও JIC গুমের মামলায় পরবর্তী শুনানি ২০ নভেম্বর
রামপুরা গণহত্যা মামলার পরবর্তী শুনানি ৫ নভেম্বর
গ্রেপ্তার হওয়া ১৫ সেনা কর্মকর্তাকে বিশেষ প্রিজনভ্যানে করে সকাল ৭টায় ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয় এবং পরে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়
চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেন,
“আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আসামিদের ট্রাইব্যুনালে হাজির করলে আদালত তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। এখন তাদের কোন কারাগারে রাখা হবে, সে সিদ্ধান্ত নেবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীন কারা কর্তৃপক্ষ।”
সেনাসদর জানায়, ৯ অক্টোবর ১৫ সেনা কর্মকর্তাকে হেফাজতে নেওয়া হয়
সেনা কর্মকর্তা হাজির ঘিরে কাকরাইল, মৎস্য ভবন, হাইকোর্ট ও পল্টনে বাড়তি নিরাপত্তা নেওয়া হয়
পুলিশ, র্যাবের পাশাপাশি বিজিবি ও সেনাবাহিনীর সদস্যদের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়
বাংলাদেশের ইতিহাসে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে সেনা কর্মকর্তাদের এভাবে একসঙ্গে গ্রেপ্তার ও বিচার কার্যক্রম এক নজিরবিহীন ঘটনা। মামলাগুলোর পরবর্তী শুনানিতে প্রমাণ ও সাক্ষ্য উপস্থাপনের ভিত্তিতে বিচারিক কার্যক্রম এগোবে।