সরকার বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)-এর কাঠামোগত উন্নয়ন এবং বাহিনীর দক্ষতা বৃদ্ধি করার লক্ষ্যে বাহিনীর বিভিন্ন স্তরে ২ হাজার ২৫৮টি নতুন পদ সৃষ্টির ঘোষণা দিয়েছে। এর ফলে বিজিবির মোট পদ সংখ্যা ৫৭ হাজার ৪৭৭ থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ৫৯ হাজার ৭৩৫ হবে। এই পদ সৃষ্টির প্রক্রিয়া ইতোমধ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন পেয়েছে এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
বিস্তারিত জানানো হয়েছে, নতুন পদগুলো বিজিবির পরিচালক থেকে শুরু করে সৈনিক স্তর পর্যন্ত বিভিন্ন পর্যায়ে থাকবে। গত ১০ সেপ্টেম্বর প্রশাসনিক উন্নয়ন সংক্রান্ত সচিবদের কমিটি এবং পরবর্তীতে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস কর্তৃক এই পদ সৃষ্টির প্রস্তাব অনুমোদিত হয়।
নতুন সৃষ্ট পদগুলোর মধ্যে বিজিবির নেতৃত্বাধীন পর্যায়ে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এটির আওতায় তিনজন নতুন পরিচালক, নয়জন অতিরিক্ত পরিচালক, এবং নয়জন উপ-পরিচালক নিয়োগ করা হবে। এসব পদ অফিসারদের জন্য হবে এবং তাদের নিয়োগ সশস্ত্র বাহিনীর থেকে ডেপুটেশনে আধাসামরিক বাহিনীতে করা হবে। লেফটেন্যান্ট কর্নেল, মেজর ও ক্যাপ্টেন পদগুলোর সমতুল্য তিনটি পদ অফিসারদের জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে।
এছাড়া, পরিদর্শক পদমর্যাদার তিনজন পুলিশ কর্মকর্তাকে ডেপুটেশনে নিয়োগ দেওয়া হবে, এবং বাকিরা বিজিবি নিয়োগ বিধিমালা অনুসারে নিয়োগ পাবেন।
বিজিবির অন্যান্য স্তরের পদসমূহের মধ্যে রয়েছে সুবেদার মেজর, নায়েব সুবেদার, হাবিলদার, নায়েক, ল্যান্স নায়েক এবং সৈনিক পদসমূহ। এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য পদগুলো হল:
তিনজন সুবেদার মেজর
৫৭ জন নায়েব সুবেদার
২৪০ জন হাবিলদার
২৮৫ জন নায়েক
৩২৭ জন ল্যান্স নায়েক
১ হাজার ২২১ জন সৈনিক বা সিপাহী
এছাড়া, বেসামরিক কর্মীদের জন্যও কিছু পদ সৃজন করা হয়েছে। এর মধ্যে তিনজন ইমাম, তিনজন হিসাবরক্ষক, তিনজন উচ্চ বিভাগের কেরানি, তিনজন অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার টাইপিস্ট, তিনজন ধাত্রী এবং তিনজন অফিস সহযোগী নিয়োগ করা হবে।
বিজিবির গুইমারা হাসপাতালে জনবল বৃদ্ধির জন্যও বেশ কয়েকটি নতুন পদ সৃষ্টি করা হয়েছে। এসব পদে সাতজন হাবিলদার, তিনজন নায়েক, ছয়জন ল্যান্স নায়েক এবং ১৪ জন সৈনিক নিয়োগ করা হবে।
বিজিবির কাঠামোগত উন্নয়নের মাধ্যমে বাহিনীর কার্যক্রম আরও দক্ষ ও ফলপ্রসূ করার পরিকল্পনা সরকারের রয়েছে। বিশেষ করে সীমান্ত এলাকা এবং বিভিন্ন নিরাপত্তা সঙ্কট মোকাবেলায় বিজিবির আরও শক্তিশালী হয়ে উঠা প্রয়োজনীয় ছিল। নতুন পদ সৃষ্টি এবং বাহিনীর শক্তি বৃদ্ধির মাধ্যমে, বিজিবি তাদের দায়িত্ব আরও ভালোভাবে পালন করতে পারবে বলে মনে করা হচ্ছে।
এছাড়া, বিজিবির সম্প্রসারিত কাঠামো শুধু বাহিনীর কার্যক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করবে, একই সঙ্গে এই পদ সৃজন স্থানীয় কর্মসংস্থান সৃষ্টির ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
এতদূর, সরকারের এই পদক্ষেপটি বিজিবির অভ্যন্তরীণ কাঠামো এবং দক্ষতার ক্ষেত্রে একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে এবং বাহিনীটির আধুনিকায়ন প্রক্রিয়ায় আরও এক ধাপ এগিয়ে যাবে।