আইন আদালত ডেস্ক
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) জানিয়েছে, ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শহীদ শরিফ ওসমান বিন হাদির সমাধিস্থলকে ঘিরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যে ছবি ছড়ানো হয়েছে, তা সম্পূর্ণ বানোয়াট এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
রোববার (২১ ডিসেম্বর) সকালে ডিএমপির উপ-পুলিশ কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান গণমাধ্যমকে পাঠানো এক বার্তায় জানিয়েছেন, হাদির সমাধিস্থল নিয়ে যে ছবি প্রচার করা হচ্ছে তা সত্য নয়। তিনি বলেন, সমাধিস্থলটি নিরাপত্তা বেষ্টনীতে রাখা হয়েছে এবং এ বিষয়ে বিভ্রান্ত না হওয়ার জন্য সবাইকে অনুরোধ জানানো হচ্ছে।
এর আগে, ২০ ডিসেম্বর বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ সংলগ্ন জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের সমাধিসৌধের পাশে শহীদ শরিফ ওসমান বিন হাদিকে দাফন করা হয়। সমাধিস্থলটি বর্তমানে নিরাপত্তা বেষ্টনীর মধ্যে রয়েছে।
শহীদ শরিফ ওসমান হাদির ওপর হামলার ঘটনা ১২ ডিসেম্বর রাজধানীর বিজয়নগর এলাকায় ঘটে। জানা যায়, গণসংযোগের সময় চলন্ত মোটরসাইকেল থেকে তার ওপর গুলি চালানো হয়। গুলিটি তার মাথায় লাগে। গুরুতর আহত অবস্থায় প্রথমে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে অবস্থার স্থিতিশীল করার পর তাকে এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয় এবং উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৮ ডিসেম্বর রাতে তিনি মারা যান।
শহীদ হাদির মরদেহ ১৯ ডিসেম্বর সন্ধ্যা ৫টা ৪৮ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছায়। ২০ ডিসেম্বর দুপুরে জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় তার জানাজা অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে লাখো মানুষ উপস্থিত ছিলেন। জানাজায় ইমামতি করেন তার বড় ভাই আবু বকর সিদ্দিক।
জানাজায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস, জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ, এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
ঘটনার প্রেক্ষাপটে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ মনে করিয়ে দিয়েছে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়ানো অverified তথ্য বা ছবি বিভ্রান্তিকর হতে পারে। সমাধিস্থল ও নিরাপত্তা পরিস্থিতি সম্পর্কে শুধুমাত্র সরকারি তথ্যকেই বিশ্বাস করার আহ্বান জানানো হয়েছে।
শহীদ শরিফ ওসমান হাদির হত্যা দেশের রাজনৈতিক মহলে গভীর উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। নিরাপত্তা সংস্থা তার হত্যাকারীদের দ্রুত চিহ্নিত ও বিচারের আওতায় আনার জন্য তদন্ত কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। এ ঘটনায় রাজনৈতিক সহিংসতা ও নাগরিক নিরাপত্তার বিষয়ে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
সমাজ ও রাজনীতিতে তার অবদান ও নিহত হওয়ার পর অনুষ্ঠিত শোকসভার মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক স্তরে শোকের ছায়া নেমেছে। নিরাপত্তা এবং সঠিক তথ্য প্রদানে সরকারের সক্রিয় ভূমিকা জনগণের মধ্যে সঠিক সচেতনতা বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।