পশ্চিম আফ্রিকার দেশ নাইজেরিয়ায় একটি জ্বালানি ট্যাঙ্কারে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে, যাতে কমপক্ষে ৩৮ জন নিহত হয়েছেন। এই দুর্ঘটনাটি ঘটেছে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের এজ্জা গ্রামে, কাচা-আগাই সড়কে।
স্থানীয় কর্তৃপক্ষের তথ্য অনুযায়ী, জ্বালানিবাহী ট্যাঙ্কারটি সড়কের ক্ষতিগ্রস্ত অংশে উল্টে গিয়ে তেল ছড়িয়ে পড়ে। ওই সময় আশপাশের মানুষরা ছুটে এসে রাস্তায় ছড়িয়ে পড়া তেল সংগ্রহের চেষ্টা করেন। কিছুক্ষণ পরই ট্যাঙ্কারটি বিস্ফোরিত হয়, যার ফলে প্রাণহানির ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, বিস্ফোরণের পর রাস্তায় ছড়িয়ে পড়া তেলের জন্য মানুষদের মধ্যে ব্যাপক উত্তেজনা দেখা দেয়। তেল সংগ্রহের সময় বিস্ফোরণের কারণে অধিকাংশ নিহত ব্যক্তি ঘটনাস্থলে মারা যান। স্থানীয় সংবাদমাধ্যম টিআরটি ওয়ার্ল্ডের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে, ঘটনাটি দ্রুতই এলাকার এক ভয়াবহ বিপর্যয়ে পরিণত হয়।
নাইজার রাজ্যের পেট্রোলিয়াম ট্যাঙ্কার ড্রাইভার্স অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান ফারুক মোহাম্মদ কাও এক সাক্ষাৎকারে জানান, “বেশিরভাগ নিহত ব্যক্তি ট্যাঙ্কার থেকে তেল সংগ্রহ করছিলেন যখন বিস্ফোরণটি ঘটে।” তিনি আরও বলেন, এই ধরনের দুর্ঘটনা রোধে আরো সচেতনতা প্রয়োজন।
ফেডারেল রোড সেফটি কর্পসের (এফআরএসসি) নাইজার শাখার কমান্ডার হাজিয়া আইশাতু সাদু উদ্ধারকাজের অগ্রগতি সম্পর্কে জানান, “এখনো উদ্ধার অভিযান চলছে। এই দুঃখজনক ঘটনায় সড়কে মারাত্মক যানজট তৈরি হয়েছে, বিশেষ করে সড়কের খারাপ অবস্থার কারণে।”
প্রসঙ্গত, নাইজেরিয়া—বিশেষ করে পশ্চিম আফ্রিকার দেশটির সড়ক দুর্ঘটনা ও জ্বালানি ট্যাঙ্কারের বিস্ফোরণ একটি সাধারণ ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রায় সময়ই রাস্তার খারাপ অবস্থা এবং অপর্যাপ্ত রক্ষণাবেক্ষণ ও নিরাপত্তার কারণে এই ধরনের দুর্ঘটনা ঘটে। বিশেষ করে এই দেশটির অতি গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়কগুলোর অবস্থা বেশ করুণ, যা মানুষের জীবনের জন্য একটি বড় হুমকি হয়ে উঠেছে।
এদিকে, স্থানীয় জনগণ এবং প্রশাসন এ ধরনের দুর্ঘটনা প্রতিরোধের জন্য পদক্ষেপ গ্রহণের গুরুত্ব নিয়ে কথা বলছে। এর মধ্যে সড়ক সংস্কার, যানবাহনের নিরাপত্তা উন্নয়ন এবং জনসচেতনতা বৃদ্ধির বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার উপর জোর দেওয়া হচ্ছে।
নাইজেরিয়া সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে এবং ভবিষ্যতে এই ধরনের দুর্ঘটনা রোধে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হবে। তবে, যতদিন পর্যন্ত সড়ক পরিস্থিতি ও যানবাহন নিরাপত্তার উন্নতি না হবে, ততদিন এই ধরনের ট্র্যাজেডির ঝুঁকি বহাল থাকবে।
নাইজেরিয়ার এই দুর্ঘটনাটি দেশটির সড়ক নিরাপত্তা এবং জ্বালানি ব্যবস্থার দুর্বলতা তুলে ধরেছে। দ্রুত এবং কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ না করলে, ভবিষ্যতে এমন আরও দুর্ঘটনা ঘটতে পারে, যা আরও অনেক মানুষের প্রাণহানি ঘটাতে পারে।