ওয়েস্ট ইন্ডিজের বাঁ-হাতি স্পিনার আকিল হোসেন বাংলাদেশ ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের দ্বিতীয় ওয়ানডে ম্যাচে দলের জয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। তবে, মিরপুরের শের-ই বাংলা স্টেডিয়ামের উইকেট নিয়ে তিনি কিছুটা হতাশা প্রকাশ করেছেন। আকিলের মতে, প্রথমে তিনি ভেবেছিলেন, টেলিভিশনের সেটেই সমস্যা হচ্ছে, কিন্তু পরে বুঝতে পারেন যে, উইকেটটির রং কালো ছিল, যা তার জন্য অপ্রত্যাশিত ছিল।

অ্যাকিল হোসেন গতকাল সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “যখন প্রথম খেলা দেখছিলাম, মনে হয়েছিল টিভিতে কোনো সমস্যা হয়েছে। টিভির কালার চলে গেছে বলে ভেবেছিলাম। পরে দেখলাম, আসলে পিচের রঙই কালো ছিল।” তিনি আরও যোগ করেন, “আমি অবাক হয়েছিলাম এমন পিচ দেখে। নির্বাচকরা জানেন কেন আমাকে প্রথম ম্যাচে দলে রাখা হয়নি। তবে দলে থাকলে আমি সবসময় নিজের সামর্থ্য অনুযায়ী পারফর্ম করতে চাই।”

মিরপুরের উইকেট সম্পর্কে আকিল বলেন, “বল কিছুটা লাফাচ্ছিল, তবে ফ্ল্যাট পিচে ভালো টার্ন হচ্ছিল না। আমি বাঁ-হাতি স্পিনার হিসেবে স্কোয়ারে বল করার চেষ্টা করছিলাম, কারণ সেখানে বাউন্ডারি বড় ছিল এবং রান আটকে রাখা সহজ ছিল।”

দ্বিতীয় ওয়ানডেতে আকিল হোসেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের জয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তিনি বাংলাদেশ দলের ব্যাটসম্যান সৌম্য সরকারের বড় উইকেটটি নেন। এরপর, মিরপুরের পিচ সম্পর্কে মন্তব্য করে আকিল বলেন, “এখানে স্পিনারদের জন্য কাজটা সহজ ছিল না, তবে আমাদের স্পিনারদের মধ্যে অলিক আথানাজে দারুণ বোলিং করেছে। সে পার্ট টাইমার হলেও দুর্দান্ত লাইন লেংথে বল করে এবং শৃঙ্খলা বজায় রেখেছে।”

এছাড়া, আকিল স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেন, যে ধরনের পিচে খেলা হচ্ছে, সেখানে পেস বোলারদের তুলনায় স্পিনারদের ভূমিকা অনেক বেশি। তিনি বলেন, “এই ধরনের উইকেটে পেসারদের থেকে স্পিনারদের বেশি কাজ করতে হবে। আমাদের বেশ কিছু ভালো স্পিনার আছে, এবং তাদের শৃঙ্খলা বজায় রাখাটা খুব গুরুত্বপূর্ণ।”

তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডে ম্যাচের আগে আকিল জানিয়ে দেন যে, মিরপুরের উইকেটের ধরন পরিবর্তনের সম্ভাবনা কম। তিনি বলেন, “তৃতীয় ম্যাচে যদি উইকেট পরিবর্তন হয়, তবে সেটা দারুণ হবে। তবে আমি মনে করি, একই ধরনের উইকেট থাকবে। আমাদের আরও বেশি ব্যাটিং দক্ষতা দেখাতে হবে, বিশেষ করে টপ অর্ডার থেকে।” তিনি আরও যোগ করেন, “লোয়ার অর্ডারের জন্য টিকে থাকা অনেক কঠিন হতে পারে, কারণ এখানে ভালো স্পিনাররা আছে এবং বল অনেক ইউজড হয়ে যাবে।”

আকিল হোসেন তার দলের স্পিনারদের প্রতি তার শ্রদ্ধা ও সমর্থন প্রকাশ করেন, বিশেষ করে অলিক আথানাজের বোলিংয়ের প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, “আলিক যেভাবে শৃঙ্খলা ধরে রেখেছে এবং স্টাম্প টু স্টাম্প বল করেছে, তা দারুণ ছিল। সে যা করতে বলেছে, তা নিখুঁতভাবে করেছে। এটি আমাদের জন্য বড় একটি সুবিধা, কারণ আমাদের সেরা কম্বিনেশনকে বজায় রাখতে হবে।”

উইকেট নিয়ে আলোচনা করে আকিল বলেন, “এই ধরনের পিচে আমাদের পরিকল্পনা স্পষ্ট ছিল। আমাদের স্পিনাররা পেসারদের চেয়ে বেশি কাজ করেছে। এবং আমরা যদি বোলিং কম্বিনেশন সঠিকভাবে বজায় রাখতে পারি, তাহলে পরবর্তী ম্যাচগুলোতে আমরা আরও সহজে জয়লাভ করতে পারব।”

আকিল হোসেনের এই বক্তব্য স্পষ্টভাবে তুলে ধরেছে যে, দলের স্পিনারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিং ও শৃঙ্খলা বজায় রাখার মাধ্যমে পরবর্তী ম্যাচগুলিতে জয় নিশ্চিত করার পথে দলের মনোভাব ইতিবাচক। এখন তাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হবে টপ অর্ডার থেকে ভালো ব্যাটিং শুরুর পাশাপাশি স্পিনারদের সঠিক সময়ে বোলিং করা।

আগামীকাল (২৩ অক্টোবর) তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডে ম্যাচে বাংলাদেশ ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের মধ্যে উত্তেজনা পূর্ণ প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে। আকিল ও তার দলের জন্য এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ, যেখানে তারা সিরিজ জয় নিশ্চিত করার জন্য পূর্ণ শক্তি দিয়ে মাঠে নামবে।