বাংলাদেশ ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের মধ্যে চলমান ওয়ানডে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচটি টাই হওয়ায় ক্রিকেটপাড়া উত্তপ্ত। ম্যাচের শেষদিকে ইনফর্ম ব্যাটার রিশাদ হোসেনকে কেন সুপার ওভারে নামানো হয়নি, সেই প্রশ্ন উঠেছে। গতকাল (মঙ্গলবার) রিশাদ হোসেন যখন ব্যাট হাতে ঝোড়ো ক্যামিও খেলেছেন, তখন বিশেষভাবে তাকে সুপার ওভারে পাঠানোর সম্ভাবনা ছিল। তবে কোচ ও অধিনায়কের পরিকল্পনায় তাকে না নামানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
দ্বিতীয় ওয়ানডেতে বাংলাদেশের কাছে একটি প্রশ্ন ছিল, যখন ম্যাচ সুপার ওভারে গড়িয়েছে, তখন কেন রিশাদ হোসেনকে নামানো হয়নি। রিশাদ ১৪ বলে ৩টি চার ও ৩টি ছক্কায় ৩৯ রান করেন এবং দলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ রান সংগ্রহ করেন। অন্যদিকে, দলের মূল ব্যাটসম্যানরা রান সংগ্রহের জন্য হিমশিম খাচ্ছিলেন। এর পরও রিশাদকে সুপার ওভারে নামানোর পরিবর্তে, সাইফ হাসান ও সৌম্য সরকারকে পাঠানো হয়। পরবর্তীতে সৌম্য আউট হলে নাজমুল হোসেন শান্ত নামানো হয়, কিন্তু ৫ বলের মধ্যে ৬ রান করতে তারা ব্যর্থ হন।
সুপার ওভারে রিশাদ হোসেনকে না নামানোর বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে সৌম্য সরকার বলেন, “এটা কোচ এবং অধিনায়কের পরিকল্পনা ছিল। তাদের পরিকল্পনার অংশ হিসেবে মূল ব্যাটসম্যানদের পাঠানো হয়েছে।” সৌম্য আরও জানিয়ে দেন যে, বাঁ-হাতি ও ডানহাতি ব্যাটসম্যানের কম্বিনেশন বজায় রাখতে তারা এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, “আমরা জানতাম না যে আকিল হোসেন বল করবে। যদি আমরা দুজন বাঁহাতি ব্যাটসম্যান নিয়ে যেতাম এবং অফ স্পিনার আসতো, তাহলে বিপদে পড়তাম। এজন্যই বাঁহাতি-ডানহাতি কম্বিনেশন রাখা হয়েছিল।”
এখানে মূল বিষয়টি হলো কোচ ও অধিনায়কের পরিকল্পনার প্রতিফলন এবং কৌশলগত সিদ্ধান্ত। যদি সুপার ওভারে রিশাদকে নামানো হতো, তবে সেটি আরও আগ্রাসী স্ট্রাইক নিতে সক্ষম এমন একজন খেলোয়াড়ের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে পারতো। তবে বাঁ-হাতি এবং ডানহাতি ব্যাটসম্যানের সমন্বয়, বিশেষত যখন প্রতিপক্ষের আক্রমণকারীদের বোলিংয়ের ধরন পরিবর্তন হতে পারে, তখন একটি কৌশলগত সুবিধা হয়ে দাঁড়ায়।
এছাড়া, উইকেটের পরিস্থিতি এবং ম্যাচের শেষ মুহূর্তে ব্যাটিং চ্যালেঞ্জের বিষয়টি গুরুত্ব পায়। সৌম্য সরকার নিজে ৫ বলের মধ্যে ৬ রান করতে না পারার পেছনে উইকেটকে দায়ী করেছেন। তিনি বলেন, “উইকেটটা সহজ ছিল না, চার বা ছক্কা মারার মতো ছিল না। বলটি পুরোনো হয়ে গিয়েছিল এবং স্লো আসছিল, যার ফলে বড় শট নেওয়া কঠিন হয়ে পড়েছিল।” তিনি আরও যোগ করেন, “আগামীতে যদি এমন উইকেট থাকে, তাহলে সেই অনুযায়ী অনুশীলন করতে হবে।”
বাংলাদেশের জন্য ম্যাচটি ছিল একটি শিক্ষা। সুপার ওভারের পরিস্থিতিতে কৌশলগত সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং উইকেটের পরিস্থিতি উভয়ই গুরুত্বপূর্ণ। রিশাদ হোসেনকে না পাঠানোর পেছনে পরিকল্পনার কারণ রয়েছে, তবে ভবিষ্যতে এমন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ কোচ এবং অধিনায়কের কৌশল নিয়ে আরও আত্মবিশ্বাসী হতে পারবে। সৌম্য সরকারের ব্যর্থতা যদিও ব্যাখ্যা করা গেছে, তবে দলকে রক্ষা করার জন্য দলের খেলোয়াড়দের প্রস্তুতির বিষয়টি ভবিষ্যতে আরো গুরুত্ব সহকারে নেওয়ার প্রয়োজন।
বাংলাদেশ দল আগামী ম্যাচগুলোতে এ ধরনের পরিস্থিতিতে আরও সঠিক কৌশল নিয়ে মাঠে নামবে, বিশেষ করে এমন উইকেটে যেখানে বল স্লো হয়ে আসে এবং টার্ন বাড়ে।