২০২৪ সালে আফগানিস্তানে ডায়রিয়া ও অন্যান্য পেটের রোগে আক্রান্ত হয়ে ৯৭ হাজারেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। দেশটির জনস্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, গত বছর আফগানিস্তানে মোট ৪ লাখ ৯৩ হাজার ৬৮ জন মানুষ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল ডায়রিয়া এবং অন্যান্য পেটের রোগে আক্রান্ত হয়ে। এর মধ্যে ৯৭ হাজার ২৪ জন রোগী মারা যান। জনস্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিশেষজ্ঞ নেমাত হোসনাইন জানিয়েছেন, গড় হিসেবে প্রতিদিন প্রায় ১৫৯ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মারা গেছেন, আর ২৪ ঘণ্টা পর মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে ১৪৭ জনের।
এ পরিস্থিতির জন্য মূলত খাবার ও পানির দূষণ দায়ী বলে মনে করা হচ্ছে। মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আফগানিস্তানে আচার, মসলা, বাজারে খোলা অবস্থায় বিক্রি হওয়া খাবার, শিশুখাদ্যসহ ২০টি বিভিন্ন খাদ্যপণ্য ডায়রিয়ার মহামারির জন্য দায়ী।
আফগানিস্তানের খাদ্য নিরাপত্তা বিভাগের মহাপরিচালক আবদুল্লাহ হামেদ জানিয়েছেন, “অসহায়ক এবং অনিরাপদ খাদ্য গ্রহণ করলে ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া ছাড়াও ক্যানসারের মতো রোগের ঝুঁকি থাকতে পারে, যা অনেক সময় মৃত্যুর কারণ হতে পারে।”
এছাড়া, আফগান সরকারের খাদ্য নিবন্ধন ও লাইসেন্স বিভাগের পরিচালক ওয়ালি আদেল বলেছেন, “দেশে নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করার জন্য একটি কার্যকর খাদ্য নিরাপত্তা সংস্থা থাকা অত্যন্ত জরুরি। এর মাধ্যমে দেশের অভ্যন্তরে খাদ্যের মান নিশ্চিত করা সম্ভব হবে, পাশাপাশি বিদেশে খাদ্য রপ্তানি বৃদ্ধি করাও সম্ভব হবে।”
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) এর তথ্য অনুযায়ী, প্রতি বছর বিশ্বের বিভিন্ন দেশে জীবাণুযুক্ত পানি এবং খাদ্য গ্রহণের ফলে ৬০ কোটি মানুষের মৃত্যু হয়।
এ পরিস্থিতি মোকাবিলায় দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য আফগান সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে। খাদ্য নিরাপত্তা সংক্রান্ত কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে আফগানিস্তানে স্বাস্থ্যগত বিপর্যয়ের ঝুঁকি কমানো সম্ভব হতে পারে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।