স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসা শিক্ষকদের পাঁচ দফা দাবি নিয়ে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অনুষ্ঠিত পদযাত্রা পুলিশ আটকে দিয়েছে। বুধবার (২২ অক্টোবর) দুপুর সাড়ে বারোটার দিকে পুলিশের ব্যারিকেডে আটকে যায় পদযাত্রা, যার ফলে শিক্ষকরা এবং পুলিশ সদস্যরা মুখোমুখি অবস্থানে দাঁড়িয়ে যান।
পুলিশের উপস্থিতি এবং প্রস্তুতি সত্ত্বেও শিক্ষকরা নিজেদের দাবির পক্ষে বিক্ষোভ করতে থাকেন। পুলিশ সড়কটি ব্লক করে এবং জলকামান ও রায়েট কারও প্রস্তুত রাখা হয়। এর ফলে, পল্টন থেকে প্রেস ক্লাব অভিমুখী সড়কের যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়, যা নগরীর ট্রাফিক ব্যবস্থাকে প্রভাবিত করেছে।
শিক্ষকরা তাদের আন্দোলন পরিচালনা করে চলতি বছরের ২৮ জানুয়ারির জাতীয়করণের ঘোষণার দ্রুত বাস্তবায়নসহ কয়েকটি মূল দাবি উত্থাপন করেছেন। তাদের প্রধান দাবি হলো:
জাতীয়করণ দ্রুত বাস্তবায়ন: চলতি বছরের ২৮ জানুয়ারির জাতীয়করণের ঘোষণা দ্রুত বাস্তবায়ন করতে হবে।
ইবতেদায়ী মাদ্রাসা এমপিওভুক্তি: কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ কর্তৃক প্রেরিত ১ হাজার ৮৯টি স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসার ফাইল দ্রুত অনুমোদন দিতে হবে।
অনুদানবিহীন স্বীকৃত মাদ্রাসার এমপিও আবেদন: অনুদানবিহীন স্বীকৃত ইবতেদায়ী মাদ্রাসাগুলোর জন্য এমপিও আবেদনের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে হবে।
প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মতো প্রাক-প্রাথমিক পদ সৃষ্টি: প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মতো স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসাগুলোর জন্য প্রাক-প্রাথমিক পদ সৃষ্টি করতে হবে।
অলাদা অধিদপ্তর প্রতিষ্ঠা: ইবতেদায়ী মাদ্রাসার জন্য একটি আলাদা অধিদপ্তর প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
এদিনের পদযাত্রা ও প্রতিবাদে নেতৃত্ব দেন ইবতেদায়ী মাদ্রাসা শিক্ষক ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান কাজী মোখলেছুর রহমান। তিনি ঘোষণার মাধ্যমে জানান যে, যদি সরকারের পক্ষ থেকে তাদের দাবিগুলি মেনে নেওয়া না হয়, তবে তারা আরো বড় ধরনের আন্দোলন শুরু করবেন।
কাজী মোখলেছুর রহমান দাবি করেন যে, ২০০৫ সাল থেকে একাধিকবার স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসার জাতীয়করণের জন্য জোর দাবি তোলা হয়েছে, তবে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। তিনি শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে দ্রুত এই দাবিগুলি বাস্তবায়ন করার জন্য চাপ সৃষ্টি করার আহ্বান জানিয়েছেন।
সরকারের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত এই বিষয়ে কোনও মন্তব্য বা প্রতিবাদ জানানো হয়নি, তবে এটি স্পষ্ট যে, সরকারের সঙ্গে শিক্ষক সম্প্রদায়ের উত্তেজনা বেড়ে চলেছে। বিশেষত স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসাগুলোর এমপিওভুক্তি ও জাতীয়করণের বিষয়টি দীর্ঘদিন ধরে অবহেলিত, যার ফলে শিক্ষকরা হতাশ হয়ে আন্দোলনে নেমেছেন।
এ পরিস্থিতিতে, শিক্ষকদের এই আন্দোলন যদি আরও বাড়ে, তাহলে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার উপর প্রভাব ফেলতে পারে, বিশেষত মাদ্রাসা শিক্ষার উন্নয়ন এবং সংশ্লিষ্ট নীতি গ্রহণের ক্ষেত্রে।
এটি দেশের শিক্ষা নীতির ভবিষ্যত ও মাদ্রাসা শিক্ষার প্রতি সরকারের দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে নতুন প্রশ্ন তুলেছে।