বেসরকারি স্কুল-কলেজের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি হিসেবে শুধু সরকারি কর্মকর্তা (নবম গ্রেডের নিচে নয়) বা অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (পঞ্চম গ্রেডের নিচে নয়) মনোনয়নের বিধান সম্বলিত প্রজ্ঞাপনের কার্যকারিতা স্থগিত করেছে হাইকোর্ট। আদালত একে বৈষম্যমূলক উল্লেখ করে এই বিধান কেন অসাংবিধানিক ও বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছে।
বুধবার (২২ অক্টোবর) বিচারপতি ফাহমিদা কাদের এবং বিচারপতি আসিফ হাসান এর হাইকোর্ট বেঞ্চ এই রায় দেন। রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, সঙ্গে ছিলেন অ্যাডভোকেট এস এম জাহাঙ্গীর আলম এবং ব্যারিস্টার রুহুল কাইয়ূম।
ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, ‘‘বেসরকারি স্কুল-কলেজের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি হিসেবে শুধু সরকারি কর্মকর্তাদের মনোনয়ন দেওয়ার যে বিধান করা হয়েছিল, তা বৈষম্যমূলক।’’ এর ফলে, আদালত প্রজ্ঞাপনটির কার্যকারিতা স্থগিত করেছে।
এই প্রজ্ঞাপনটি সেপ্টেম্বরে জারি করা হয়, যার ফলে বেসরকারি স্কুল-কলেজের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি হিসেবে শুধু সরকারি কর্মকর্তা অথবা অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা মনোনীত হতে পারেন। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, সভাপতির প্রার্থীর ন্যূনতম শিক্ষাগত যোগ্যতা স্নাতক বা সমমান হতে হবে এবং তিনি নবম গ্রেড বা তার ওপরের পদে কর্মরত অথবা পঞ্চম গ্রেডের নিচে নয় এমন অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তার পদে থাকা প্রার্থীরা এ দায়িত্বে আসতে পারবেন।
প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান বা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা भी সভাপতি হতে পারবেন। তবে, যেহেতু এটি বৈষম্যপূর্ণ মনে হয়েছে, আদালত তার কার্যকারিতা স্থগিত করেছে এবং রুল জারি করেছে।
শিক্ষামন্ত্রণালয় ইতোমধ্যে ৩০ নভেম্বরের মধ্যে সকল বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিয়মিত কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছে। তবে, এই প্রজ্ঞাপনের বিরুদ্ধে আদালতের সিদ্ধান্তের ফলে সেই কমিটি গঠনের কার্যক্রমে কিছুটা স্থগিততা সৃষ্টি হতে পারে।
এই রুলটি সরকারের শিক্ষানীতি ও প্রজ্ঞাপন সংক্রান্ত নতুন দিক উন্মোচন করতে পারে। বিশেষ করে, বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর পরিচালনা পর্ষদের জন্য সরকারি কর্মকর্তা মনোনয়ন-এর বিধান কতটা সঠিক এবং বৈধ, তা পরবর্তীতে আদালত সিদ্ধান্ত নেবে।
এছাড়া, শিক্ষাক্ষেত্রে বৈষম্য প্রতিরোধের জন্য আরও কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করেছেন আইনজীবীরা।