শ্রীলঙ্কান ক্রিকেট বোর্ড (এসএলসি) ২০২৫ সালের শ্রীলঙ্কা প্রিমিয়ার লিগ (এলপিএল) মৌসুম স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এবারের মৌসুমে খেলা মাঠে গড়াবে না বলে এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে। আসন্ন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রস্তুতির জন্য এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, যা আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে ভারত ও শ্রীলঙ্কা যৌথভাবে আয়োজন করবে।
শ্রীলঙ্কার এই ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্টটি আগামী ২৭ নভেম্বর থেকে ২৩ ডিসেম্বরের মধ্যে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। টুর্নামেন্টটি কলম্বো, ক্যান্ডি এবং ডাম্বুলাতে অনুষ্ঠিত হওয়ার পরিকল্পনা ছিল, তবে এসএলসি সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে, এই সময়ের বাইরে কোনো নতুন সময়সূচি নির্ধারণ করা হবে। এর মূল কারণ হলো বিশ্বকাপের জন্য পর্যাপ্ত প্রস্তুতি নেওয়া এবং মাঠগুলোর উপযুক্ততা নিশ্চিত করা।
বিশ্বকাপের জন্য মাঠ প্রস্তুত করার প্রয়োজনীয়তা নিয়ে এসএলসি জানিয়েছে, “আইসিসি’র নীতিমালা অনুসারে, ২০ দলের আসন্ন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের জন্য প্রতিটি মাঠে আয়োজকদের পক্ষ থেকে সব চাহিদা পূরণ করতে হবে।” বিশেষ করে, স্টেডিয়ামগুলোর কাঠামোগত সংস্কার এবং সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করার জন্য এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বর্তমানে কলম্বো শহরের প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে চলমান নারী বিশ্বকাপের ১১টি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এই কারণে, সেখানে সংস্কার কাজ স্থগিত রয়েছে। এসএলসি জানিয়েছে, নারী বিশ্বকাপ শেষ হওয়ার পরই সংস্কার কাজ পুনরায় শুরু হবে।
এসএলসি কর্তৃপক্ষ মনে করছে, ২০২৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে এলপিএল-এর নতুন উইন্ডো নির্ধারণ করা উপযুক্ত হবে, যা আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের শিডিউলের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হবে।
এলপিএলের পরবর্তী মৌসুমে দল সংখ্যা বাড়ানোর পরিকল্পনা ছিল। গত পাঁচ মৌসুমে কলম্বো, গল, ক্যান্ডি, ডাম্বুলা এবং জাফনা ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো অংশ নিয়েছে, তবে আগামী মৌসুমে নতুন একটি ষষ্ঠ দল যোগ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এই নিয়ে লঙ্কান লিগের কর্তৃপক্ষ আলোচনা শুরু করেছে, যদিও এখনও দলটির মালিকানা বিষয়ে কোনো ঘোষণা আসেনি।
এছাড়া, এলপিএল-এর সর্বশেষ দুটি মৌসুম ২০২৩ এবং ২০২৪ সালে জুলাই-আগস্টে অনুষ্ঠিত হয়েছিল, তবে ২০২৫ সালে এই টুর্নামেন্টের সময়সূচি পরিবর্তিত হওয়ায়, শ্রীলঙ্কা প্রিমিয়ার লিগের আসন্ন মৌসুমটি আলাদা সময়সূচিতে অনুষ্ঠিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
এলপিএলের গত কয়েকটি মৌসুমে বেশ কিছু বিতর্কও উঠে এসেছে। সেগুলোর মধ্যে অন্যতম ছিল কলম্বো স্ট্রাইকার্স ফ্র্যাঞ্চাইজির বিরুদ্ধে চুক্তি লঙ্ঘনের অভিযোগ। এসএলসি এই দলটিকে বাদ দিয়েছে এবং তাদের নতুন মালিকানা ঘোষণা করা হয়নি। একইভাবে, জাফনা কিংস ফ্র্যাঞ্চাইজির মালিকানার পরিবর্তন হয়েছে, তবে এর নতুন মালিক সম্পর্কে কোনো তথ্য প্রকাশ করা হয়নি।
এলপিএল-এর আগামী মৌসুমের পরবর্তী সঠিক সময়সূচি এবং দল সংক্রান্ত সিদ্ধান্তগুলো শ্রীলঙ্কান ক্রিকেট বোর্ড দ্রুত জানাবে বলে আশা করা হচ্ছে। তবে, এসএলসি নিশ্চিত করেছে যে, আগামী বছরে বিশ্বকাপের প্রস্তুতির জন্য তারা মাঠ এবং স্টেডিয়ামের উন্নয়ন কার্যক্রমে কোনো ধরনের ছাড় দেবে না।
এটি নিশ্চিত যে, এলপিএল-এর ভবিষ্যত আসরগুলো শ্রীলঙ্কার ক্রিকেটের উন্নতি এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে দেশটির মর্যাদা বৃদ্ধির জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে, তবে তার জন্য আরো প্রস্তুতি এবং পরিকল্পনা প্রয়োজন।