রাজধানী ঢাকার বিমানবন্দরে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া অগ্নিকাণ্ডের কারণ অনুসন্ধানে সরকারের পক্ষ থেকে আন্তর্জাতিক সহযোগিতার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানিয়েছেন, ব্রিটেনের স্কটল্যান্ড ইয়ার্ড, অস্ট্রেলিয়া, চীন, তুরস্কসহ বিভিন্ন দেশের সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। আন্তর্জাতিকভাবে ফরেনসিক তদন্তের মাধ্যমে এই অগ্নিকাণ্ডের সঠিক কারণ নির্ধারণের চেষ্টা চলছে।
বৃহস্পতিবার (২২ অক্টোবর) বিকেলে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে তিনি এই তথ্য জানান।
প্রেস সচিব শফিকুল আলম আরও জানান, প্রধান উপদেষ্টা দেশের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে অগ্নি সুরক্ষা ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে এবং দুর্ঘটনার ঝুঁকি কমানোর জন্য এক সপ্তাহের সময় নির্ধারণ করেছেন। এই সপ্তাহে, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান তাদের অগ্নিনির্বাপন প্রস্তুতি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করবে এবং এতে কোনো ঘাটতি বা শঙ্কা থাকলে তা দ্রুত সমাধানের উদ্যোগ নেওয়া হবে।
তিনি বলেন, প্রধান উপদেষ্টা সংশ্লিষ্ট উপদেষ্টাদের নির্দেশ দিয়েছেন যাতে তারা সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর ফায়ার সেফটি প্রস্তুতির পরিস্থিতি পর্যালোচনা করেন। অগ্নিকাণ্ডের পূর্বাভাস এবং তা প্রতিরোধের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের উপর গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।
প্রেস সচিব আরও জানান, নির্বাচন প্রসঙ্গে বর্তমানে বডিক্যাম, সিসিটিভি এবং ড্রোন ব্যবহারের বিষয়েও আলোচনা চলছে। বিশেষ করে, ভোটগ্রহণের সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষা এবং নির্বাচন প্রক্রিয়া স্বচ্ছ রাখার জন্য এই প্রযুক্তিগুলো কীভাবে ব্যবহার করা যায়, সে বিষয়ে গভীর আলোচনা চলছে। এ বিষয়ে সরকারের উপদেষ্টা পরিষদে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে এবং এই প্রযুক্তিগুলোর ব্যবহারের জন্য আইনগত সহায়তা এবং নির্দেশনা প্রস্তুত করা হচ্ছে।
শফিকুল আলম বলেন, “বডিক্যাম এবং সিসিটিভি ব্যবহারের মাধ্যমে নির্বাচনের সময় নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। তবে, আইনগত দিক থেকে কীভাবে এই প্রযুক্তিগুলো ব্যবহৃত হবে, সেগুলোর পরিকল্পনা করা হচ্ছে।”
বিমানবন্দরের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে, এবং সরকারের পক্ষ থেকে আন্তর্জাতিক তদন্তের উদ্যোগ নেওয়া একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এ ধরনের ঘটনা ঘটলে এর ফলাফল শুধুমাত্র দেশীয় সীমায় থাকে না, বরং আন্তর্জাতিক পর্যায়েও তার প্রভাব পড়তে পারে।
অপরদিকে, বিমানবন্দর এলাকায় অগ্নিকাণ্ডের পর থেকে দেশব্যাপী অগ্নি সুরক্ষা ব্যবস্থার ওপর নতুন করে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। বিশেষ করে গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো, যেমন বিমানবন্দর, হাসপাতাল এবং শিল্পকারখানাগুলোর অগ্নি সুরক্ষা ব্যবস্থা আরও কার্যকর করা প্রয়োজন।
এছাড়া, সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও সুদৃঢ় করার লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। এই উদ্যোগগুলোর উদ্দেশ্য হলো ভবিষ্যতে এমন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা প্রতিরোধ করা এবং জনসাধারণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
সরকারি সূত্রে জানা গেছে, আন্তর্জাতিক তদন্তের মাধ্যমে বিমানবন্দরে ঘটে যাওয়া অগ্নিকাণ্ডের সঠিক কারণ নির্ধারণ করা হবে এবং তৎক্ষণাৎ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। পাশাপাশি, অগ্নি সুরক্ষা ব্যবস্থার উন্নতি এবং নির্বাচনে প্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে দেশের নিরাপত্তা ব্যবস্থার আরো শক্তিশালী করা হবে।